বৃহস্পতিবার ● ২৬ অক্টোবর ২০১৭
প্রথম পাতা » জাতীয় » ভোটে সরকারের চাপ আসলে প্রত্যাখ্যান করব: সিইসি
ভোটে সরকারের চাপ আসলে প্রত্যাখ্যান করব: সিইসি
ডেস্ক: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের কোনো চাপ আসেনি। সরকারের কোনো মন্ত্রী, এমপি বা কারো কাছ থেকে আমাদের কাছে চাপ আসেনি। আগামীতে কখনো আসলে আমরা তা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করব। ‘সংলাপ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে’ বৃহস্পতিবার নির্বাচনের সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ফোনে কমিশন চাপে থাকে, আগামী নির্বাচনে সরকার কমিশনকে চাপে রাখবে নাকি কমিশন সরকারকে চাপে রাখবে, আর সরকার থেকে কোনো চাপ আসলে কমিশনের ভূমিকা কী থাকবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি এসব কথা বলেন।
বিগত অভিজ্ঞতা বলে, নির্বাচনের সময় মাঠপর্যায়ে প্রশাসনে কমিশনের নিয়ন্ত্রণ থাকে না এবার থাকবে কি না জানতে চাইলে সিইসি বলেন, মাঠপর্যায়ে কমিশনের নিয়ন্ত্রণ থাকে না এর সাথে আমি একমত নই। নিয়ন্ত্রণ সব সময় থাকে। সব দলকে নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে মাঠ প্রশাসনের পুরো নিয়ন্ত্রণ থাকবে ইসির কাছে। সংবিধানের বাইরে যাওয়ার সুযোগও নেই। সংবিধান সংশোধনের জন্য সরকারকে চাপ বা বাধ্য করারও সুযোগ নেই। রাজনৈতিক বিষয়ে কোনো সমঝোতারও উদ্যোগ নেবে না ইসি।
তিনি জানান, চার শতাধিক সুপারিশসহ অভিন্ন অনেক প্রস্তাব নিয়ে সংকলনের কাজ শুরু হচ্ছে। সাংবিধানিক, আইন প্রণয়ন ও ইসির করণীয়- এ তিন ভাগে এসব প্রস্তাবকে বাছাই করা হচ্ছে। নভেম্বরের মধ্যে সংলাপে পাওয়া সুপারিশ সংকলন করে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে বই আকারে প্রকাশ করা সম্ভব হবে আশা করেন কে এম নূরুল হুদা।
সিইসি পরবর্তী করণীয় নিয়ে ব্যাখ্যায় জানান, সংসদ ভেঙে দেওয়া, সহায়ক সরকার গঠনের বিষয়গুলো সাংবিধানিক; সীমানা পুনঃনির্ধারণ ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের বিষয়গুলো আইন প্রণয়ন এবং সেনা মোতায়েন, আইন প্রয়োগ ও নির্ভুল ভোটার তালিকার মতো বিষয়গুলো ইসির এখতিয়ারের মধ্যে রয়েছে। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যেগুলো আমাদের করার আছে তা আমরা বাস্তবায়ন করব। আইন প্রণয়নের বিষয়ে সংসদের কাছে পাঠাব ও সাংবিধানিক বিষয়গুলো নিয়ে প্রস্তাব সরকারের কাছে পেশ করব।
দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনকালীন মাঠ প্রশাসনের সব ক্ষমতা সংবিধান অনুসারে ইসির অধীনে থাকবে বলে উল্লেখ করেন সিইসি। ইসির স্বল্প সংখ্যক নিজস্ব কর্মকর্তা দিয়ে ভোট আয়োজন সম্ভব না হওয়ায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ১০-১২ লাখ লোকবলকে মাঠে থাকতে হয়। এদের লালন-পালন করা কমিশনের পক্ষে সম্ভব না, প্রয়োজনও নেই।
সুষ্ঠু ভোটের জন্য আইনের নতুন করেও পরিবর্তনের দরকার নেই; বিদ্যমান আইন প্রয়োগই যথেষ্ট। তা করতে পারলেই ভোটে শৃঙ্খলা থাকবে। ভোটে দায়িত্ব অবহেলা বা আইনের ব্যত্যয় ঘটলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন সিইসি।
সাংবিধানিক বিষয়ে সংশোধনী আনা ইসির পক্ষে সম্ভব নয় বলে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘সংবিধান ও আইনের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। বিদ্যমান ব্যবস্থায় নির্বাচন করতে হবে। সাংবিধানিক বিষয় আমাদের পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।’
ইসির এখতিয়ারভুক্ত বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করে যথায়ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। তবে এখতিয়ার বহির্ভূত বিষয়ে চাপ সৃষ্টির সুযোগ নেই বলে উল্লেখ করেন সিইসি।
১৬ জুলাই একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কর্মপরিকল্পনা মেনে অক্টোবরের মধ্যে ৪০টি রাজনৈতিক দল, গণমাধ্যমসহ সব অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ শেষ করতে পাড়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন সিইসি।
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
পিডি/এইচএমএন