সোমবার ● ২১ আগস্ট ২০১৭
প্রথম পাতা » জাতীয় » ভোলা-ইলিশা মহা সড়কের আট কিলোর একি দশা
ভোলা-ইলিশা মহা সড়কের আট কিলোর একি দশা
বিশেষ প্রতিনিধি: ভোলা সদর উপজেলার পরানগঞ্জ থেকে ইলিশা পর্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটার সড়ক বেহাল হয়ে পড়েছে। বরিশাল-ভোলা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের এ অংশে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তেও সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায়ই মালপত্র বোঝাই ট্রাক দুর্ঘটনায় পড়ছে। সড়কের গর্তে গাড়ির চাকা আটকে ও অ্যাকসিলারেটর ভেঙে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের ভোলা কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে এ সড়কের পরানগঞ্জ থেকে সাড়ে ছয় কিলোমিটার সংস্কার করা হয়েছিল। গত বছর থেকেই সড়কে ছোট ছোট গর্তের সৃষ্টি হয়। চলতি বর্ষা মৌসূমে পানি জমে সড়ক বেহাল হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পরানগঞ্জ থেকে পূর্ব ইলিশা পর্যন্ত বড় বড় গর্তে পানি জমে আছে। সড়কের মাঝে উঁচু। দুই পাশ ঢালু। দুর্ঘটনা এড়াতে যানবাহনগুলো সড়কের মাঝ দিয়ে চলাচল করছে। একই দিক থেকে কোনো যানবাহন অতিক্রম করতে পারছে না। বিপরীত দিক থেকে দুটি যানবাহন অতিক্রম করার সময়ও সমস্যা দেখা দিচ্ছে। একটি যান সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকলেই সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।
সাবেক পূর্ব ইলিশা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোঃ সিরাজের বাড়ির সামনে থেকে ইলিশা ইসলামিয়া মডেল কলেজ পর্যন্ত আটকা পড়েছে কয়েক শত মালবোঝাই ট্রাক। যানবাহন ছাড়াই দুপুরে ইলিশা ঘাট থেকে একটি ফেরি ছেড়ে যাচ্ছে।
ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক আবু আলম হাওলাদার বলেন, চট্টগ্রামে যাওয়ার জন্য ১৬ জেলার সহজ যোগাযোগের পথ এটি। ভোলার ইলিশার আট কিলোমিটার সড়ক জুড়ে বড় বড় গর্ত। সড়কের স্থায়িত্ব নেই। দীর্ঘদিন সংস্কার না করার ফলে এমন হয়েছে। এখন নামকাওয়াস্তে গর্তে ইট ঢালছে সওজ।
খুলনা থেকে চট্টগ্রামগামী ট্রাকের চালক সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সহজ মনে কইরে আইছিলাম। এহোন আইসে ফাইশে গেছি। ভয় করতিছে রাস্তা পার হতি।’
চালক মিলন মিয়া, সাত্তার হোসেন, আব্দুর রশিদ মিয়াসহ ৩০ জন চালক ভাঙা সড়কের কারণে তাঁদের দুর্ভোগের অবস্থা তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন, খুলনা থেকে চট্টগ্রাম যেতে এ পথে ২শ’ ৪০ কিলোমিটার দূরত্ব কম। তাই তাঁরা এ পথ ব্যবহার করেন। দিন দিন এ পথের ওপর চাপ বাড়ছে। কিন্তু টেকসই সংস্কার হচ্ছে না। এতে ক্রমেই দুর্ভোগ বাড়ছে।
ফেরির যাত্রী পরিবহন ইজারাদার আক্তার হোসেন বলেন, সড়কের দুরবস্থার কারণে যশোর, খুলনা ও বরিশাল থেকে আসা মালবোঝাই ট্রাকগুলো বেশি দুর্ভোগে পড়ছে। রাস্তা খারাপ হওয়ায় এ পথে যাত্রীর সংখ্যাও কমে গেছে।
ভোলা বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি সাঈদ আলী বলেন, সড়কটি বেহাল হওয়ার কারণে আশপাশের মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে আছে। কাদা পানি ছিটকে নাকাল হয় ছোট যানবাহনের যাত্রী ও পথচারীরা। ঈদের আগে সড়কটি দ্রুত সংস্কার না করলে ভোগান্তি আরও বাড়বে।
এ ব্যাপারে সওজের ভোলা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী মোঃ নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ। এটি বরিশাল-ভোলা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অংশ। ১২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। তবে ওই প্রকল্প কবে অনুমোদন হবে জানি না। জরুরি ভিত্তিতে সড়কের গর্তে ইট, ইটের খোয়া ও বালু ফেলে কিছু সংস্কার করা হচ্ছে।’
-এমএসএইচ/এফএইচ