শনিবার ● ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » জাতীয় » ঈদে ছুটিতে সড়ক র্দূঘনায় নিহত- ১৮
ঈদে ছুটিতে সড়ক র্দূঘনায় নিহত- ১৮
ঢাকা• গোপালগঞ্জসহ দেশের বিভিন্নস্থানে সড়ক র্দূঘনায় নিহত হয়েছে ১৮জন।গোপালগঞ্জকোরবানি ঈদের পরদিনগোপালগঞ্জ সদরে মাইক্রোবাসের সঙ্গে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে একই পরিবারের ছয় ও চালকের মৃত্যু হয়েছে; আহত হয়েছেন আরও চারজন।গাপালগঞ্জ সদর থানার ওসি সেলিম রেজা জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার শিবপুরে গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।হতাহতদের ১১ জনের সবাই অটোরিকশার যাত্রী ছিল বলে জানান তিনি।নিহতরা হলেন- গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার তেলিগাতি গ্রামের নাসু সিকদারের ছেলে খোকন শিকদার (৪৫), তার মা কাতেবুন্নেসা (৭০), স্ত্রী চায়না বেগম (৩৫), মেয়ে চাঁদনী (৯) এ্যানি (১৬), ভাতিজা সাকিব সিকদার (২৮) ও চালক স্বপন সরদার (৩৫)।খোকনের আরেক মেয়ে ইতিকে (৭) গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে এবং বাকিদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান ওসি।নিহত খোকনের ভাগ্নে সাব্বির বলেন, এক আত্মীয়র বিয়ে উপলক্ষে খোকন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সকালে খুলনা থেকে গোপালগঞ্জে আসেন। সেখান থেকে অটোরিকশায় করে তেলিগাতি গ্রামে যাওয়ার পথে তারা দুর্ঘটনায় পড়েন।ওসি সেলিম রেজা বলেন, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রাণালয়ের ঢাকাগামী একটি মাইক্রোবাসের সঙ্গে বিপরীত দিকে থেকে আসা অটোরিকশাটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই পাঁচজনের মৃত্যু হয়। গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তপন মজুমদার জানান, পাঁচজনকে মৃত অবস্থায় ও আহত দুইজনকে তার হাসপাতালে আনা হয়।আহতদের মধ্যে এক শিশু ও এক নারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বলে জানান তিনি। ধামরাইয়ে : শনিবার পথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫ জন।সকালে ধামরাই ইসলামপুর এলাকায় আরোহী নিয়ে সড়ক পার হবার সময় বাসের ধাক্কায় মারা গেছেন এক রিকশাচালক। এ সময় আহত হয়েছেন শিশুসহ আরো ২ জন আরোহী।অন্যদিকে দুপুরে ধামরাইয়ের কেলিয়ায় দুটি বাসের সংঘর্ষে ১ জন নারীসহ নিহত হয়েছেন ৪ জন। জানা যায়, ঢাকা থেকে ফরিদপুর যাওয়ার পথে বিকাশ পরিবহনের একটি গাড়ির সঙ্গে ঢাকাগামী বাসের সংঘর্ষ ৪ জন নিহত এবং ৫০ জনেরও বেশি যাত্রী আহত হয়েছেন। মৃতের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানা যায়। নিহতদের মধ্যে একজন বিমান বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ। তার বাড়ি আলফাডাঙ্গা থানার পবনবেগ গ্রামে। নিহত নারী ও অপর দুইজনের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি । মহাখালী: রাজধানীর মহাখালীতে ট্রেনের ধাক্কায় অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবক নিহত হয়েছেন।নিহতের বয়স আনুমানিক পঁয়ত্রিশ বছর। তার পরনে জিন্স ও পঞ্জাবি ছিল বলে কমলাপুর রেলওয়ের থানার অপারেশন অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম জানান।তিনি বলেন, শনিবার সকাল ১০টার দিকে কমলাপুর থেকে আসা একটি ট্রেন মহাখালী ক্রসিংয়র কাছে রেললাইনের উপর দিয়ে হাঁটতে থাকা ওই যুবককে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় বলে প্রত্যদর্শীরা জানিয়েছেন।এতে ঘটনাস্থলেই ওই যুবকের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে রেল পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠায় বলে রফিকুল ইসলাম জানান। এদিকে, ঈদের ছুটির মধ্যে ঢাকার হাতিরঝিলে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে, সেগুন বাগিচায় বাইকের ধাক্কায় নিহত হয়েছেন এক নারী। হাতিরঝিলের দুর্ঘটনায় নিহতের নাম মাসুম ইসলাম (২৫)। তার সঙ্গে থাকা সমাদ নামে আরেকজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, শুক্রবার রাত ১১টার দিকে মোটরসাইকেল চালিয়ে তেজগাঁও থেকে বনশ্রী বাসায় ফিরছিলেন মাসুম ও সামাদ। হাতিরঝিল পানির পাম্পের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাইক ছিটকে পড়লে চালক মাসুম ঘটনাস্থলেই নিহত হন।তিনি মাতাল অবস্থায় বাইক চালাচ্ছিলেন বলে পুলিশের ধারণা।এদিকে ঈদের দুপুরে সেগুন বাগিচায় এক মোটর সাইকেলের ধাক্কায় হেনা বেগম (৪৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়।শাহবাগ থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিকী জানান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।আহত হেনাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাতে তিনি মারা যান।