শনিবার ● ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » জেলার খবর » লালমোহনে আব্দুল জলিলের দুঃখের ঘরে সুখের হাওয়া বইছে
লালমোহনে আব্দুল জলিলের দুঃখের ঘরে সুখের হাওয়া বইছে
সাব্বির আলম, লালমোহন প্রতিনিধি: ভোলার লালমোহনে কুটির শিল্পের মাধ্যমে বেঁচে থাকার স্বপ্ন খুঁজে পেয়েছে হত দরিদ্র আব্দুল জলিল। একটি বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে কুটির শিল্পের ব্যবসা চালিয়ে দারিদ্রকে জয় করছে জলিল। তার দুঃখের ঘরে এখন সুখের হাওয়া বইছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে এখন সুখের সংসার তার। উপজেলার চরছকিনা গ্রামের আব্দুল জলিল একটি বেসরকারী সংস্থার চাকরি থেকে অবসর নিয়ে কাজের সন্ধানে পথে পথে অনেক ঘুরে বেড়িয়েছেন। ধর্ণা দিয়েছেন অসংখ্য মানুষের কাছে। কাজ দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অনেকেই। কিন্তু কেউ তার পাশে দাঁড়ায়নি। কোন কাজ না পেয়ে হতাশায় ভেঙ্গে পড়ে আব্দুল জলিল। নিরুপায় হয়ে ২০০৪ সালে তিনি একটি বেসরকারী সংস্থার নিকট ঋণ চান। ওই সংস্থা থেকে প্রথম কিস্তি তিনি ৫ হাজার টাকার ঋণ গ্রহণ করেন। ঋণের টাকা দিয়েই শুরু হয় নতুন করে আব্দুল জলিলের জীবন চলা। এই ৫ হাজার টাকা পুঁজি করেই তিনি শুরু করেন কুটির শিল্পের কাজ। বাজার থেকে বাঁশ, বেত কিনে এনে স্ত্রী মেহেরজানসহ বাড়িতে বসে শীতলপাটি, চাটাই, ডুলারী, হাতপাখা, ডুলী, থালাই, সাজি, দোলনা, ফুলের ঝাড়, চালনা, পানপাতা, ঢাকনা, কুলা, মুড়াসহ নানা ব্যবহারিক সামগ্রী তৈরী করেন। ঐ সকল সামগ্রী নিয়ে তিনি উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে পায়ে হেঁটে বিক্রি করেন। এভাবে আস্তে আস্তে তার কাজের পরিধি বাড়তে থাকে। এরই মধ্যে আগের ঋণের টাকা পরিশোধ করে সর্বশেষ ১১ হাজার টাকা ঋণ নেয় আব্দুল জলিল। বর্তমানে লালমোহন সদর হাসপাতালের সামনে সদর রোডে ভাড়া করা দোকানে বসে প্রতিদিন তার তৈরি জিনিসপত্র বিক্রি করেন।
আব্দুল জলিল জানান, প্রতিদিন গড়ে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকার মতো তার বিক্রি হয়। এতে তার প্রায় ৫ শ থেকে ৭ শ টাকার উপরে লাভ হয়। এই টাকা থেকেই তিনি কিস্তির টাকা পরিশোধ করেন। সংসারের সব খরচ মিটিয়েও কিছু টাকা সঞ্চয় করেন। তিনি আরো বলেন, বাঁশ ও বেত শিল্পের কদর ক্রমেই বেড়ে চলছে। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের পরিবর্তন ঘটেছে। পরিবর্তন হচ্ছে চাহিদার। এ কারণেই নিত্য ব্যবহার্য সামগ্রী হিসেবে বাঁশ ও বেতের জিনিসপত্রের কদর বাড়ছে। তার তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় তিনি দোকানে আরো ২জন লোক রেখেছেন। তাদের প্রতি মাসে ১২ হাজার টাকা বেতন দিচ্ছেন। এছাড়া বিভিন্ন বাসা বাড়িতেও বাঁশ ও বেতের জিনিসপত্র বানানো শিখিয়েছেন তিনি। সেসব বাসা থেকেও তিনি টাকা দিয়ে কিনে এনে দোকানে বিক্রি করছেন। এভাবেই তার দিন কাটছে। আ: জলিল বলেন, যদি কুটির শিল্পের পেশার জন্য সরকারী সহোযোগিতা ও পর্যাপ্ত প্রশিক্ষন পান তাহলে তিনি আরো ভালোভাবে জীবিকা র্নিবাহ করতে পারবেন এবং তার দোকানে অনেককে চাকুরী দিয়ে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে পারবেন।
-এফএইচ