মঙ্গলবার ● ৮ আগস্ট ২০১৭
প্রথম পাতা » জেলার খবর » লালমোহনে জমি দখলের অপচেষ্টায় প্রতিপক্ষকে মামলা দিয়ে জেলে প্রেরণ
লালমোহনে জমি দখলের অপচেষ্টায় প্রতিপক্ষকে মামলা দিয়ে জেলে প্রেরণ
স্টাফ রিপোর্টার: ভোলার লালমোহনে জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করে জমি দখল করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের বেপারী বাড়ীর মোজাম্মেল গাজীর সাথে। তিনি এখন ভোলা জেলা কারাগারে আটক রয়েছেন।
সরজমিনে ঘটনার বিবরণে জানা যায়, লালমোহন পৌরসভার ডাক বাংলার পাশের নূর মোহাম্মদ বেপারী নিঃসন্তান হওয়ায় মোজাম্মেল হক গাজীকে শিশুকাল থেকে পালক পুত্র হিসেবে লালন পালন করেন। সেই অনুযায়ী ১৯৯১ সালে নুর মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক গাজীকে ৫৬ খতিয়ানের ৩১৫-৩১৬ ও ৫৪৮ দাগে ১ একর ২২ শতাংশ জমি তাকে হেবা দলিল মূল্যে মালিক রাখিয়া দখলদার নিযুক্ত করেন। এবং ৭৩১,৭৩৩ হোল্ডিং নম্বর’র অনুকুলে ঘর উত্তলোন করে পরিবার পরিজন সহ বসবাস করে বিদ্যুৎ বিল সহ সরকারী টেক্স পরিশোধ করে আসছেন। ২০১৪ ইং সনে হরিগঞ্জ এলাকার মফিজুল হকের স্ত্রী রাশিদা বেগম নিঃসত্ববান ব্যাক্তির কাছ থেকে ২৩ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। সরজমিনে সে তার ক্রয়কৃত জমির দখল না পাইয়া ৫৬ খতিয়ানের রেকর্ডকৃত এলাহী বক্সের ছেলে নুরুল হক গংদের বিরুদ্ধে ২ মামলা দায়ের করেন। যাহার নং জিআর ২৩৬/১৫ ও ১২৯/১৬ যাহা বিচারাধীন আছে।
অপর দিকে নুরুল হক রাশিদা ও তার স্বামী মফিজের বিরুদ্ধে বন্টন মামলা করে যাহার নং দেওয়ানী ৬২/১৪। উক্ত মামলার বিবাদী ছিলেন রাশিদা, মফিজ ও মোজাম্মেল হক গাজী। এই ঘটনায় রাশিদা ক্ষিপ্ত হয়ে জমি দখল নিতে মরিয়া হয়ে নুরুল হক ব্যাপারী ও তার দুই পুত্র তপু ও অপুকে আসামী করে লালমোহন থানায় একটি মিথ্যা জিআর মামলা দায়ের করে, যাহার নং ৮৬/১৬। ওই মামলায় তপু ও অপুকে পুলিশ দিয়ে আটক করে জেল হাজতে পাঠিয়ে তার পিতা নুরুল হককে শারীরিক ও মানসীক ভাবে লাঞ্চিত করে একই ভাবে পুলিশ দিয়ে তাদের বাড়ী থেকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করে।
এবার রাশিদার নজর পরে মোজাম্মেল হক গাজীর সম্পত্তির উপর। মোজাম্মেল গাজীকে উৎখাত করার জন্য নানান ভাবে ফন্দি করে। তিনি বিষটিকে রাজনৈতিক ও প্রশাসনকে ব্যবহার করে তাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন সহ কারনে অকারনে ঝগড়া বিবাদ করার চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়ে মোজাম্মেল হক গাজীকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র করতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৩ মে মঙ্গলবার লালমোহন থানা পুলিশ দিয়ে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আটক করার উদ্দ্যেশ্য জানতে চাওয়া হলে থানা পুলিশ জানায় রাশিদার সাথে জমি জমার বিরোধ রয়েছে।
স্থানীয় রমাগঞ্জ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুল ইসলামের মধ্যেস্থতায় বিষয়টি মিমাংশা করার জন্য উভয় পক্ষের কাগজপত্র জমা দেওয়ার দিন ধার্য্য করে মোজাম্মেল গাজীকে ছেড়ে দেয়া হয়। নির্ধারিত তারিখের মধ্যেই মোজাম্মেল গাজী তার সকল কাগজপত্র জমা দেয়। কিন্তু রাশিদা কোন কাগজ পত্র জমা দিতে ব্যার্থ হওয়ায় বিষয়টির কোন সুরাহা হয়নি। হঠাৎ গত ৩ আগস্ট রোজ বৃহস্পতিবার রাত ১২ টার দিকে কোন প্রশাসনিক নির্দেশনা ছাড়াই মোজম্মেল গাজীকে লালমোহন থানা পুলিশ আটক করে নিয়ে আসে। পরের দিন শুক্রবার রাশিদার দায়ের করা একটি মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার করে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে, যাহার নং জিআর ০২/১৭। এই মামলায় মোজাম্মেল গাজীকে রাশিদার ভাড়াটিয়া হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ কাজপত্রে মোজাম্মেল গাজী ১৯৯১ সন থেকে মালিক থাকিয়া ভোগ দখলে নিযুক্ত রহিয়াছেন।
রাশিদার সাথে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করার চেষ্টা করলেও তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়য়ে লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীরের সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, মোজাম্মেল গাজী জাল দলিল পত্র করার অপরাধে তাকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
-এইচএমএন/এফএইচ