শনিবার ● ৯ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » জাতীয় » ভোলায় ঘূর্ণিঝড় আতংকে আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছে মানুষ,১০ নম্বর সংকেত উপেক্ষা করে জেলেদের মাছ শিকার
ভোলায় ঘূর্ণিঝড় আতংকে আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছে মানুষ,১০ নম্বর সংকেত উপেক্ষা করে জেলেদের মাছ শিকার
বিশেষ প্রতিনিধি: ঘূর্ণিঝড় বুববুল উপকূলীয় এলকায় আবস্থানের কারণে ভোলাসহ উপকূলের ৯ জেলায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। জেলার সাতটি উপজেলার বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এরই মধ্যে সবাইকে আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। শুক্রবার মধ্যরাত এবং শনিবার ভোর থেকে ভোলার বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে উপকূলবর্তী দ্বীপচরের দেড় লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনা হয়েছে। মূল ভূখ- থেকে বিচ্ছিন্ন ঝূঁকিপূর্ণ দুর্গম এলাকার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে। এরমধ্যে জেলা সদরে ১০ হাজার, চরফ্যাশনে ৩৫ হাজার, মনপুরা ও তজুমদ্দিনে ৪৫ হাজার এবং লালমোহনে ১৫ হাজার বাসিন্দা রয়েছে। মেঘনা ও তেঁতুলিয়া দুর্গ চর কুকরি-মুকরি, চর পাতিলা, ঢালচর, চর নিজাম, রামদাসপুর, কলাতলীর চর, চর জহিরউদ্দিন, চর নাসরিন, চর মোজাম্মেলসহ অন্তত ২০ চরের মানুষ এখন নিরাপদে রয়েছেন। বাকিদের নিরাপদে আনার কাজ করছে জেলা প্রশাসন।
এদিকে বুলবুলের প্রভাবে জেলায় ১০ নম্বর বিদপ সংকেত জারি করার পর থেকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সমগ্র উপকূলে। রেডক্রিসেন্ট ও সিপিপিসহ সেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। জেলার বিচ্ছিন্ন মনপুরাসহ উপকূলের জেলেরা ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর মহাবিপদ ১০ নম্বর সংকেত উপেক্ষা করে মেঘনায় মাছ শিকারে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এতে যে কোন সময় বড় ধরণের দূর্ঘটনা ঘটে প্রাণহানির আশংকা রয়েছে।
সরেজমিনে ভোর ৬ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত মেঘনা পাড়ের বিভিন্ন ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, মেঘনায় হাজার হাজার জেলে নৌকা মাছ শিকারে ব্যস্ত। মৎস্য ঘাটের আড়তগুলো রয়েছে খোলা।
ভোলা আবহাওয়া অফিসের অবজারভার মাহাবুব রহমান বলেন,ঝড়টি এখন দ্বীপরের কাছাকাছি রয়েছে। ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠেছে ঝড়টি। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯.৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ঝড়টি বর্তমানে পায়রা বন্দর থেকে ৩১৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। তিনি বলেন, এখন ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সকাল থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। সন্ধ্যা নাগাদ ঝড়টি আঘাত হানতে পারে।
ভোলার জেলা প্রশাসক মাসুদ আলম ছিদ্দিক বলেন, দুপুর ২টা পর্যন্ত দেড় লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে আনা হয়েছে, বাকিদের আনার কাজ চলছে। যারা আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছে তাদের খাবার সরবরাহ হচ্ছে। ঝড় মোকাবেলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আমাদের ১৩ হাজার সেচ্ছাসেবী মাঠে রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন থেকে ১০ লাখ টাকা, ২০০ মেট্রিক টন চাল ও ২ হাজার প্যাকেজ শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জেলার ৬৬৮টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা রাখা হয়েছে, এছাড়াও ৯২টি মেডিকেলা টিম গঠন করা হয়েছে। খোলা হয়েছে ৭টি কন্ট্রোল রুম। সিপিপি ও রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ১৩ হাজার কর্মী মাঠে রয়েছে।
-এইচএমএন/এএম/এসইউ/এফএইচ