শুক্রবার ● ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » এরশাদের পায়ে লুটিয়ে কাঁদলেন আমরণ অনশনরত শিক্ষকরা
এরশাদের পায়ে লুটিয়ে কাঁদলেন আমরণ অনশনরত শিক্ষকরা
ঢাকা : এমপিওভুক্তির দাবিতে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পায়ে লুটিয়ে কাঁদলেন আমরণ অনশনরত শিক্ষকরা। কেবল আশ্বাস নয়, সমাধানের আশায় তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দূত ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের কাছে মিনতি করেন।জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সৃষ্ট পদে বৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের এমপিওভুক্তির দাবিতে আমরণ অনশন চলছিলো গত ২২ ফেব্র�য়ারি থেকে। এমপিওভুক্তির দাবিতে শিক্ষকদের আমরণ অনশনে সংহতি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি তো মা, আপনার সন্তানদের দাবি মেনে নিন। শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ শিক্ষক ঐক্য পরিষদের আমরণ অনশন কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে তিনি একথা বলেন। এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সৃষ্টপদে নিয়োগপ্রাপ্ত নন-এমপিও বাংলাদেশ শিক্ষক ঐক্য পরিষদের এ কর্মসূচির পঞ্চম দিন শুক্রবার (২৬ ফেব্র�য়ারি)। এদিন তাদের কয়েকজন বেশ অসুস্থ হয়ে পড়লে দুপুরে দেখতে যান এরশাদ। সমাধানের আশ্বাস দিয়ে তিনি শিক্ষকদের অনশন ভঙ্গের আহ�ান জানান।এরশাদ বলেন, বাবা-মায়ের পরে শিক্ষকদের স্থান, তারা রাস্তায় অবস্থান করছেন। অথচ কেউ দেখার নেই। তিনি বলেন,২০১১ সালের ১৩ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের ফলে ৫ বছর বিনাবেতনে থেকে এই শিক্ষকরা কিভাবে এতোদিন বেঁচে আছেন এটাই প্রশ্ন। শিক্ষকরা আমাদের মানুষ করে, আর এই শিক্ষকরা মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাই শিক্ষকদের এই দাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান এরশাদ।এ সময় শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা অনশন প্রত্যাহার করে ঘরে ফিরে যান। শিক্ষামন্ত্রী দেশের বাইরে থাকায় আমি শিক্ষা সচিবের সঙ্গে কথা বলেছি। আশা করি সংশ্লিষ্টরা যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।�এ সময় পানি পান করিয়ে শিক্ষকদের অনশন ভাঙান এরশাদ।এর আগে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলে সংগঠনটির সভাপতি প্রদীপ চন্দ্র রায়।এরশাদ বলেন, শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগর। শিক্ষামন্ত্রীকে অনুরোধ করবো, আপনাদের দাবি মেনে নিতে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে এরশাদ বলেন, আপনি তো মা, আপনার এ সন্তানদের দেখবেন। অনাহারে শিক্ষকরা রাস্তায় শুয়ে থাকবে, এটা তো হয় না। আলোচনা করারঅনুরোধ করবো। প্রয়োজনে প্রজ্ঞাপন বাতিল করুন। এ পর্যায়ে কয়েকজন শিক্ষক এরশাদের পা জড়িয়ে ধরেন ও কেঁদে বলেন, স্যার, কী অপরাধ করেছি, আমাদের বাঁচান।এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করবেন বলে বারবার তিনি শিক্ষকদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন।সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, শিক্ষামন্ত্রী এ মুহূর্তে দেশের বাইরে আছেন। আগামী রোববার শিক্ষা সচিব আমার সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন। আপনারা অনশন ভাঙুন। বাড়ি ফিরে যান। বলেছি তো, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবো আমি, এর একটা সমাধান করবো। প্রধানমন্ত্রীকে আমি বলবো, আপনি মানবিক হন, ক�টা টাকার জন্য তারা অনাহারে কেন থাকবে?এরপর পানি পান করিয়ে শিক্ষকদের অনশন ভাঙান তিনি। সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক বিলাল হোসেন জানান, তারা প্রধানমন্ত্রী বিশেষ দূতের দেওয়া আশ্বাসে আশ্বস্ত হয়ে অনশন ভেঙেছেন ও বিকেলে বাড়ি ফিরে যাবেন।তবে বাজেটের আগে আমাদের দাবি না মানা হলে, আবারও আন্দোলনে নামবো, বলেন তিনি।পাশেই চলছিলো বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির অবস্থান ধর্মঘট।এরশাদ সেদিকেও এগিয়ে যান। জাতীয় স্কেল অনুসারে বেতনের দাবিতে তাদের এ কর্মসূচিতে একমতের কথা জানান তিনি। এরশাদের বরাতে সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা নজরুল ইসলাম হিরণ বলেন, এরশাদ বলেছেন, আপনারাও বাড়ি চলে যান। আমি দেখবো বিষয়টা। সরকারের পক্ষ থেকে (সংশ্লিষ্টরা) কেউ আসেনি, এটা অমানবিক আচরণ।তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা থাকবো,প্রয়োজনে আরও কঠোর আন্দোলনে যাবো,বলেন নজরুল।