রবিবার ● ৭ আগস্ট ২০১৬
প্রথম পাতা » জাতীয় » বন্যায় হাজারো মানুষের মানবেতর জীবন-যাপন: সবকিছুই বিপর্যস্ত
বন্যায় হাজারো মানুষের মানবেতর জীবন-যাপন: সবকিছুই বিপর্যস্ত
ডেস্ক: দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির আরো উন্নতি হয়েছে। পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার অপেক্ষায় থাকায় মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। দক্ষিণাঞ্চলে জোয়ারের পানি কিছুটা কমলেও সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :রোববার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে যে, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘন্টার অর্থাৎ রোববার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকার সম্ভবনা রয়েছে। এদিকে শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অফিস বলছে, এ সময়ের শেষের দিকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে।সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে আবহাওয়া অফিস বলছে, উত্তর উড়িষ্যা ও তৎসংলগ্ন এলাকার লঘুচাপটি মৌসুমী অক্ষের সাথে মিলিত হয়েছে। মৌসুমী বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ, উড়িষ্যা গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর- পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশে মোটামুটি সμিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী থেকে প্রবল রয়েছে। এদিকে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।আবহাওয়া অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানানো হয়। আবহাওয়ার সর্বশেষ খবরে বলা হয়, উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে হবে।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নি��াঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে দুই থেকে তিন ফুট অধিক উচ্চতার জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হতে পারে।এছাড়া বায়ু চাপের তারতম্যের আধিক্যের কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকুলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। কুড়িগ্রাম : পানি কমতে থাকায় কুড়িগ্রামে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো উন্নতি হয়েছে। বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ধরলায় ১৯ ও ব্রহ্মপুত্রে ১৭ সেন্টিমিটার পানি কমেছে। ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার চরগুলোর নিচু এলাকায় এখনো কয়েক শ ঘরবাড়ি বন্যার পানিতে নিমজ্জিত। পানি কমার পর বাড়িঘরে ফিরতে গিয়ে বন্যার্তদের পোহাতে হচ্ছে নানা ভোগান্তি। কাজ ও অর্থের অভাবে বিপাকে পড়েছে তারা। বীজতলাসহ ফসল নষ্ট হওয়ায় এবং আবাদি জমি বালুতে ঢেকে যাওয়ায় বন্যাকবলিত এলাকায় মিলছে না কাজ। এদিকে, বন্যার পানিতে ডুবে জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা গ্রামে আলমগীর নামের দেড় বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বন্যায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫। কুড়িগ্রামের বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করছেন গণজাগরণ মঞ্চ। রাজীবপুর রৌমারী চিলমারী উপজেলার বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছেন মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার। ব্রহ্মপুত্র নদ বিচ্ছিন্ন পশ্চিমরাজীবপুর দশগড়িয়া পাড়া, শিকারপুর, কীর্তনতারি, ভেলামারী, চরনেওয়াজী, বড়বেড় ও কোদালকাটি অষ্টিমেরচর বাদলামারা চরের ৩ হাজার বন্যা কবলিত পরিবারের হাতে ওইসব ত্রাণ সামগ্রী তুলে দেয়া হয়। গত শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত চলে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ।