শুক্রবার ● ৩১ জুলাই ২০১৫
প্রথম পাতা » জাতীয় » ঘরে ফিরতে শুরু করেছে উপকূলের বাসিন্দারা
ঘরে ফিরতে শুরু করেছে উপকূলের বাসিন্দারা
বিশেষ প্রতিনিধি • ঘূর্নিঝর কোমেন দুর্বল হয়ে স্থল ভাগ অতিক্রম করায় ভোলায় থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে, ঝড়ো হাওয়া বইছে উপকূলজুড়ে। যথেষ্ট আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় আতঙ্কে নির্ঘূম রাত কাটিয়েছেন উপকূলের হাজারো মানুষজন। ঘূর্নিঝড় আয়লা, সিডরের মত অসংখ্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হেনেছে এই উপকূলে। তবুও উপকূলের হাজারো বাসিন্দাদের পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র নির্মিত হয়নি এখনও। উপকূলের বিশাল এ জনগোষ্ঠীর জন্য আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে মাত্র ৬৭৫টি এবং উচু মাটির কেল্লা রয়েছে ৫২টি। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। ৭নং বিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নং বিপদ সংকেত হওয়ায় আশ্রয় কেন্দ্র থেকে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। এখনও আতঙ্ক কাটেনি উপকূল বাসীর। উপকূলের নিন্মাঞ্চল থেকে জোয়ারের পানি এখনও সরে যায়নি। সাগরগামী মাছ ধরার নৌকা, ট্রলারকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। অভ্যন্তরীন নৌ রুটে ফেরি ও ছোট নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে স্থলভাগ অতিক্রমের ফলে ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল অতিক্রম করে এখন অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েছে। গত কাল ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে গাছ পড়ে ভোলার লালমোহনে এক নারী নিহত হয়েছে। অন্যদিকে চরফ্যাশন ও মনপুরার বিচ্ছিন্ন চরগুলোতে অর্ধশত ঘরবাড়ি বিধ্বস্থ হয়েছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোন ক্ষয় ক্ষতির খবর পাওয়া যায় নি। দুর্যোগ মোকাবেলার প্রস্তুত রয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির কর্মী, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, জেলা-উপজেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা। সাতটি উপজেলায় খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।
এদিকে বাংলাদেশের উপকূলবর্তী ৪ জেলায় ঘূর্ণিঝড় কোমেন-এর প্রভাবে চার জেলায় অন্তত চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল অতিক্রম করে এখন অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েছে।
কোমেন শুক্রবার সকাল ৬টায় সন্দ্বীপের কাছ দিয়ে চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করে। এ কারণে সমুদ্র বন্দরগুলো এবং উপকূলীয় অঞ্চলে বিপদ সংকেত নামিয়ে সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর দিকে সরে গিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে দুর্বল হয়ে স্থল নিম্নচাপ হিসেবে নোয়াখালী ও তৎসংলগ্ন স্থলভাগ এলাকায় অবস্থান করছে। আবহাওয়া অধিদফতর এক বুলেটিনে এই তথ্য জানিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় কোমেন-এর প্রভাবে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারি বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর জানায়। এর আগে ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল অতিক্রম করার পর আরও পশ্চিম উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠী, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা ও এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোও ৩ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।