রবিবার ● ৫ মার্চ ২০১৭
প্রথম পাতা » জেলার খবর » মনপুরা ইউপি চেয়ারম্যানের মুক্তির দাবিতে পুলিশ প্রহরায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ-সমাবেশ
মনপুরা ইউপি চেয়ারম্যানের মুক্তির দাবিতে পুলিশ প্রহরায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ-সমাবেশ
বিশেষ প্রতিনিধি: ভোলার মনপুরা উপজেলার মনপুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আলাউদ্দিনের মুক্তির দাবিতে রবিবার সকালে ভোলা প্রেসক্লাবের সামনে পুলিশ পাহারায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে। আলাউদ্দিনের নির্বাচনী এলাকার হাজার হাজার নারী-পুরুষ এ কর্মসূচি পালন করে। সকাল ১১ টার দিকে ভোলা প্রেসক্লাবের সামনে বিশাল এ মানববন্ধন শেষে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তৃতা করেন মনপুরা ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসনের ইউপি মেম্বার ফরিদা বেগম, আব্দুল গনি, রত্মা, আমিন খলিফা, সেলিম হাজারী, শেফালী রানী মজুমদার প্রমূখ। বক্তারা অবিলম্বে মনপুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলাউদ্দিনের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করেন। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। মানববন্ধন চলাকালে ভোলা সদর মডেল থানার ওসি মীর খায়রুল কবিরের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্কবস্থায় ছিলেন। এ সময় স্থানীয়দের মাঝে টান টান উত্তেজনাও বিরাজ করছিল। আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কায় পুলিশ সতর্ক ছিলো বলে জানান ওসি।
সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ভোলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে একই দাবি জানানো হয়। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মনপুরা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শ্রী দিপক চন্দ্র দাস মাষ্টার। তিনি অভিযোগ করে বলেন, কলাতলী এলাকার শঙ্কর বিজয় দাস, ননী গোপাল দাস ও ভবেশ চন্দ্র মজুমদারসহ কতিপয় ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির ব্যক্তিরা একত্রিত হয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। ওই সংঘবদ্ধ চক্রটি কলাতলীর চরে নিরীহ ভূমিহীনদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে। তারা জমি বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলে বিগত ২০১৪ সাল থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের কাছ থেকে শতাংশ প্রতি ২০ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন জমি বরাদ্দ দিতে পারেনি। তাদের ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেননা। শ্রী দিপক চন্দ্র দাস মাষ্টার বলেন, ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসীদের অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে স্থানীয় বাবু বিধু ভূষন দাস ২০১৬ সালের ২৩ আগষ্ট শঙ্কর বিজয় দাস, ননী গোপাল দাস ও ভবেশ চন্দ্র মজুমদারের বিরুদ্ধে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। যার সিআর মামলা নম্বর-২১৫/২০১৬। আদালত ওই মামলা আমলে নিয়ে প্রধান আসামী শঙ্কর বিজয় দাসের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এবং ২ ও ৩ নম্বর আসামীর ননী গোপাল দাস ও ভবেশ চন্দ্র মজুমদারের বিরুদ্ধে নোটিশের আদেশ প্রদান করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই চক্রটি আরো বেপোরোয়া হয়ে ওঠেন। তারা বাবু বিধু ভূষন দাসকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়। এ অবস্থায় বিধু ভূষন দাস স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিনকে জানালে তিনি উভয় পক্ষকে মিমাংসার প্রস্তাব দেন। এতে ওই চক্রটি আলউদ্দিন চেয়ারম্যানের ওপর ক্ষিপ্ত হন এবং তাকে দেখে নেওয়ারও হুমকি দেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন দিপক চন্দ্র দাস। সংবাদ সম্মেলনে আবুল কালাম, জুয়েল চন্দ্র দাস, পূর্ণিমা রানী দাস, পলাশ, সালাউদ্দিন মেম্বার ও ফখরুল পাটওয়ারী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২৮ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার ভোলা শহরের স্টেডিয়াম সড়ক থেকে মনপুরা ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে ভোলার আদালতে প্রেরণ করে। পুলিশ সুপার মোঃ মোকতার হোসেন জানান, ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে মেঘনায় জলদস্যুতা, চাঁদাবাজি, অপহরণ, সংখ্যালঘুদের জমি দখল ও পুলিশ এসল্টসহ বহু অভিযোগ রয়েছে।
-এসসি/এএইচটি/এফএইচ