বুধবার ● ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
প্রথম পাতা » জাতীয় » মনপুরায় ব্যবসায়ীদের সাথে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ, সাংবাদিকসহ আহত অর্ধশতাধিক
মনপুরায় ব্যবসায়ীদের সাথে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ, সাংবাদিকসহ আহত অর্ধশতাধিক
মনপুরা প্রতিনিধি : ভোলার মনপুরায় রাস্তার ওপর ফলের দোকান সরানো ও ব্যবসায়ীদের মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে ব্যবসায়ীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় পুলিশের কয়েক রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছোড়ে। পুলিশের সাথে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষে সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, পুলিশসহ অন্তত আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক লোক। আহতদের মনপুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার সকাল সাড়ে ৯ টায় উপজেলার হাজির হাট বাজারে দেড় ঘন্টাব্যাপী পুলিশের সাথে ব্যবসায়ীদের এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে সোয়া ১১ টায় স্থানীয় নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। বর্তমানে পরিস্থিতি থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে ও দোকান পাঠ বন্ধ রয়েছে।
ব্যবসায়ী ও ঘটনা সূত্রে জানা যায়, হাজিরহাট বাজারের ফলের ব্যবসায়ী হারুন, আবদুর রহমান ও হাসানের দোকান উচ্ছেদ ও ব্যবসায়ীদের মারধর করে পুলিশের ওসি শাহীন খান। পরে ব্যবসায়ীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাৎক্ষনিক দোকানপাট বন্ধ রেখে পুলিশের বিরুদ্ধে মিছিল বের করে। একপর্যায়ে পুলিশ ক্ষিপ্ত হয়ে ব্যবসায়ীদের উপর কয়েক রাউন্ড শর্টগানের গুলি করলে ব্যবসায়ীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশের সাথে ব্যবসায়ীদের দফায় দফায় সংষর্ষ বাধে। পুলিশের গুলিতে স্থানীয় ভোরের পাতা সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী আহত হয় এবং ব্যবসায়ীদের ইট-পাটকেলে ৭ পুলিশ আহত হয়।
পুলিশের শর্টগানের গুলিতে আহতরা হলেন, দৈনিক ভোরের পাতার স্থানীয় প্রতিনিধি নজরুল ইসলাম মামুন, ব্যবসায়ী সোয়েব, মোঃ ইব্রাহীম, আবু তাহের, শরিফ, নুরুউদ্দিন, তরিকুল ইসলাম, আরিফ, হারুন, কবির, নাহিদ, হারুন, রাকিব, হোসেন, লিটন ফরাজী, মোসলেহ উদ্দিন, জামাল নুরুউদ্দিন, নুরইসলাম, কুটি মাঝি, আবদুর রহমানসহ আরো বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অপরদিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপে আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন, ওসি শাহীন খান, এএসআই প্রদীপ, পুলিশ সদস্য জুনায়েদ, আরিফ, জসিম, আবদুল হালিম, নাইম।
বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মোঃ মহিউদ্দিন জানান, বিনা নোটিশে পুলিশ তিন ব্যবসায়ীর ফলের দোকান উচ্ছেদ করার সময় মারধরের ঘটনায় ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ রেখে মিছিল করে। পরে পুলিশ বিনা উসকানিতে ব্যবসায়ীদের উপর বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি করে। এতে অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী আহত হয়।
মনপুরা থানার ওসি শাহীন খান জানান, রাস্তার উপর ফলের দোকান উঠাতে যাই। পরে ব্যবসায়ীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শর্টগানের গুলি করা হয়।
মনপুরা স্বাস্থ্য ও পপ কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুর রশীদ বলেন, হাসাপাতে ৩৪ চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে আতংকে সবাই হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন। গুরুতর ২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র পাঠানো হয়েছে।
এব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার (লালমোহন সার্কেল) মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন,অবৈধভাবে বাজারে রাস্তা দখল করে ফল ব্যাবসায়ীরা ব্যাবসা করে আসছেন। ওসি অভৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গেলে ব্যাবসায়ীদের সাথে পুলিশের সংঘষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ পরিস্তিতি নিয়ন্ত্রন আনার জন্য ৪১ রাউন্ড ছড়া গুলি ছোড়ে। বর্তমানে পরিস্তিতি নিয়ন্ত্রনে আছে। আমরা ব্যাবসায়ীদের সাথে বসে সাবির্ক বিষয় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব। উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের সাথে আলাপ করে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।
-এমএসএইচ/এসএইচ/এমএসইউ/এফএইচ