

বুধবার ● ৩০ অক্টোবর ২০১৯
প্রথম পাতা » জাতীয় » ভোলায় ইলিশ ধরার অপেক্ষায় দেড় লক্ষাধিক জেলে
ভোলায় ইলিশ ধরার অপেক্ষায় দেড় লক্ষাধিক জেলে
বিশেষ প্রতিনিধি: ভোলার মেঘনায় ও তেতুঁলিয়ায় ইলিশ ধরার অপেক্ষার প্রহর গুণছেন প্রায় দেড় লক্ষাধিক জেলে। টানা ২২ দিনের অপেক্ষা শেষ বৃস্পতিবার মধ্যে রাঁত ১২ টায় শেষ হচ্ছে ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা। দীর্ঘ ২২ দিনের অলস সময় শেষ করে ইলিশ ধরার প্রস্তুত নিচ্ছে ভোলার সাত উপজেলার জেলেরা। এমনটাই দেখা গেলো ভোলার জেলে পল্লীগুলোতে।
জানা গেছে, অবরধের টানা ২২ দিন পুর্ণোদ্যমে অবোরধ শেষে মাছ ধরবেন এমন আশাই জাল বুনছেন ও ট্রলার মেরামতের কাজ ও জাল বুনে অলস সময় পার করছেন। অবরোধে নেই জেলেদের পুণবাসনের ব্যবস্থা।
মা ইলিশ রক্ষায় সরকার ইলিশের প্রজনন মৌসুম চিহ্নিত করে ৯ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিন ইলিশের অভয়াশ্রমগুলোতে মাছ শিকার, মাছ আহরণ, বাজারজাতকরণ, বিক্রি ও পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে। জেলেদের একমাত্র পেশা মাছ ধরতে না পারায় জেলার সাত উপজেলার প্রায় একলক্ষ ২০ সহ¯্রাধিক জেলে বেকার হয়ে পড়ছে। বর্তমানে নদীতে যেতে না পারায় বেঁড়ীবাঁধ, রাস্তার পাড় কিংবা নদীর কিনারায় বসে জাল বুনে অলস সময় পার করছেন তারা। নদীতে মাছ ধরতে না পেরে বহু জেলে পরিবারে বর্তমানে বাজছে অভাবের করুন সুর।
মাছ ধরার এই নিষিদ্ধ সময়ে অনেকে অতি উৎসাহ দেখিয়ে নদীতে মাছ ধরতে গেলেও বেশীরভাগ জেলেই সরকারের সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা জানিয়ে নদীতে মাছ ধরতে যায়নি। যারা অবরোধের সময়ে সরকারের সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মাছ ধরতে যায় তাদের অনেকেই ভ্রাম্যমান আদালতের কবলে পড়ে জাল, ট্রলার, মাছ হারায়িছেন। আবার অনেকের জেল ও জরিমানা দুটোই হচ্ছে। তবে অসাধু এই জেলেদের বেশীরভাগই প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে মাছ ধরছে। এজন্য যারা মাছ ধরতে যায়না তাদের মধ্যে ক্ষোভের কমতি নেই।
জেলেরা বলছেন, আমরা সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে নদীতে মাছ ধরতে যাইনা। কিন্তু এই অবরোধের সময় জেলেদের জন্য সরকাররের পক্ষ থেকে যে পুর্ণবাসনের ব্যাবস্থা করা হয়েছে তা অনেকে পাননি। আমরা আয় রোজকার না করলে ছেলে-মেয়েদের কিভাবে খাওয়াবো। বসে বসে আমরা আবার দায় দেনার ফাঁদে পড়ছি। আবার কোন জেলে বলছেন, কে মাছ ধরলো আর কে ধরলোনা আমরা তা দেখিনা। সরকার একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন মাছ না ধরার জন্য আমরা সরকারের এই সিদ্ধান্ত মেনে নদীতে যাচ্ছিনা। বর্তমান ২২ দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকলেও সরকারের পক্ষ থেকে আসা সহযোগীতা না পাওয়ায় অভাবী বহু জেলে পরিবারে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলেরা ব্যাস্ত সময় পর করছেন জাল বুনে ও ট্রলার মেরামতের কাজে।
ভোলা ইলিশা ঘাটের জেলে আজাদ মাঝি জানান, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আজ রাত ১২টর সময়, তাই আমরা নৌকা ও জাল নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছি। অভিযান চলাকালীন সময়ে আমাদের সংসার, পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটিয়েছি। এখন নদীতে নামলে হয়তো আল্লাহর রহমতে সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবো বলে আশা প্রকাশ করেন।
মনপুরার চরযতিন গ্রামের ইব্রাহীম মাঝি, মোছলেউদ্দিন মাঝি, মাইনুউদ্দিন মাঝি বলেন, অবরোধের সময় সরকার যদি জেলেদের একটি কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থা করত তাহলে জেলে পরিবারগুলোর ছেলেমেয়েরা একটু ভালো থাকত। আমরা আর দায় দেনা করতে হতোনা। অনেক জেলে খুব গরিব। কাজ না করলে সংসার চালানো খুব কষ্ট হয়।
এব্যাপারে ভোলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান ভোলার সংবাদ ডটকমকে বলেন, ২২ দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকলেও সরকারি ভাবে জেলেদের পুর্নবাসনের জন্য ২০ কেজি করে চালের যে অর্থ বরাদ্দ রয়েছে তা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে তা বিতরণ করা হয়েছে। যে সকল ইউনিয়নের জেলেরা এখনো চাল পায়নি আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তা বিতরণ করা হবে।
-এইচএমএন/এফএইচ