ইমরান এইচ সরকার জানান, তিনদিন ব্যাপি রৌমারী, রাজীবপুর, অষ্টমীচর ও সাহেবের আলগা চরের বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হবে। এতে দুই থেকে আড়াই হাজার পরিবারের মাঝে ৫ কেজি চাল, ৩ কেজি আলু, ২ কেজি চিড়া, ১ কেজি গুড়সহ স্যালাইন, মোমবাতি, দিয়াশলাই, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলে ও কিছু ওষুধপত্র বিতবরণ করা হচ্ছে। শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চের উদ্যোগে ওই ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। গাইবান্ধা : জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরো উন্নতি হয়েছে। এর মধ্যে ফুলছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর দেখা দিয়েছে নানা রোগব্যাধি। কলাপাড়া: সাগর মোহনা ঘেঁষা আন্ধারমানিক নদীর তান্ডবে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে জোয়ারের পানিতে টানা তিন মাসের প্লাবনে মহিপুর ইউনিয়নের চারটি গ্রামের অন্তত দুই হাজার পরিবারের এখন মরনদশা হয়েছে। নিজামপুর, ইউসুফপুর, পুরান মহিপুর ও সুধিরপুর গ্রামের এসব মানুষের দুর্দশা চোখে না দেখলে বোঝানো যায় না। তিন মাস আগে নিজামপুর গ্রাম সংলগ্ন বেড়িবাঁধ নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এ বাঁধটি গেল বছর মেরামত করা হয়েছিল। যেনতেন ভাবে মেরামত করায় বাঁধটি ভেঙ্গে গেছে বলে এলাকার মানুষের অভিযোগ। এরপর থেকে মাসের ১৫দিন জোয়ারের দুই দফা প্লাবনে ভাসছে চারটি গ্রাম। বর্তমানে মাসাধিককাল পানি আর নামছে না। অস্বাভাবিক জোয়ারে হুহু করে পানি জনপদে প্রবেশ করছে। মানুষের বাড়িঘর, পুকুর, রাস্তা থেকে শুরু করে লেট্রিন পর্যন্ত ডুবে একাকার হয়ে গেছে। পানির তোড়ে গ্রামের মাঝখান দিয়ে চলাচলের পাকা রাস্তাটি ভেঙ্গে একাকার হয়ে গেছে। স্থানীয়রা মাটি বোঝাই করে প্লাস্টিক বস্তা রাস্তার পাশে দিয়ে পানির প্লাবন ঠেকানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। অবস্থা এমন হয়েছে যে হাজারো পরিবারে রান্নার চাল-চুলা পর্যন্ত ভেসে গেছে। চৌকির উপরে ইট দিয়ে রান্না করতে হয়। পায়খানা-প্র�্রাব পর্যন্ত করতে পারছে না। মানবিক বিপর্যয় শুরু হয়েছে। খাবার-রান্না ও গোসলের পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি পালন করতে পারছে না। একটি মাত্র ফসল নির্ভর এসব কৃষক পরিবার আমন আবাদ তো দুরের কথা বীজতলা পর্যন্ত করতে পারছেন না। একদফা বীজতলা করেছেন। তা পচে গেছে। নিজামপুর গ্রামের মানুষকে এখন চলাচল করতে হচ্ছে নৌকার মাধ্যমে। সরেজমিনে দেখা গেছে, সর্বত্র পানি আর পানি। অভ্যন্তরীণ রাস্তাঘাট সব ভেঙ্গে একাকার হয়ে গেছে। কোনমতে এক বেলা রান্না করে তিন বেলা খেতে হচ্ছে সবাইকে। অন্তত দুই হাজার পরিবার এমন দুর্দশায় পড়েছেন। স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে অন্তত তিন শ� শিশুর। একমাত্র স্কুলে যাওয়ার রাস্তাসহ সব পানিতে ডুবে আছে। ৫ম শ্রেণির সুমাইয়া, তৃতীয় শ্রেণির তানজিলা, রিমতি, লামিয়া, আসাদুল ও দ্বিতীয় শ্রেণির ইভা জানায়, তাদের লেখাপড়া বন্ধের উপক্রম হয়েছে। লুৎফর রহমান জানালেন, প্লাস্টিকের বস্তায় মাটি ভরে রাস্তায় দিয়েছি। কিন্তু তাও উপচে পানি ভিতরের গ্রামে প্রবেশ করছে। ইউনুচ ফকির জানালেন, যার সঙ্গতি আছে তারা গ্যাসের সিলিন্ডার চুলাসহ কিনে ডালভাত রান্নার ব্যবস্থা করেছে। যাদের সম্ভব নয় তাদের দুরাবস্থার শেষ নেই। স্থানীয়দের অভিযোগ গেল বছর রিং বাঁধটি মাত্র আট ইঞ্চি উচু এবং ১২ ইঞ্চি চওড়া করায় অস্বাভাবিক জোয়ারের তোড়ে ভেসে গেছে। বাঁধটি ঠিকমতো উচু করলে তাদের এ সমস্যা হতো না বলে সকলের ধারনা। বিধ্বস্ত গ্রাম চারটির মাঝখান দিয়ে করা ভাঙ্গাপুল নামের পাকা সড়কটির অন্তত ৫০ মিটার বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এখন অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ বন্ধের উপক্রম হয়েছে। বাড়ি থেকে সড়কে নৌকায় আসলেও এখন সড়কটিও বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগের ষোলকলা পুর্ণ হচ্ছে হাজার হাজার পরিবারের। এসব মানুষের দাবি একটাই ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ মেরামত করে দেয়া হোক। স্থানীয় লোকজন জানান, কয়েকটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা তাদের ভাঙ্গা বাঁধ মেরামত করে দেয়ার জন্য ইচ্ছা পোষণ করলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড তাদের বাঁধ মেরামত কিংবা সংস্কারে কোন এনজিওকে সুযোগ না দেয়ায় ভুক্তভোগিরা পড়েছেন এখন চরম বিপাকে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবুল খায়ের জানান, ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ মেরামতের পদক্ষেপ তারা নিচ্ছেন। এনজিওর বেড়িবাঁধ মেরামত সম্পর্কে তিনি জানান, কেউ প্রস্তাবনা