রবিবার ● ২৭ নভেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » জেলার খবর » বোরহানউদ্দিন সদর হাসপাতালের কার্যক্রম চলছে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সহকারী দিয়ে!
বোরহানউদ্দিন সদর হাসপাতালের কার্যক্রম চলছে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সহকারী দিয়ে!
আব্দুল মালেক : ভোলার বোরহানউদ্দিনের ৫০ শর্য্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি এখন নিজেই রোগী হয়ে পড়েছে। চিকিৎসক সঙ্কটের স্বাস্থ্য সেবা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন সাধারণ রোগীরা। এ হাসপাতালে ২১ জন ডাক্তারের কর্মস্থল থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে হাসপাতালটির কার্যক্রম চলছে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সহকারী কর্মকর্তা দিয়ে। প্রতিদিন গ্রাম-গঞ্জ থেকে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ রোগীদের বিড়ম্ভনার শেষ নেই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ডাক্তারের দেখা মিলছে না রোগীদের ভাগ্যে।
জানা যায়, বোরহানউদ্দিন ৫০ শর্য্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ২১ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও কাগজ পত্রে কর্মরত রয়েছে মাত্র ৪ জন। এর মধ্যে ২ জন ডাক্তার ২০১৪ সালে যোগদানের পর থেকেই অদ্যবধি অনুপস্থিত রয়েছেন। বাকী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলী আহসান অসুস্থ্য ও ইমারজেন্সী মেডিকেল অফিসার সহ দুজনে ছুটিতে থাকায় হাসপাতালে ডাক্তার শূন্য হয়ে পরেছে। উপজেলা সদর হাসপাতালে বর্তমানে কোন ডাক্তার না থাকায় সাচড়া ও কুতুবা দুই ইউনিয়ন ক্লিনিক থেকে দুই জন সহকারী মেডিকেল অফিসার এনে কোন রকম খুড়ে খুড়ে চলছে হাসপাতালের কর্যক্রম। এদিকে সাচড়া ইউনিয়ন কমপ্লেক্সের ডা.সফিকুল ইসলাম দেওয়ান ও কুতুবা ইউনিয়নের ডা. তৈয়বুর রহমান উপজেলার সদর হাসপাতালে আসার পর থেকে চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হচ্ছে ওই দুইউনিয়নের জনগণ।
এছাড়া উপজেলার সদর হাসপাতালে সঠিক তদারকির দায়িত্বরত কেউ না থাকায় যে যার ইচ্ছেমত চলছে। রোগীদের বিছানা, রুমে ময়লা আর্বজনা অবস্থায় দেখা যায় বেশির ভাগ সময়ই। আর বাথরুম গুলোর ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পরেছে। বর্তমানে হাসপাতালে রোগীর সাথে সুস্থ্য মানুষ আসলেও পরিবেশে কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে অভিযোগ করেন রোগীদের সাথে আসা স্বজনরা। দীর্ঘ দিন যাবত এ চিত্র দেখা গেলেও এর সমাধানে এগিয়ে আসছে না কেউ।
হাসপাতালে ভর্তি থাকা পক্ষিয়া ইউনিয়নের সালেহা বেগম বলেন, গত ৩ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি। ভর্তির পর থেকে কোন ডাক্তার দেখতে আসেনি। সকাল বিকাল ও রাতে নার্স এসে শুধু কয়েক পদের ওষুধ দিয়ে যান। হাসপাতালের এখন যে অবস্থা ভাবছি বাড়ি গিয়ে থাকাটাই ভালো হবে।
আরেক রোগী রাজিয়া বেগম বলেন, গত দুই দিন হলো এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। অদ্যবধি ডাক্তারের দেখা পাই নি। সামনের ফার্মেসীর লোকজন দিয়ে কোন রকম চিকিৎসা নিচ্ছি। ময়লা আবর্জনার গন্ধে থাকতে পারছি না।
রোগীর স্বজন দুলাল বলেন, ঠা-া জনিত কারলে ১৮ মাসের শিশু দিহানকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। কিন্তু কোন ডাক্তার আমার সন্তানকে দেখছে না। মাঝে মধ্যে নার্সরা একটু এসে খোঁজ খবর নেয়। তাই তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার সিদ্বান্ত নিয়েছেন বলে জানান।
এব্যাপারে বোরহানউদ্দিন হাসপাতালে ভারপ্রাপ্ত (আরএমও) চাচড়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সহকারী ডা.সফিকুল ইসলাম দেওয়ান বলেন, হাসপাতালে আমাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এসকল দায়িত্ব পালন করতে পারছি না। আমিও এ দায়িত্ব থেকে সরে যেতে চাই।
এব্যাপারে ভোলা সিভিল সার্জন রথীন্দ্রনাথ মজুমদার জানান, চিকিৎসক সঙ্কটের কারণে এ সমস্যা হচ্ছে। ছুটিতে থাকা ডাক্তাদের কর্মস্থলে যোগদেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে এ হাসপাতালের চিত্র পরিবর্তন করা হবে বলেও তিনি আসস্ত করেন ।
এফএইচ