হেনা বিভিন্ন বাসায় ঘুরে ঘুরে কোরবানির মাংস সংগ্রহ করছিলেন বলে ওসি জানান।চুয়াডাঙ্গা : চুয়াডাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত ও একজন আহত হয়েছেন। শনিবার সকাল ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ সড়কের চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সুবদিয়া নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় লোকজন ট্রাকটি আটক করতে পারলেও চালক ও তার সহযোগী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। প্রত্যক্ষদর্শীর উদ্ধৃতি দিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লিয়াকত হোসেন জানান, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার আরামডাঙ্গা গ্রামের মরহুম মকবুল হোসেনের ছেলে খাইরুল (৬৫) ও তার স্ত্রী আলেয়া খাতুন (৫৫) শনিবার সকালে চুয়াডাঙ্গা শহরে এসে কাজ শেষে শ্যালো মেশিন চালিত নসিমনে করে ঝিনাইদহের দিকে যাচ্ছিল। এ সময় সুবদিয়া নামক স্থানে ঝিনাইদহ থেকে চুয়াডাঙ্গার দিকে আসা দ্রুতগামী একটি ট্রাক (ঢাকা মেট্রো ট-১১-০৭৯৩) নসিমনটিকে ধাক্কা দেয়।এ সময় স্থানীয় লোকজন মারা�ক আহত অবস্থায় নসিমন চালক শফি (৩৫) এবং নসিমনের যাত্রী খাইরুল ও তার স্ত্রী আলেয়া খাতুনকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শিমুল নসিমনচালক শফিকে মৃত ঘোষণা করেন। শফি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার নাহদাহ ইউনিয়নের বলিয়ারপুর গ্রামের আজিজুলের ছেলে।আহত খাইরুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ঢাকা যাওয়ার পথে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঝিনাইদহ শহরের চুয়াডাঙ্গা বাসষ্ট্যান্ডের কাছে পৌঁছলে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। এ সময় তাকে স্থানীয় শামিমা ক্লিনিকে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সিদ্দিকুর রহমান তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘাতক ট্রাকটি আটক করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান ওসি। ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার বারইপাড়ায় বাস মোটর সাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষে জনি বিশ্বাস নামে মোটর সাইকেল চালক নিহত হয়েছে। বিকাল ৫টার দিকে ঝিনাইদহ- হাটফাজিলপুর সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। সে বারইপাড়া গ্রামের শামসুদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে।শৈলকুপা থানার ওসি হাশেম খান জানান, বাসটি হাটফাজিলপুর থেকে ঝিনাইদহে আসছিল। এ সময় শৈলকুপা মুখি মোটর সাইকেলের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে মোটর সাইকেল চুর্ণ বিচুর্ণ হয়ে যায়। মোটর সাইকেল চালক গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে পাঠায়। পথিমধ্যে সে মারা যায়। পুলিশ বাসটি আটক করেছে। বাস চালক পালিয়ে যায়। মুন্সীগঞ্জ: ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ছনবাড়িতে বাস চাপায় পথচারী নিহত হয়েছে। নিহত পথচারী উপজেলার দক্ষিণ পাইকসা গ্রামে সিরাজুল ইসলাম (৫৫)।শনিবার ডিএম পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। উত্তেজিত জনতা বাসটি ভাঙচুর করেছে। পুলিশ বাসটি আটক করেছে। তবে বাস চালক পালিয়ে গেছে।এলাকাবাসী জানায়, রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন সিরাজুল ইসলাম। এ সময় যাত্রীবাহী বাসটি দ্রুত গতিতে এসে তাকে চাপা দেয়। শীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীদুর রহমান জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই স্বজনরা লাশ বাড়ি নিয়ে গেছে। এই ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। নোয়াখালী: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় বাসচাপায় মিলয় (১০) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার মিরওয়ারিশপুর ইউনিয়নে চৌমুহনী-চাটখিল সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মিলয় মিরওয়ারিশপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ছাইদুল হকের ছেলে।স্থানীয়রা জানায়, মিলয় চৌমুহনী-চাটখিল সড়ক ধরে হাঁটছিলো। এ সময় লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা জননী সার্ভিসের একটি বাস মজুমদারহাট সংলগ্ন সালামের দোকান এলাকায় তাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। এদিকে, এ দুর্ঘটনার প্রতিবাদে সোয়া ৮টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে রাখে উত্তেজিত লোকজন। পরে, পুলিশ এসে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেয়।বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ফারুক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঘটনার পর বাসটি দ্রুত পালিয়ে যাওয়ায় আটক করা সম্ভব হয়নি।