

মঙ্গলবার ● ১১ জুলাই ২০২৩
প্রথম পাতা » জেলার খবর » ভোলা কাঁচা বাজারের প্রবেশমুখে দোকান নির্মাণ, ব্যবসায়ী-ক্রেতাদের ক্ষোভ!
ভোলা কাঁচা বাজারের প্রবেশমুখে দোকান নির্মাণ, ব্যবসায়ী-ক্রেতাদের ক্ষোভ!
মোঃ বিল্লাল হোসেন: ভোলার নতুন বাজার থেকে কাঁচাবাজারের প্রবেশপথ দখল করে দোকান নির্মাণ করছে ভোলা পৌরসভা। এতে একদিকে কাঁচাবাজার প্রবেশ পথ সরু হয়ে ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের বাজারে প্রবেশ-বাহিরে ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে নদী পথে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা কাঁচা মালবাহী ট্রলার থেকে কাঁচামাল ডেলিভারি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়াও কাঁচা বাজার সংলগ্ন মার্কেটগুলোতে অগ্নিনির্বাকের জন্য একমাত্র উপায় এই খাল থেকে পানি নেওয়া কাজে ফায়ার সার্ভিসের কষ্টদায়ক হয়ে পরবে। সব মিলিয়ে পথ দখলের এহেন কর্মকান্ডে ভোগান্তির শিকার ব্যবসায়ী-ক্রেতা ও সচেতন মহলের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
কাঁচা বাজার ব্যবসায়ীরা জানায়, কাঁচাবাজারের পাশে থাকা খালের উপরের সিঁড়িরপুল (থাকথাক ব্রীজটি) দিয়ে খুচরা ও পাইকারি পণ্য ক্রয়ের ক্রেতারা আসা যাওয়া করে। কিন্তু বাজারের প্রবেশ পথে দোকান ঘর উত্তোলন করায় ক্রেতাদের আসা-যাওয়া পথ প্রায় আটকিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে ক্রেতা ও ব্যাবসায়ীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তাছাড়া মাঝে মাঝে এই ব্রীজের পাশের স্পট দিয়ে খালে থাকা ট্রলার থেকে কাঁচামাল আড়তে উঠানো হতো। কিন্তু সেটা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
কাঁচা বাজার ক্রয় করতে আসা আফরোজা, আঃ শহিদসহ কয়েকজন জানান, নতুন বাজার হয়ে ব্রীজ পার হওয়ার পর ব্রীজসম্মুখ দুই পাশে কাঁচাবাজারের প্রবেশপথ ৮-১০ ফুট করে প্রস্ত হতে পারে। ৮-১০ ফুট প্রস্থের পথের মধ্যে এক পাশে একটি দোকান তোলা হচ্ছে। অপর পাশের পথে অরেকটি দোকান তোলা হয়ে গেছে। ক্রেতা-ব্যবসায়ীদের আসা-যাওয়ার ভোগান্তি ছাড়াই বিষয়টি দেখতেও চরম দৃষ্টিকটু। এটা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারেনা।
পথচারী, ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা যে দোকানটি তোলা হয়েছে সেটা ভেঙে এবং যেটা তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে সেটার কার্যক্রম বন্ধ করে প্রবেশপথ পূর্বের ন্যায় প্রস্থ রাখার জন্য পৌর মেয়ের কাছে তারা অনুরোধ জানিয়েছেন।
কাঁচাবাজার খালের জল খাজনা ইজারাদারের দায়িত্বে থাকা মোঃ রুবেল হোসেন জানায়, বেশির ভাগ কাঁচামালের খাদ্য ভোলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সড়ক পথে আসে। আর কিছু কাঁচামাল বিভিন্ন জেলা থেকে নদী পথে ট্রলার যোগে আসে। কাঁচাবাজার সংলগ্ন খালের উল্লেখিত দুটি স্পট দিয়ে এসব কাঁচামাল ট্রলার থেকে খালাস করে কাঁচাবাজার আড়তে যায়। দুটি স্পটের মধ্যে চকবাজার সড়ক ব্রীজটির (হাতিরঝিল ব্রীজ নামে পরিচিত) পার্শ্বের স্পট দিয়ে বেশির ভাগ ট্রলার তাদের কাঁচামাল খালাস করে, এর মধ্যে কিছু কিছু ট্রলার থাকথাক ব্রীজের (উল্লেখিত প্রবেশ পথ) পার্শ্বের স্পট দিয়ে কাঁচাবাজার আড়তে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পৌর কর্মকর্তা জানান, পৌরসভার অধীনে কোন নির্মাণ কাজের প্রয়োজন হলে প্রথমে প্রকৌশলী দ্বারা কাজের পরিমান ও পরিমাপ অনুযায়ী মালামাল ও দর ইষ্টিমিট করতে হয়। ইস্টিমিট অনুমোদিত হলে টেন্ডার বিজ্ঞপ্তির প্রক্রিয়ায় ঠিকাদার নিয়োগ করে নির্মান কাজ সম্পাদন করতে হয়।
ভোলা পৌরসভা কার্যালয়ের সহকারী বাজার পরিদর্শক মোঃ সজল বলেন, কাঁচাবাজারের দুটি দোকান ঘর পৌরসভা থেকে করা হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিসের ভোলা উপ-সহকারী পরিচালক মোঃ লিটন আহমেদ জানান, বিভিন্ন বানিজ্য মার্কেট বা দোকান করতে হলে পানি রিজার্ভের ব্যবস্থা রাখতে হয় এবং ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র নিতে হয়, অনেক ভবনগুলোই ফায়ার সার্ভিসের অনুমোদন ছাড়া তারা ভবন বা দোকান করে থাকে কিন্তু অগ্নিনির্বাপক পানি রিজার্ভের কোন ব্যবস্থা রাখেন না।
ভোলা শহরের পাশে খাল রয়েছে আমাদের এই খালের উপরেই নির্ভরশীল হতে হয়, সেই খালের সামনে যদি দোকানপাট দিয়ে আটকে রাখা হয় বা আবদ্ধ করে ফেলে তাহলে বাজারে যদি বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটে আমাদের পানি নিতে যদি সমস্যা হয় তাহলে আগুন ভয়াবহ হবে। সেইক্ষেত্রে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেড়ে যাবে।
এজন্য বিভিন্ন বাজার এবং মার্কেটগুলো আমরা পরিদর্শন কর থাকি, পরিদর্শন করার পরে আমরা যদি দেখি কোন দোকান বা মার্কেটে অগ্নিনির্বাপকের জন্য পানি রিজার্ভের ব্যবস্থা না থাকে তাহলে যাতে পানি রিজার্ভার ব্যাবস্থা থাকে আমরা সেই পরামর্শ দিয়ে থাকি। তিনি আরো বলেন, কাঁচা বাজারে প্রবেশ মূখে দোকান উত্তোলনের বিষয়টি আমার জানা নেই, আমরা বিষয়টি পরিদর্শন করে দেখব এবং বাজার সংশ্লিষ্ট যারা আছে তাদের সাথে আমরা আলাপ করব যদি প্রবেশপথ আটকিয়ে যায় তাহলে তাদেরকে অনুরোধ করব যাতে এখানে মার্কেট বা দোকান না করা হয়।
-এফএইচ