মঙ্গলবার ● ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » জাতীয় » কোনো ধর্ম সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ সমর্থন করে না: রাষ্ট্রপতি
কোনো ধর্ম সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ সমর্থন করে না: রাষ্ট্রপতি
ঢাকা : দেশবাসীকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি ধর্মের অপব্যাখ্যা করে কেউ যাতে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।তিনি বলেছেন,কোনো ধর্ম জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকা- সমর্থন করে না।পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে বঙ্গভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। সামাজিক ও ব্যক্তিগত জীবনে ঈদুল আজহার সুমহান আদর্শ ও শিক্ষার প্রতিফলন ঘটানোর জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতি বলেন, একটি শান্তিপূর্ণ, উদার ও সহিষ্ণু সমাজ গড়ার জন্য আমাদের সবাইকে ধৈর্যশীল ও সহনশীল হতে হবে। পবিত্র ঈদুল আজহার মর্মবাণী এটিই। বিশ্বে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ বাংলাদেশ, যেখানে সব ধর্মের মানুষ মুক্তভাবে তাদের ধর্ম চর্চা করতে পারেন। এটি বাংলাদেশের সুমহান ঐতিহ্যের অংশ।রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং তাঁর স্ত্রী রাশিদা খানম অনুষ্ঠানে আসা উচ্চপদস্থ সরকারি ব্যক্তিবর্গ, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তি, বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, সংসদ সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান, বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদক, সচিব, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষাবিদ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক, লেখক, কবি, ব্যবসায়ী সমাজের প্রতিনিধি, উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। গত ঈদুল ফিতরে শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার ঈদুল আজহায় বঙ্গভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় এই আহ্বান জানান রাষ্ট্রপ্রধান।আবদুল হামিদ বলেন, সকল ধর্মের মূলবাণী হচ্ছে মানব কল্যাণ। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ কোনো ধর্মই সমর্থন করে না।ইসলাম শান্তির ধর্ম। তাই ধর্মের অপব্যাখ্যা করে কেউ যাতে সমাজে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করতে না পারে, সে ব্যাপারে সকলকে সজাগ থাকতে হবে। মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পালনে হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর ত্যাগ থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি। কোরবানি আমাদের আত্মত্যাগের শিক্ষা দেয়। ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার মাধ্যমে গড়ে উঠে পরস্পরের প্রতি সহমর্মিতা। ভালবাসা ও ত্যাগের এই আদর্শ আমাদের ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে প্রতিফলিত হলেই পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ কমে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।কোরবানির শিক্ষা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্যকে ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে প্রতিফলিত করে জাতীয় উন্নয়ন ত্বরান্বিত করি-এটাই হোক এবারের ঈদের অঙ্গীকার।বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করে আবদুল হামিদ বলেন, ধর্ম যার যার-উৎসব সবার। এটাই সম্প্রীতির এক অনুপম ঐতিহ্য। সকালে জাতীয় ঈদগাহে নামাজ পড়ার পর বঙ্গভবনে ফিরে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন রাষ্ট্রপতি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী রাশিদা খানম ও পরিবারের সদস্যরা।ঈদ উপলক্ষে আয়োজিত এই সংবর্ধনায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা সপরিবারে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকিও রাষ্ট্রপতির সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।এছাড়া বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, তিন বাহিনীর প্রধানসহ উচ্চ পদস্থ বেসামরিক-সামরিক কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সংসদ সদস্য, রাজনীতিক, উচ্চ আদালতের বিচারপতি, শিক্ষাবিদ, কবি-সাহিত্যিক-শিল্পী, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, ধর্মীয় নেতারাও অনুষ্ঠানে অংশ নেন।