দিলে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ফরিদপুর : ফরিদপুরে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। গতকাল গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি ১১ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ঝালকাঠি : ঝালকাঠিতে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। জোয়ারের প্রভাবে গতকাল সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে চার উপজেলার নদীতীরবর্তী চার হাজার পরিবার। নলকূপগুলো তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকটে ভুগছে মানুষ। নদীতীরবর্তী ৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে। বিষখালী নদীর তীরবর্তী সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দেউরি এলাকার ৫০০ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে দেউরি, দিয়াকুল ভাউতিতা, পোনাবালিয়া, রাজাপুরসহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বাগেরহাট : ভৈরব নদীর জোয়ারের পানির তোড়ে রাস্তা ভেঙে বাগেরহাট সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দুই দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার পরিবার। পানিতে নষ্ট হয়েছে সবজিক্ষেত, ভেসে গেছে পুকুর ও মাছের ঘের। বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সংকর কুমার চক্রবর্তী বলেন, �আমার ইউনিয়নের ২০ হাজারের অধিক মানুষ পানিবন্দি। এলাকাবাসীদের নিয়ে এসব স্থান সংস্কারের চেষ্টা করছি। মুন্সীগঞ্জ : মুন্সীগঞ্জে বন্যাকবলিত নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘর থেকে পানি সরে যেতে শুরু করেছে। তবে টঙ্গিবাড়ী, লৌহজং ও শ্রীনগর উপজেলার পদ্মা তীরের গ্রামগুলোর কয়েক হাজার পরিবার এখনো বন্যাকবলিত। তীব্র �্রােতের কারণে পদ্মার কয়েকটি পয়েন্টে নদীভাঙন অব্যাহত আছে। গতকাল পদ্মার পানি মুন্সীগঞ্জের ভাগ্যকূল পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার এবং মাওয়ায় সাত সেন্টিমিটার কমে তিন সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি ফেরি সার্ভিসেরও উন্নতি হয়েছে।পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আউয়াল জানান, রোববার পদ্মার পানি মুন্সীগঞ্জের ভাগ্যকূল পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার কমে বিপদ সীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে এবং মাওয়ায় ১০ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে বইছে।বানভাসীদের বাড়ি থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। এখনও টঙ্গীবাড়ি, লৌহজং ও শ্রীনগর উপজেলার পদ্মা তীরের গ্রামগুলো কয়েক হাজার পরিবার এখনও বন্যাকবলিত। একদিকে পানি কমছে অপর দিকে বন্যা কবলিতদের নানা সমস্যা বাড়ছে। বিশুদ্ধ পানি, খাবার ও বিভিন্ন পানি বাহিত রোগ দেখা দিচ্ছে। এদিকে বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে এলাকায় সরকারী ভাবে চাল, নগদ টাকা এবং পানি বিশুদ্ধ করণ বরি বিতরণ করা হচ্ছে। তীব্র �্রােতের কারণে কয়েকটা পয়েন্টে নদী ভাঙ্গনও দেখা দিয়েছে। সরকারী ভাবে নির্দেশে আছে ভাঙ্গন বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার। এছাড়া যেখানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে তা রোধ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভাঙ্গনে যাদের সহায় সম্বল সব হারিয়েছে সরকার তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবে বলে ইতোমধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঘোষণা দিয়েছে।এদিকে শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি ফেরি সার্ভিসও প্রায় মাসকাল ধরে ব্যাহত হচ্ছে। তীব্র �্রােতে ফেরিগুলো স্বাভাবিকভাবে চলতে পারছিল না। উচ্চ ক্ষমতার টাক বোড দিয়ে ফেরিগুলো লৌহজং টানিংয়ে টেনে নেয়া হচ্ছিল। সময় লাগছিল প্রায় দ্বিগুণ। এখন অবস্থা কিছুটা ভালোর দিকে যাচ্ছে। এসব তথ্য দিয়ে বিআইডব্লিউটিসির এজিএম শাহ নেওয়াজ খালিদ জানান, রোববার উচ্চ ক্ষমতার টাক বোড ছাড়াই ফেরিগুলো চলছে। কাওড়াকান্দির তলিয়ে যাওয়া ২ নম্বর ঘাটটিও মেরামত করা হয়েছে। দু�প্রান্তের ৬টি ঘাট দিয়েই এখন গাড়ি পারাপার করা হচ্ছে। তবে এখনও ফেরি চলছে ১৭টির স্থলে ১৩টি। দু�পারেই যানজট কমেছে। রোববার উভয় পাড়ে পারাপারের অপেক্ষায় ছিল শতাধিক যান।