বৃহস্পতিবার ● ৫ নভেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » জেলার খবর » ভোলায় নিষিদ্ধ গাইড বিক্রির লক্ষে প্রধান শিক্ষকদের সাথে দেন দরবার : বাধাগ্রস্ত্য শিক্ষার্থীরা
ভোলায় নিষিদ্ধ গাইড বিক্রির লক্ষে প্রধান শিক্ষকদের সাথে দেন দরবার : বাধাগ্রস্ত্য শিক্ষার্থীরা
আব্দুল মালেক : ভোলায় মাধ্যমিক স্তরের ফাইনাল পরিক্ষা এখনও অনুষ্ঠিত হয়নি। কিন্তু এখন থেকে জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিষিদ্ধ গাইড শিক্ষার্থীদের হাতে পৌছানোর লক্ষ্যে কোম্পানির প্রতিনিধিরা বেপরোয়া হয়ে প্রধান শিক্ষকদের সাথে দরকষা কষির কাজ ব্যাস্থ সময় পারকরছেন। গাইড কোম্পানির প্রতিনিধিদের লক্ষ্যে যে যত বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বই বিক্রি করতে পারবে সেই কোম্পানি থেকে বেশি সুবিধা পাবে। এ প্রতিযোগিতায় নেমেছে নিষিদ্ধ নিম্ম মানের গাইড বই কোম্পানি গুলো। এক শ্রেণীর সুবিধাভোগিদের কারণে বর্তমান সরকারের শিক্ষা ক্ষেত্রে নেওয়া মহতি উদ্যোগ গুলো ভেস্তে যাচ্ছে। উঠতি বয়সি কৌমলমতি শিক্ষার্থীদের মেধাবিকাশে নিষিদ্ধ গাইড গুলো বাধাগ্রস্ত করলেও সঠিক নজরধারী নেই সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের।
সূত্র জানায়, বর্তমান সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে আর্মূল পরিবর্তনের জন্য এবং শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশের জন্য সৃজনশীল পদ্ধতি চালু করছে। যাহা শুধু মাত্র তাদের পাঠ্য বই পড়লেই পরিক্ষায় খুব ভালো ভাবে মেধা খাঠিয়ে উত্তর লিখতে পারে। কিন্তু এক শ্রেণীর অর্থলোভীদের জন্য সরকারের নেওয়া সে উদ্যেগ অনেকাংশে কাগজে কলমেই থেকে যাচ্ছে। সরকার নিষিদ্ধ গাইডের উপর কঠোর পদক্ষেপ নিলেও উপজেলা প্রশাসনের নিরব ভূমিকায় তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। সরকার যত পদক্ষেপ নিচ্ছে তার বিপরীতে নিষিদ্ধ গাইড বই কোম্পানি গুলো তাদের গাইড প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে ছড়াতে এখন থেকে প্রতিযোগিতা নেমে পড়েছে। কোম্পানি গুলো হলো পপি, জননী, পুথিনিলয়, অনুপম, ফুলকুড়ি, সংসোদ, আলফাতাহ, আল ইমপিহা, পাঞ্জেরী সহ আরো অনেক।
এদিকে ভোলা সদর, দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন, তজুমদ্দিন, লালমোহন, চরফ্যাশন ও মনপুরা উপজেলার মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসা গুলোর এখনও বার্ষিক পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। প্রতিযোগিতার যুগ বলে কথা কার নিষিদ্ধ গাইড আগে স্কুলে পৌছানো যায় সেই লক্ষে কাজ করছে কোম্পানির প্রতিনিধিরা। প্রতিদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধাপিয়ে বেড়াচ্ছে তারা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান সহ দায়িত্বশীলদের সাথে ইতিমধ্যে দরকষাকষিতে মেতে উঠছে তারা। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত দফারফা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যেই কোম্পানি যত দর হাকাতে পারছে তার গাইড বই পছন্দের তালিকা যাচ্ছে ওই প্রতিষ্ঠানে। প্রতিষ্ঠানের প্রধানের দায়িত্ব হচ্ছে যে গাইড বইদের সাথে দপারফা হবে তাদের গাইড বই কিনতে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করা।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বোরহানউদ্দিন উপজেলার একাধিক মেধাবী শিক্ষার্থীরা বলেন, সৃজনশীল পদ্ধতিতে তাদের কোন প্রকার গাইড বই’র প্রয়োজন হয় না। কিন্তু শিক্ষক মন্ডলি তাদেরকে পরামর্শ দেন এ গাইড বইটি পড়লে পরিক্ষা ভালো ফলাফল করতে পারবে। তাদের নির্দেশ রক্ষা করতে গিয়ে তারা গাইড বই বাধ্য হয়েই ক্রয় করতে হয়।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক বলেন, সরকার শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে যে সৃজনশীল পদ্ধতি চালু করেছে এতে শিক্ষার্থীদের কোন রকম গাইড বই’র প্রয়োজন নেই। তারা বই পড়লেই ঠিক মত উত্তর দিতে পারছে। সরকার তো নিষিদ্ধ গাইডের উপর কঠোর কিন্তু এদের দমন তো করতে পারছে না। নিষিদ্ধ কোম্পানির গাইড মালিকরা তারা কৌশলে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
এব্যাপরে জেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার প্রাণ গোপাল দে বলেন, সরকার শিক্ষার্থীদের জন্য সৃজনশীল পদ্ধতি চালু করে সকল প্রকার গাইড বইকে নিষিদ্ধি করেছেন। যে সকল শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের গাইড কিনার জন্য বাধ্য করছে আমারা তাদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যাবস্থা নিব। তিনি আরো বলেন , জেলা প্রশাসকের মাসিক মিটিংয়ে নির্বাহি ম্যাজেস্ট্রে দিয়ে লাইব্রেী গুলো অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে নিষিদ্ধ গাইড জব্দের বিষয়টি উপস্থাপন করবো।