বৃহস্পতিবার ● ২২ জুন ২০১৭
প্রথম পাতা » জাতীয় » মনপুরায় আবারও ভাঙা বেড়ীবাধঁ দিয়ে পানি ঢুকে ৮ গ্রামের ৩০ সহস্রাধীক মানুষ পানি বন্দি
মনপুরায় আবারও ভাঙা বেড়ীবাধঁ দিয়ে পানি ঢুকে ৮ গ্রামের ৩০ সহস্রাধীক মানুষ পানি বন্দি
মো.ছালাহউদ্দিন, মনপুরা প্রতিনিধি: ভোলার দ্বীপ উপজেলা মনপুরার মূল ভুখন্ডের ১নং মনপুরা ইউনিয়নের চৌমহনী বাজার সংলগ্ন পশ্চিম পাশের ভাঙা বেড়ীবাঁধ ও হাজির হাট ইউনিয়নের পূর্ব সোনার চরের ভাঙ্গা বেড়ীবাধঁ দিয়ে আমবশ্যার জোতে পুনরায় পানি ঢুকে ৩০ সহস্রাধীক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ছেন। বৃহস্পতিবার পুনরায় জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে ১নং মনপুরা ইউনিয়নের কুলাগাজী তালুক, কাউয়ারটেক চৌমহনী, কলাতলীচর, হাজির হাট ইউনিয়নের সোনারচর, চরযতিন, চরজ্ঞান, দাসের হাট ও উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের চরনিজামসহ ৮ টি প্লাবিত হয়েছে। ৫ শতাধিক পুকুরের মাছ জোয়ারের পানির সাথে ভেসে গেছে। এছাড়াও মূল ভুখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন কলাতলীচর, ঢালচর, চরনিজাম চারপাশে কোন বেড়ীবাধঁ না থাকায় আমবশ্যার জোয়ারে অস্বভাবিক জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এসব চরাঞ্চলে প্লাবিত হয়ে পানি ওঠা নামা করে। এসব প্লাবিত এলাকার মানুষের বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। পানি বন্দি মানুষের দুর্ভোগের কথা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করা হয়েছে। সরজমিনে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিসেস শেলিনা আকতার চৌধুরী পরিদর্শন করেন।
বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে গিয়ে দেখা গেছে, এসব প্লাবিত এলাকার মানষের বসত ভিটা পানির নিচে ডুবে যাচ্ছে। পাকা রাস্তার উপর দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে গ্রামের পর গ্রাম ডুবে যাচ্ছে। উঠানে ময়লা আবর্জনা পানি জমে রয়েছে। মসজিদদে মুসল্লীরা নামাজ পড়তে পারছেনা। দুর থেকে মহিলারা খাবার পানি সংগ্রহের জন্য রাস্তার পাশে থাকা টিউবওয়েল থেকে জোয়ারের মধ্যে পানি সংগ্রহ করছেন। বসত ভিটার উঠান ডুবে থাকার কারনে মানুষ চলাচল করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। বসতঘর ডুবে থাকার কারনে রান্না বান্না করতে পারছেনা। সামনে রোজার ঈদ আনন্দ এখন ম্লান হতে চলছে। প্রতিদিন ভাঙ্গা ভেড়িবাধঁ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে উঠানামা করছে। ঘর থেকে কোথাও বের হতে পারছেননা সাধারণ মানুষ। চারিদিকে জোয়ারের পানি থৈ থৈ করছে। সাধারণ মানুষ খুব আতংকে আছেন। গবাধি পশুগুলো রাস্তার উপর ও উঠানের উচু জায়গায় দাড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
দক্ষিণ চরযতিন জামে মসজিদের মোয়াজ্জেম মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, জোয়ারে প্রতিদিন আমাদের মসজিদ ডুবে যায়। আমরা খুব কষ্ট করে নামাজ পড়ছি। মুসল্লীরা জোয়ারের পানি দিয়ে আসতে খুব কষ্ট হচ্ছে। ভাটি হলে জোয়ারের পানি নেমে যায়।
পূর্ব সোনারচরের আকলিমা বেগম জানান, জোয়ারের পানিতে পুকুর ডুবে যাওয়ায় আমরা টিউবওয়েল পানি দিয়ে রান্নাবান্না করছি। অনেক দুর থেকে আমাদের কষ্ট করে জোয়ারের পানির মদ্যদিয়ে খাবার পানি সংগ্রহ করতে হয়। আমরা খুব কষ্টের মধ্যে আছি। ছেলে মেয়েদের নিয়ে খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছেন।
সাধারণ মানুষের অভিযোগ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলায় এসব ভাঙ্গা বেড়ীবাঁধ নির্মান না করায় সাধারণ মানুষ চরম দূর্ভোগে পড়ছেন।
এব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারি প্রকৌশলী আবুল কালাম বলেন, ভাঙ্গা বেড়ীবাধঁ দিয়ে ভিতরে পানি প্রবেশ করে মানুষ পানি বন্দি রয়েছেন । আমরা দ্রুত ভাঙা বেড়ীবাধঁ নির্মাণের কাজ শুরু করে দিয়েছি। আশা করছি তা দ্রুত সম্পন্ন করা হবে। চরাঞ্চলগুলোতে বেড়ীবাঁধ নেই। আমরা এবিষয়গুলো উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সোহাগ হাওলাদার বলেন, ভাঙ্গা বেড়ীবাধঁ দিয়ে পানি ঢুকে পানি বন্ধী হয়ে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। আমরা পানিবন্ধি মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে বেকু মেশিন দিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছি। আশা করছি দ্রুক কাজ সম্পন্ন হবে।
-এফএইচ