রবিবার ● ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » জাতীয় » মনপুরার মেঘনায় জেলেদের উপর ফের জলদস্যুদের হামলা, ট্রলারসহ ১৫ মাঝি অপহরণ, উদ্ধার ১০
মনপুরার মেঘনায় জেলেদের উপর ফের জলদস্যুদের হামলা, ট্রলারসহ ১৫ মাঝি অপহরণ, উদ্ধার ১০
মো.ছালাউদ্দিন, মনপুরা প্রতিনিধি: ভোলার মনপুরার মেঘনায় ইলিশ ধরা অবস্থায় রোববার ভোর রাতে হাতিয়ার জলদস্যু স¤্রাট আলাউদ্দিন বাহিনী আবারো জেলেদের উপর হামলা চালিয়ে ট্রলারসহ ১৫ মাঝিকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অপহৃত মাঝিদের ও ট্রলারটি ছাড়িয়ে আনতে জলদস্যু বাহিনীর প্রধান জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপন দাবী করেন। বিষয়টি আড়তদার ও পরিবার সুত্রে নিশ্চিত করেছেন।
খবর পেয়ে হাতিয়া জোনের কোস্টগার্ড প্রধান লেঃ কমান্ডার ওমর ফারুক নের্তৃত্বে অভিযান চালিয়ে মনপুরার ঢালচর থেকে অপহৃত ১০ মাঝিকে উদ্ধার করার হয়।
কিছুদিন জলদস্যুদের হামলা বন্ধ থাকার পর জেলেরা মেঘনায় ইলিশ শিকারে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ঈদের পর আবারো জলদস্যুদের হামলায় জেলেদের মাঝে আঙ্কত বিরাজ করছে। মেঘনায় ইলিশ মাছ ধরতে জেলেরা সাহস পাচ্ছেনা । জলদস্যুদের হামলার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি নন। প্রতিনিয়ত জলদস্যুদের হামলার শিকার হচ্ছেন মনপুরার জেলেরা।
খোঁজ নিয়ে রামনেওয়াজ ঘাটের মৎস্য আড়তে ও স্থানীয় আহত জেলে সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনকার ন্যায় সুজন মাঝি, জামাল মাঝি, আলাউদ্দিন মাঝি, শাহআলম মাঝি, লোকমান মাঝি, জাফর মাঝি, সেলিম মাঝি, ইলিয়াছ মাঝি, জাহাঙ্গীর মাঝি, শাহাবউদ্দিন মাঝি ও আঃ হাই মাঝি বদনার চর সংলগ্ন মেঘনা নদীতে ইলিশ মাছ ধরার জন্য জাল ফেলে । আগ থেকে ওত পেতে থাকা হাতিয়ার জলদস্যু বাহিনীর প্রধান আলাউদ্দিন, কৃঞ্চ, রুবেল ও আরিফ বাহিনী জাগলার চর থেকে ট্রলার দিয়ে দেশীয় অস্ত্র ও ছড়াগুলি ছুড়ে জেলেদের চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলেন।
পরে জলদস্যুরা অস্ত্র তাক করে হামলা চালিয়ে জেলেদের জিম্মি করে প্রতি ট্রলার থেকে ১ জন করে মাঝিকে অপহ্রত করে মোট ১৫ জন মাঝিকে হাতিয়ার দিকে গভীর জঙ্গলে নিয়ে যায়। এদের মধ্যে ১১জন অপহৃত জেলের নাম পাওয়া গেছে। অপহৃত বাকী ৪ জনের নাম এখনও পাওয়া যায়নি।
আহত জেলে লোকমান জানান জলদস্যুরা তাদের নৌকায় উঠে তাদের বেধরক মারধর করেন। তাদের নৌকা থেকে ১৬ হালি মাছ নিয়ে গেছে। নগদ ৫শত টাকা ও ৩টি মোবাইল সেট নিয়ে যায়। আলাউদ্দিন মাঝির ট্রলারটি নিয়ে যায়। অপহৃত সকল মাঝি মনপুরার বলে জানিয়েছেন আহত জেলে লোকমান।
স্থানীয় আড়তদার লিটন হাওলাদার ও টিটু ভূইয়া জানান, মেঘনায় মাছ ধরা অবস্থায় হাতিয়ার জলদস্যুবাহিনীর লোকজন জেলেদের উপর হামলা চালিয়ে প্রতি ট্রলার থেকে ১ জন মাঝিকে অপহৃত করে জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপন দাবী করছেন। প্রায় হাতিয়ার জলদস্যু বাহিনী মনপুরার জেলেদের উপর হামলা চালায়। জেলেদের জিম্মি করে মুক্তিপন আদায় করে ছেড়ে দেয়। হাতিয়ার কোসটগার্ড একটু সোচ্চার হলে জলদস্যুরা জেলেদের উপর হামলা করার সাহস পেতোনা।
স্থানীয় আড়তদার ও জেলরা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, যেখানে জলদস্যুরা জেলেদের উপর হামলা চালায় সেখান থেকে কোস্টগার্ডের ক্যাম্প মাত্র দেড় কিলোমিটার। কোস্টগার্ড যদি ইচ্ছে করেন তাহলে ১ ঘন্টার মধ্যে জলদস্যুদের আটক করতে পারেন।
হাতিয়া জোনের কোস্টগার্ড প্রধান লেঃ কমান্ডার ওমর ফারুক জানান,জলদস্যুদের ধরতে রাত থেকে একটানা মেঘনার বিভিন্ন চরে অভিযান চালানো হয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা মনপুরার ডালচরে অভিযান চালিয়ে জিম্মি করা অপহৃত ১০ মাঝিকে উদ্ধার করে আমাদের বোটে রেখেছি। উদ্ধার হওয়া মাঝিরা হলেন জামাল, সাহাবউদ্দিন, আলাউদ্দিন, সুজন, সেলিম। এরির্পোট লেখা পর্যন্ত বেলা ( ৩ টা ) এখনও বাকিদের নাম জানা যায়নি। তবে জলদস্যুদের ধরতে কোস্টগার্ড ঢালচরের ভিতর অভিযান অব্যাহত রেখেছেন বলে কোস্টগার্ড প্রধান জানিয়েছেন।
এফএইচ