বৃহস্পতিবার ● ৫ নভেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » জাতীয় » আক্রান্ত হলেই গুলি চালাতে পারবে পুলিশ
আক্রান্ত হলেই গুলি চালাতে পারবে পুলিশ
ঢাকা : তল্লাশি চৌকিতে দায়িত্ব পালনকালে আক্রান্ত হলেই গুলি চালাতে পারবেন পুলিশ সদস্যরা।এ জন্য পূর্ব অনুমতি লাগবে না। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের সঙ্গে ডিএমপির বিভিন্ন বিভাগের উপকমিশনার ও অতিরিক্ত উপকমিশনারদের এক ৗবৈঠকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশ সদর দফতরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে চেকপোস্ট বসানোর সময় অন্তত একটি অস্ত্রে গুলিভর্তি রাখতে বলা হয়।এতে পুলিশ সদস্যদের চারটি নির্দেশনা দেওয়া হয় বলে বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।এ নির্দেশনাগুলো হলো পর্যাপ্ত লোকবল বা পুলিশ সদস্য না থাকলে তল্লাশি চৌকি বসানো যাবে না; তল্লাশি চৌকিতে দায়িত্ব পালনকালে পুলিশ সদস্যদের বুলেটপ্র�ফ জ্যাকেট পরতে হবে; তল্লাশি চৌকিতে অন্তত একটি অস্ত্র গুলিভর্তি থাকতে হবে এবং আক্রান্ত হলে অনুমতির অপেক্ষা না করেই গুলি চালাতে হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির গণমাধ্যম শাখার উপকমিশনার মুনতাসিরুল ইসলাম বলেন, বুধবার একটি বৈঠক হয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্তের কথা তাঁর জানা নেই।এদিকে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে একই ধরনের নির্দেশনা সারা দেশের পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন উপ-কমিশনার (ডিসি) বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যেন না হয় সে বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার নির্দেশনা দিয়েছেন। নিরাপত্তা জোরদার করতে নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে।বৈঠকে কমিশনার বলেছেন, টহল বা চেকপোস্টে পুলিশ গুলিবিদ্ধ হবে এবং সন্ত্রাসীরা গুলি করে চলে যাবে; পুলিশ গুলি করবে না, এটা হতে পারে না। নিজেদের রক্ষায় গুলি চালাতে হবে। এ ক্ষেত্রে কারও অনুমতি লাগবে না।পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য না থাকলে চেকপোস্ট না বসানোর জন্যও বৈঠকে বলা হয়েছে। তল্লাশি চৌকিতে দায়িত্ব পালনকালে পুলিশ সদস্যদের বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরতে বলা হয়েছে।জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) জাহাঙ্গীর আলম সরকার বলেন, অফিসিয়ালি এ ধরনের নির্দেশনা জারি করা হয়নি। তবে আন-অফিসিয়ালি পুলিশ সদস্যদের সতর্ক করা হয়েছে।২২ অক্টোবর রাজধানীর গাবতলীতে চেকপোস্টে সন্ত্রাসীদের চুরিকাঘাতে পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক ইব্রাহিম নিহত হন। তার ১৩ দিনের মাথায় ৪ নভেম্বর সাভারের আশুলিয়ায় একইভাবে চেকপোস্টে পুলিশের ওপর হামলা করে সন্ত্রাসীরা।এতে কনস্টেবল মুকুল হোসেন নিহত হন। আহত হন নূরে আলম নামে এক পুলিশ সদস্য। এদিকে, দেশে গত আড়াই বছরে ১০ ব্লগার নিহত হয়েছে। শুধুমাত্র রাজিব হায়দারের হত্যা রহস্য উদঘাটন হয়েছে। দুজন বিদেশি নাগরিক খুন হলো। হোসেনী দালানে গ্রেনেড হামলায়ও ঝড়ে গেল দুটি তাজা প্রাণ। সর্বশেষ শনিবার একজন প্রকাশক-ব্লগারকে কুপিয়ে হত্যা করা হলো। নিহত ব্লগার বইয়ের প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনকে।একই দিন সন্ত্রাসী হামলায় আহত হলেন দুই ব্লগারসহ আরেক প্রকাশক। হামলায় আহত শুদ্ধস্বরের প্রকাশক আহমেদুর রশীদ, লেখক-ব্লগার তারেক রহিম ও রনদীপম বসু দেশের এমন পরিস্থিতিতে সব বাহিনী খুব সক্রিয় হলেও একের পর এক এই হত্যা-হামলার দায় এড়াতে পারেন না তারা।এমনটিই বলছেন সংশ্লিষ্টরা। অনেকে ক্ষোভের সঙ্গে শ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন, তাহলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কি ঘুমায়? এসব হত্যাকান্ডের দায় কি তাদের নেই? দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোই বা কি কাজ করে? জানা গেছে, দেশে বর্তমানে কমপক্ষে ৫টি গোয়েন্দা সংস্থা সক্রিয়। সন্ত্রাসীদের তথ্য সংগ্রহের জন্য কোটি কোটি টাকা সোর্স মানি ব্যবহার করা হচ্ছে। একর পর এক এসব হত্যার রহস্য উদঘাটনের জন্য এই টাকা ব্যয় হওয়ার কথা। কিন্তু এতো টাকা যায় কোথায়- এমন প্রশ্ন উঠেছে।এদিকে পুলিশের কোন কোন এসপি, ডিআইজিসহ একশ্রেণির কর্মকর্তা মামলার তদন্ত গতিশীল করার বদলে বদলি বাণিজ্য নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে।