বুধবার ● ১২ জুলাই ২০১৭
প্রথম পাতা » জাতীয় » মেঘনার ভাঙনে হুমকির মুখে দৌলতখান বাজার , বিলীন কয়েকশত ঘর বাড়ি
মেঘনার ভাঙনে হুমকির মুখে দৌলতখান বাজার , বিলীন কয়েকশত ঘর বাড়ি
কাজী জামাল: ভোলার দৌলতখানে গত কয়েকদিন ধরে মেঘনার নদী ভাঙন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে দৌলতখান পৌরসভার তিনটি ওয়ার্ড ও সৈয়দপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওর্য়াড এখন প্রায় বিলীন হওয়ার পথে। একই ইউনিয়নের ১,২,৩,৪ ও ৫ নং ওয়ার্ড এখন নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এছাড়া দৌলতখান বাজার রক্ষা বাধেরও কিছু অংশ এখন নদী গর্ভে বিরন হচ্ছে। এসব এলাকার মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে এখন এদিক সেদিক ঘুরো ঘুরি করছে। জরুরী ভিত্তিতে নদী ভাঙন রোধের ব্যবস্থা না নিলে দৌলতখান বাজার নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, দৌলতখান পৌর শহরের থানা বাউন্ডারি থেকে মাত্র দুইশত গজ দুরে মেঘনা নদী সংলগ্ন ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের সাথেই বেড়ীবাঁধ। এই বেড়ীবাঁধটি ভেঙে গেলেই বহু পুরনো এই দৌলতখান বাজারকে আর রক্ষা করা যাবেনা।
ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষগুলো কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, আমরা এখন কি করর, কোথায় যাব। স্থানীয় এমপির পক্ষ থেকে বার বার আমাদেরকে আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। যে, দৌলতখানকে রক্ষার জন্য ৫৫১ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে টেন্ডার হবে। কিন্তু অদৃশ্য কারণে এ কাজের গতি থমকে আছে। ফলে দিনের পর দিন নদী ভাঙন বেড়েই চলেছে। এভাবে চলতে থাকলে প্রাচীন এই বাজারটি একদিন নদী গর্ভে হারিয়ে যাবে।
তারা আরো জানান, মাত্র কয়েকদিন হলো ৫ তলা বিশিষ্ট একটি নতুন থানা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। যার ব্যয় ধরা হয়েছে সাত কোটি পঞ্চাশ লক্ষ টাকা। উদ্বোধনের আগেই হয়তো বা মেঘনার গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে সেই থানা ভবনটি।
২০০৩ সালে সাবেক এমপি হাফিজ ইব্রাহীম ৩২ কোটি টাকা ব্যয় করে প্রায় এক কিলোমিটারের অধিক এলাকায় জিও ব্যাগ ও ব্লক ফালানোর ফলে নদী ভাঙন বন্ধ ছিল। এতে এলাকাবাসির কয়েক কোটি টাকার সম্পদ রক্ষা পেয়েছে। এখন নদী ভাঙন অনেক বেড়ে গিয়ে সেই ব্লকগুলো নদীর গর্ভে প্রায় বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় ১ নং ওর্য়াডের সাবেক কমিশনার জাকির হোসেন বাবুল জানান, নদী ভাঙন রোধে সরকার ব্যবস্থা না নেওয়ায় আমরা নিজ উদ্দ্যেগে প্রায় কয়েক লক্ষ টাকার বালি বস্তা ভরে নদীতে ফেলেছি। সেই বস্তাগুলো নদীতে তলিয়ে গেছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী কাজী কামাল জানান, আমরা অনেকটা আতংকের মধ্যে আছি, যে কোন সময় বেড়ীবাঁধ ভেঙে কয়েকশত দোকান- পাট ও ঘর বাড়ি নদীতে তলিয়ে যেতে পারে। নদী ভাঙন রোধে জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে বেড়ীবাঁধ ভেঙে দৌলতখানের কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদ হারিয়ে যাবে। ধন দৌলতে ছিল দৌলতখানের নাম, হয়তো বা মানচিত্র থেকে চিরতরে দৌলতখানের নাম মুছে যাবে। সরকারের পক্ষ থেকে জনগণ শুধু আশ্বাসই পেয়েছে। নদী ভাঙন রোধে কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। ভোলা জেলার মধ্যে সব চেয়ে বড় ও সরু এ বাজারটি প্রায় দেড় কিলোমিটার।
এব্যাপারে ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল আক্তার বলেন, আমাদের কাছে নতুন কোন বরাদ্দ নেই, জরুরী ভিত্তিতে কাজ করার জন্য এগারো কোটি টাকার প্রজেক্ট পাঠানো হয়েছে, মন্ত্রী মোহদয় সুপারিশ করলে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে পারে।
-এফএইচ