শুক্রবার ● ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » জেলার খবর » শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ দখল করে পশুর হাট
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ দখল করে পশুর হাট
স্টাফ রিপোর্টার • ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ভোলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠকে পূজি করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা কোরবানির পশুর হাট বসিয়ে লাখ লাখ টাকা উত্তোলন করছেন বলে জানা গেছে। অভিযোগ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের নামে ছাত্রছাত্রীদের খেলার মাঠ নষ্ট করে পরিবেশ দূষিত করা হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। সরেজমিনে দেখা যায়, ভোলা পরানগঞ্জ হাই স্কুল মাঠে গুরুর হাট বসানো হয়েছে। বিদ্যালয়ের মাঠ, নাজিউর রহমান কলেজ, হালিমা খাতুন স্কুল এন্ড কলেজের সড়ক ও পরানাগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গরু ছাগলের হাট বসে। জানা যায়, ১২ সেপ্টেম্বর শনিবার পরানগঞ্জ হাইস্কুলে প্রকাশ্যে টেন্ডারের মাধ্যমে ওই মাঠে ঈদের কয়েক দিনের জন্য গরুছাগলের হাটের জন্য ইজারা দেয়া হয়। হাটের ইজারাদার প্রতিনিধি মোঃ ইউসুফ জানান, এক লক্ষ এক টাকায় সামসু গাজী হাটের ইজারা পেয়েছেন। তাই তারা ওই স্কুলের মাঠ ও পাশ্ববর্তী দুটি কলেজের রাস্তায় গরু ছাগলের হাট বসিয়েছেন। এ ব্যাপারে নাজিউর রহমান কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান জানান, কলেজ মাঠ বা রাস্তা ইজারা দেয়া হয়নি। বরং কলেজ মাঠ বা কলেজের পথে যাতে গরু ছাগল রাখা না হয় এ জন্য সংশ্লিষ্টদেরকে অনুরোধ করা হয়েছে। পাশাপাশি কলেজের দুই জন পিয়নকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে গরু ছাগল যাতে কলেজ ক্যাম্পাসে আনতে না পারে।
এ ব্যাপারে পরানগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, স্কুলের উন্নয়নের জন্য এক লাখ টাকা স্কুলের মাঠ ইজারা দেয়া হয়েছে। ইতোপূর্বেও ঈদের সময় স্কুলের মাঠ গরু ছাগলের হাট হিসেবে ইজারা দেয়া হত। স্কুলের মাঠ গরু ছাগলের হাট হিসেবে ইজারা দেয় যাবে না এ ধরণের কোন নিষেধাজ্ঞা আছে বলে তার জানা নেই। এদিকে ইলিশা ইউসি স্কুলের মাঠেও গরু ছাগলের হাট বসে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনির উদ্দিন জানান, স্কুলের মাঠ তারা ইজারা দেননা। তবে স্থানীয় প্রভাবশালী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ারদি মাস্টার ওই হাট ইজারা নিয়ে টোল তুলছেন। একই অবস্থা গুইংগার হাট হাইস্কুলের মঠেও। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল অদুদ জানান, তাদের স্কুল মাঠে সারা বছরই গরু ছাগলের হাট বসে। আগে ইজারাদাররা স্কুলের উন্নয়ন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার জন্য কিছু টাকা দিত এখন তাও দেননা। স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে তাদের করার কিছু নেই বলে তিনি অসহায়তা প্রকাশ করেন।
উত্তর দীঘলদি আব্দুল মান্নান মিয়া স্কুল মাঠে ঈদের সময় গরু ছাগলের হাট বসে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন মিয়া জানান, এলাকাবাসীর স্বার্থে সুদীর্ঘ দিন ধরে স্কুল মাঠে ঈদের সময় গরু ছাগলের হাট বসে। এতে সাময়িকভাবে পরিবেশের ক্ষতি হলেও বালিয়া মিয়া বাড়ির ঐতিহ্য হিসেবে কোন ইজারা দেয়া বা টোল তোলা হয় না। এদিকে ভোলা বাপ্তা নাসরিন স্কুলের খেলার মাঠে হাট বসে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, মাঠটি মূলত ইউনিয়ন পরিষদের। রেজুলেশনের মাধ্যমে স্কুলের শিক্ষার্থীদেরকে খেলাধুলার জন্য ব্যবহারের অনুমিত দেয়া হয়েছে। প্রতি বছর ঈদের সময় বাপ্তা তাফসির কমিটির আবেদনের প্রেক্ষিতে ইউনিয়ন পরিষদ গরু ছাগলের হাট বসার অনুমতি দিয়ে থাকে এবং হাট থেকে উত্তোলিত টাকা তাফসির কমিটিতে অনুদান হিসেবে দেয়া হয়। এ ব্যাপারে বাপ্তা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইয়ানুর রহমান বিপ্লব মোল্লাহ জানান, মাঠটি ছাত্রছাত্রীর খেলাধুলার জন্য দেয়া হয়েছে। তবে ঈদের সময় তাফসির কমিটির জন্য ইজারা দেয়া হয়।
ভোলার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোঃ মাহমুদুর রহমান বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ মূলত শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার জন্য। ওই মাঠে গরু ছাগলের হাট বসানো অবৈধ। ভোলার যেসকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গরু ছাগলের হাট বসানো হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে এবং ব্যবস্থা নেয়া হবে।