শুক্রবার ● ৩০ ডিসেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » জেলার খবর » তজুমদ্দিন সাব-রেজিস্ট্রি অফিস দুর্ণীতির আখড়া, আমলা ফির নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়
তজুমদ্দিন সাব-রেজিস্ট্রি অফিস দুর্ণীতির আখড়া, আমলা ফির নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়
বিশেষ প্রতিনিধি: হয়রানির অপর নাম তজুমদ্দিন উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিস। কিছু অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীরা ঘুষের আখড়ায় পরিণত করছে অফিসটিকে। দলিল রেজিস্ট্রি করার নামে সহজ সরল মানুষের কাছ থেকে দলিল লেখকের মাধ্যমে হাজার হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করছেন তারা। আমালা ফির নামে দলিল প্রতি আদায় করছে অতিরিক্ত ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা। দলিল লেখক, সাবরেজিস্ট্রার, পেশকার, অফিস সহকারী, অফিস সহায়ক, ও চিহ্নিত দালাল চক্র সিন্ডিকেট তৈরি করার মাধ্যমে দুর্ণীতি ও অনিয়মের ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া জমির প্রকৃত বাজার মূল্য কম দেখানোর কারণে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আয় থেকে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, তজুমদ্দিন উপজেলায় সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের অধিনে ১৬ জন দলিল লেখক (পাটওয়ারি) রয়েছে। সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ভুয়া খতিয়ান, নামজারী, সইমোহর সংযুক্ত করা সহ আমলা ফির নামে দলিল প্রতি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা করে আদায় করার অভিযোগ রয়েছে দলিল লেখক সহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। জমির প্রকৃত বাজার মূল্য কম দেখিয়ে ফাঁকি দেয়া হচ্ছে সরকারের লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আয়। সরকারী মুল্য তালিকা অনুযায়ী খরচ নেয়ার নিয়ম শতকরা হারে স্টাম্প বাবত ৩ টাকা, রেজিঃ ফি ২ টাকা, স্থানীয় কর ৩ টাকা, উৎস কর ১ টাকা এবং ভ্যাট বাবত প্রতি দলিলে ৩৪০ টাকা। অথচ নিয়ম না থাকলেও আমলা ফি বাবত গুরুত্ব অনুযায়ী দলিল প্রতি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা যোগ করে প্রতি লাখে খরচ নেয়া হয় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। ইতোপুর্বে এসব বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পায়নি ভূক্তভোগীরা।
মঙ্গলবারে চাচড়া থেকে দলিল করতে আসা ইসমাইল জানান, ২০ শতাংশ জমির দলিল করতে পাটওয়ারীকে লাখে ১৬ হাজার টাকা হিসাব করে দিতে হয়েছে। শম্ভুপুর থেকে আসা মোঃ ইউনুস ও হালিমা বেগম লাখে ১৫ হাজার টাকা করে পাটওয়ারীর হাতে দেয়ার কথা জানান। এছাড়াও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল করতে আসা জরিনা খাতুন, মেহেদী হাসান, মোতাহার, আব্বাস, নাসিরসহ অনেকে জানান, পাটওয়ারী (দলিল লেখক) দের দাবীকৃত টাকা পরিশোধ না করলে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে দলিল সম্পাদন না করে হয়রানির শিকার হতে হয়। অপর একটি সুত্র জানায় কোন পাটওয়ারী অতিরিক্ত টাকা ছাড়া দলিল সম্পাদন করতে গেলে লাইসেন্স বাতিল করার সতর্কতা দেয়া আছে। এদিকে দলিল সম্পাদনের জন্য ফে অর্ডারের মাধ্যমে ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার বিধান থাকলেও দলিল লেখকদের মাধ্যমে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সরাসরি টাকা লেনদেন করার অভিযোগ রয়েছে। আর ঘুষের টাকা পরিশোধ হলেই রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে জমির বাজার দর কম দেখিয়ে কাজ দ্রুত সমাধা করা হয়।
সাবরেজিস্ট্রার মোঃ রাফায়েল ফাতেমীর কাছে এব্যাপারে জানতে চাইলে বলেন, আমলা ফি নামে কিছু নেই। অফিসে নগদ লেনদেন করার কোন সুযোগ নাই, বাহিরে কারা কিভাবে টাকা নেয় তা জানা নেই।
তজুমদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জালালউদ্দিন বলেন, এ ধরনের অভিযোগের ব্যাপারে জানা নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
-এমআরএস/এফএইচ