সোমবার ● ৫ জুন ২০১৭
প্রথম পাতা » জাতীয় » লালমোহনের এমভি নাসরিন-১ লঞ্চডুবি: ক্ষতিগ্রস্তদের ১৭ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ
লালমোহনের এমভি নাসরিন-১ লঞ্চডুবি: ক্ষতিগ্রস্তদের ১৭ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ
ডেস্ক: চাঁদপুরের মেঘনা নদীর মোহনায় এমভি নাসরিন-১ লঞ্চ ডুবিতে ক্ষতিগ্রস্থদের পরিবারকে ১৭ কোটি ১১ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া সংক্রান্ত নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে এবং আহতদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে ক্ষতিপুরণ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ এ রায় দেন। আদালতে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী ড. কামাল হোসেনসহ আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী ও সুব্রত চৌধুরী। লঞ্চ মালিক কর্র্তৃপক্ষের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী আব্দুল বাসেত মজুমদার। সঙ্গে ছিলেন রাফসান আলভী ও ইশরাত হাসান। রায়ের পর সুব্রত চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, হাইকোর্ট নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে এবং আহত অবস্থায় বেঁচে থাকা প্রত্যেককে এক লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলেছেন। লঞ্চ মালিক কর্তৃপক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসান সাংবাদিকদের জানান, এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা আপিল করবেন।
চাঁদপুরের মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মোহনায় ২০০৩ সালের ৮ই জুলাই এমভি নাসরিন-১ লঞ্চ ডুবে যায়। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় ১১০ জন নিহত ও ১৯৯ জন নিখোঁজ হন। ওই নৌ দুর্ঘটনায় লঞ্চটির মালিকও নিহত হন। পরে একইবছর চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক লঞ্চ ডুবিতে ক্ষতিগ্রস্থ ৪শ জনের তালিকা প্রকাশ করেন। সেই তালিকা অনুযায়ী নৌ-দূর্যোগ ট্রাস্টি বোর্ড নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়। যার পরিমাণ ৭০ লাখ টাকার উপরে। নিহত ব্যক্তিদের দেওয়া ক্ষতিপূরণ অপ্রতুল দাবি করে ২০০৪ সালে ঢাকার তৃতীয় জেলা জজ আদালতে নিহতদের পরিবারের পক্ষে ক্ষতিপূরণ মামলা করে ব্লাস্ট। মামলায় ২৮ কোটি ৯৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়। ২০১২ সালে এ মামলা ঢাকার ৭ম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে পাঠানো হয়। ২০১৬ সালের ২রা ফেব্রুয়ারি এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে ওই লঞ্চডুবিতে ক্ষতিগ্রস্থদের ৬০ দিনের মধ্যে ১৭ কোটি ১১ লাখ টাকা দিতে বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে বিবাদীরা জেরা ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সুযোগ চেয়ে মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন জানান। শুনানি শেষে আদালত এ আবেদন খারিজ করে দেয়। এ আদেশের বিরুদ্ধে বাংলদেশ অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)সহ বিবাদীপক্ষ ২০১৬ সালের ২৪শে অক্টোবর হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করে। পরদিন শুনানি শেষে নিম্ন আদালতের রায় কেন বাতিল ও রদ করা হবে না- এ মর্মে রুল জারি করে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। এ রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষ হয় গত ২৪শে মে। গতকাল এ রুল খারিজ করে রায় দেওয়া হলো।