সোমবার ● ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » জাতীয় » দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চলছে,সর্তক থাকার পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর
দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চলছে,সর্তক থাকার পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর
ঢাকা : থার্টি ফার্স্ট নাইটে সন্ধ্যার পর অনুষ্ঠান না করার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে তিনি থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন করতে বলেছেন। যেকোনো আনন্দ উৎসব পালনের আগে তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে পরামর্শ করতে বলেছেন।সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। নির্দিষ্ট আলোচ্যসূচি শেষ হওয়ার পর অনানুষ্ঠানিক এক আলোচনায় শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।ওই আলোচনায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন আন্তর্জাতিক পর্যটন বর্ষ উপলক্ষে আতশবাজিসহ অন্যান্য অনুষ্ঠান সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন।এ বিষয়ে আলোচনার সূত্র ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইটে সন্ধ্যার পর অনুষ্ঠান ঠিক হবে না বলে তিনি মনে করেন। রাশেদ খান মেনন জানান, পরিস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিক পর্যটন বর্ষ উপলক্ষে কক্সবাজারে আয়োজিত আতশবাজি অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। অন্যান্য কর্মসূচি বহাল থাকবে। বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে নানা ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের অভাব নেই। এই পরিস্থিতিতে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে বলে মতপ্রকাশ করেছেন শেখ হাসিনা।প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রধানমন্ত্রী নববর্ষ পালনের পরামর্শ দিয়েছেন। সূত্র জানায়, নিরাপত্তাবিষয়ক ওই অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় বাংলা নববর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় ছাত্রী লাঞ্ছনার প্রসঙ্গ ওঠে। আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা জানান, এ ঘটনায় পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। এ ঘটনায় কেউ সাক্ষী দেয়নি। এমনকি নির্যাতিত ছাত্রীও কোনো বক্তব্য দেয়নি। কোনোরকম সাক্ষ্যপ্রমাণ না পাওয়ায় পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। এই প্রতিবেদন নিয়ে এখন আবার প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, থার্টিফার্স্টের অনুষ্ঠান কর্মসূচি একটি নিয়ন্ত্রিত পরিবেশের মধ্যে যেন উদযাপন হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। কোনো বিশৃঙ্খলা বা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি যেন তৈরি না হয় সে ব্যাপারেও সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে, আমাদের দেশকে নিয়ে দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চলছে। শেখ হাসিনা বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব শুধু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নয়। সবাইকেই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার উদ্যোগ নিতে হবে।তিনি বলেন, থার্টিফার্স্টের অনুষ্ঠান কেবল রাতেই করতে হবে, এমন কথা নেই, দিনেও এ অনুষ্ঠান করা যায়। নিয়ন্ত্রিত কর্মসূচির মাধ্যমে অনুষ্ঠান উদযাপন করতে হবে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী জঙ্গি ধরা পড়া প্রসঙ্গে বলেন, জঙ্গিরা ধরা পড়ছে। নতুন নতুন জঙ্গি নেটওয়ার্ক পাওয়া যাচ্ছে। নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।দেশের বাইরের ষড়যন্ত্র আছে, দেশের ভেতরের ষড়যন্ত্রও আছে। দেশকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত চলছে। সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে, সতর্ক থাকতে হবে। আমরা এই ষড়যন্ত্রও মোকাবেলা করবো।সূত্র আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশি ও আন্তর্জাতিক চক্র নানা প্রকার ছক কেটে কেটে অগ্রসর হচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও রায় কার্যকর করার বিরুদ্ধে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র আছে। আমাদের দেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র-চক্রান্তকারীদের অভাব নেই। দেশে-বিদেশে তারা তৎপর। অনেক বড় চাপ উপেক্ষা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও রায় কার্যকর করা হচ্ছে। মন্ত্রিসভার সদস্যদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিষয়গুলোকে অবহেলা করবেন না। সতর্ক থাকা সবার দায়িত্ব। সবাই মিলে সতর্ক থাকবেন। আনন্দ-উৎসব দিনের বেলায়ও করা যায়। রাতে আনন্দ করতে গেলে যদি সমস্যা তৈরির আশঙ্কা থাকে তাহলে রাতে না করাই ভালো। কোনো সমস্যা যাতে না হয় এজন্য সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে।