শুক্রবার ● ২৬ আগস্ট ২০১৬
প্রথম পাতা » জাতীয় » মনপুরার মেঘনায় জলদস্যুদের হামলার ২০ ঘণ্টায় পরও উদ্ধার হয়নী অপহৃত, ৩ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবী
মনপুরার মেঘনায় জলদস্যুদের হামলার ২০ ঘণ্টায় পরও উদ্ধার হয়নী অপহৃত, ৩ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবী
মো.সালাউদ্দিন,মনপুরা : ভোলার মনপুরার জেলেরা ইলিশ ধরা অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় হাতিয়ার জলদস্যু স¤্রাট আলাউদ্দিন বাহিনী আবারও জেলেদের উপর হামলা চালিয়ে ট্রলারসহ ১ মাঝিকে ধরে নিয়ে গেছে। অপহৃত মাঝি ও ট্রলারটি ছাড়িয়ে আনতে জলদস্যু বাহিনীর প্রধান ৩ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবী করছেন। বিষয়টি আড়তদার ও পরিবার সুত্রে নিশ্চিত করেছেন। এদিকে একের পর এক জলদস্যুদের হামলা ও অপহরণের কারণে মেঘনায় ইলিশ মাছ ধরতে জেলেরা অনিহা প্রকাশ করেছেন। জলদস্যুদের হামলার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি নন। প্রতিনিয়ত জলদস্যুদের হামলার শিকার হচ্ছেন মনপুরার জেলেরা। ভয়ে ও আতংকে অনেকে মাছ ধরার পেশা ছাড়িয়ে দিচ্ছেন। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শুক্রবার (বিকাল ৫ টা) পর্যন্ত এখনও অপহৃত মাঝি ও ট্রলারটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। কোস্টগার্ডের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে কোস্টগার্ড হাতিয়া জোনের কমান্ডার জানিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে রামনেওয়াজ ঘাট মৎস্য আড়তে গিয়ে ও স্থানীয় জেলে সূত্রে জানা যায়, , প্রতিদিনকার ন্যায় মৎস্য আড়তদার শামসুউদ্দিন বাচ্চু চৌধুরীর গধিগরের সোহরাব মাঝি ও রামনেওয়াজ ঘাটের মৎস্য আড়তদার মোঃ মোমিন মিয়ার গধিগরের রাকিব মাঝি জাগলা চর সংলগ্ন মেঘনা নদীতে ইলিশ মাছ ধরার জন্য জাল ফেলে । আগ থেকে ওত পেতে থাকা হাতিয়ার জলদস্যু বাহিনীর প্রধান আলাউদ্দিন,কৃঞ্চ,রুবেল ও আরিফ বাহিনী জাগলার চর থেকে ট্রলার দিয়ে দেশীয় অ¯্র ও ছড়াগুলি ছুড়ে জেলেদের চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলেন।
পরে জলদস্যুরা অ¯্র তাক করে হামলা চালিয়ে রাকিব মাঝির ট্রলার থেকে রাকিব মাঝিকে ও সোহরাব মাঝির ট্রলারসহ হাতিয়ার দিকে গভীর জঙ্গলে নিয়ে যায়। উভয় ট্রলারের জেলেদের বেধে জাগলা চরে রেখে যায়। সোহরাব মাঝি মেঘনা নদীতে ঝাপ দিয়ে পালিয়ে জাগলার চরে উঠে। পরে তারা রাকিব মাঝির মাছ ধরা ট্রলার দিয়ে মনপুরায় চলে আসেন।
স্থানীয় আড়তদার মোমিন মিয়া রাকিব মাঝিকে ছাড়িয়ে আনতে যোগাযোগ করলে ২ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবী করেন। এখনও দরকষাকষি চলছে। অপরদিকে সোহরাব মাঝির ট্রলার ছাড়িয়ে আনতে যোগাযোগ করলে ১ লক্ষ টাকা দাবী করেন। সর্বমোট ৩ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবী করেন জলদস্যুরা।
স্থানীয় আড়তদার ও জেলরা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, যেখানে জলদস্যুরা জেলেদের উপর হামলা চালায় সেখান থেকে কোস্টগার্ডের ক্যাম্প মাত্র দেড় কিলোমিটার। কোস্টগার্ড যদি ইচ্ছে করেন তাহলে ১ ঘন্টার মধ্যে জলদস্যুদের আটক করতে পারেন। জেলেরা অভিযোগ করেন জলদস্যুরা কোস্টগার্ড সাথে যোগসাজসে মেঘনায় জেলেদের উপর হামলা করে জেলেদের আটক করে মুক্তিপন আদায় করেন। তার একটি অংশ হাতিয়ার কোসগার্ড ভাগ পেয়ে থাকেন। জলদস্যুরা কোস্টগার্ডকে মেহমান বলে ডাকেন। তা নাহলে গত ১ সপ্তাহের মধ্যে জলদস্যুরা জেলেদের উপর এত হামলা করছেন কিভাবে ?
এব্যাপারে হাতিয়া জোনের কোস্টগার্ড প্রধান লেঃ কমান্ডার ওমর ফারুক জানান,আমরা জলদস্যুদের হামলার ঘটনা শুনার সাথে সাথে মেঘনায় অভিযান পরিচালনা করি। এখনও অপহৃত মাঝি ও ট্রলারটি উদ্ধার করতে আমরা মেঘনায় অভিযান অব্যাহত রেখেছি। আমাদের কয়েটি টিম ইতিমধ্যে মেঘনার বিভিন্ন চরে অভিযান পরিচালনা করছেন। জলদস্যুদের সাথে আমাদের কোন যোগাযোগ নেই। আমরা জলদস্যুদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছি। এখনও অপহৃত জেলে ও ট্রলার উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
এফএইচ