বুধবার ● ৮ জুন ২০১৬
প্রথম পাতা » জাতীয় » তজুমদ্দিনে ২০ গ্রামের মানুষ রোযা রাখে পাশের গ্রামের রান্না করা খাবার খেয়ে
তজুমদ্দিনে ২০ গ্রামের মানুষ রোযা রাখে পাশের গ্রামের রান্না করা খাবার খেয়ে
মো. রফিক সাদী, তজুমদ্দিন প্রতিনিধি: রোয়ানুর প্রভাবে সৃষ্ট টর্নেডোর আঘাতে বিধ্বস্ত তজুমদ্দিনে বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে জোয়ারের পানিতে প্রায় ২০টি গ্রামের অর্ধলক্ষ মানুষ পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে। পরিবার পরিজন নিয়ে কেউ কেউ বাড়ীঘর ফেলে চলে গেছে অন্যত্র। দিনে রাতে দুইবারে ১০ঘন্টা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়ে পানিবন্ধি থাকায় দুর্গতরা মাহে রমজানের রোযা রাখতে হয় পাশের গ্রাম ও আত্মীয় স্বজনের বাড়ী থেকে রান্না করা খাবার খেয়ে। শিশুদের নিয়ে বিপাকে পড়েছে দুর্গত অসহায় পরিবার গুলো। এছাড়া প্রায় ৫ হাজার ছাত্র-ছাত্রীর মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। এসময় জনপ্রতিনিধিদের পাশে না পেয়ে দুর্গত মানুষরা ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
সরেজমিন প্লাবিত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চাদপুর সদর ইউনিয়নের হাজিকান্দি,দালালকান্দি ও চৌমহনী এই ৩টি পয়েন্টে রোয়ানুর পর থেকে বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হতে থাকে। উপজেলা সদরের পাশে দড়িচাদপুর, পাটওয়ারীকান্দি,হাজিকান্দি,দালালকান্দি,শশীগঞ্জ,মাওলানাকান্দি,মহাজনকান্দি,তালুকগ্রাম, ভূঁইয়াকান্দি,বালিয়াকান্দি,দেওয়ানপুর,ডাক্তারকান্দি,কাজিকান্দি,শিকদারকান্দি ও দাসপাড়া সহ প্রায় ২০ গ্রামের মানুষ ১৮দিন যাবৎ জোয়ারের পানিতে পানিবন্ধি হয়ে পড়ে রয়েছে। জোয়ারে ভেসে গেছে পুকুরের কোটি টাকার মাছ। গবাদি পশুর খাবার ও পালন নিয়ে দুর্গতরা রয়েছে বিপাকে। সঠিক সময়ে খাবার না পেয়ে ছোট ছোট শিশুরা করছে আহাজারি।
হাজীকান্দি গ্রামের মো. ফারুক, খোকন মিয়া, আজগর ও কবির পন্ডিত জানান, প্রতিদিন ২বার জোয়ারে ৮ থেকে ১০ ঘন্টা পানিবন্ধি থাকতে হয়, পাশের গ্রামে আত্মীয়ের বাড়ি থেকে রান্না করে রমজানের খাবার খেতে হয়। দালালকান্দি গ্রামের শাহ আলম,মো.কামাল, আলাউদ্দিন সহ কয়েকজন কৃষক বলেন, রোযার দিনে নিজেদের কষ্টের শেষ নেই, পাশাপাশি গরু ছাগলের খাবার ও লালন পালন নিয়ে চরম বেকায়দায় আছি। দেওয়ানপুর গ্রামের শফিউল্যাহ,জাফর হাওলাদার,মিজান সহ অনেকে জানান, আমাদের অবস্থা চরের মানুষের চেয়েও খারাপ,ছেলে মেয়েদের পড়ালেখা সহ জীবনযাত্রা অচল হয়ে পড়েছে। ৫নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোঃ নুর হাফেজ বলেন, ভেঙ্গে যাওয়া বেড়ীবাঁধ টুকু দ্রুত নির্মাণ না হলে এলাকার মানুষের আরো বড় ধরনের ক্ষতির আশংকা রয়েছে।
উপজেলা আ’লীগ সভাপতি ও চাদপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফকরুল আলম জাহাঙ্গীর বলেন, দুর্গতদের ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ও নেতৃবৃন্ধকে জানানো হয়েছে, দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জালালউদ্দিন বলেন, পানিবন্ধি মানুষের কষ্ট বিবেচনা করে তাদের মাজে ত্রান বিতরণের উদ্দ্যোগ নেয়া হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্জ অহিদউল্যাহ জসিম বলেন, এমপি মহোদয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করে অতিদ্রুত বেড়ীবাঁধ নির্মাণ করার ব্যবস্থা নেয়া হবে।