বুধবার ● ৯ নভেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » জেলার খবর » প্রতারক ও ভুয়া সাংবাদিক তামিম থেকে সাবধান!
প্রতারক ও ভুয়া সাংবাদিক তামিম থেকে সাবধান!
এস ইউ সোহেব/ মাহবুব আলম : নাম তামিম। বাড়ি লালমোহন উপজেলার চরভুতা ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডে। সে স্থানীয় বাসিন্দা বশিরের ছেলে। কখনো আর টিভির স্টাফ রিপোর্টার। কখনো একুশে টিভির সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ঘুরে বেড়ান তিনি। আবার কখনো প্রধান মন্ত্রীর হাত থেকে সেরা পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিক পরিচয় দেন। কখনো হয়ে যান প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার আত্মীয়। আবার কখনো হয়ে যান লালমোহন উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিনের নাতি। তার উদ্দেশ্য ও আদর্শ একটাই। প্রতিদিন ডিএসএলআর ক্যামরা নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে মিথ্যা অভিযোগ তুলে শিক্ষকদের সাথে প্রতারণা করে চাঁদাবাজী করা অথবা কাউকে ব্লাক মেইল করে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেয়া।
অনুন্ধানে জানা গেছে, ভোলার বোরহানউদ্দিন, তজুমদ্দিন, লালমোহন ও চরফ্যাশন উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কাছ থেকে বিভিন্ন কৌশলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় তামিম। তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার সকালে চরফ্যাশন উপজেলার মধ্য আলীগাঁও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সকাল ১০ টার দিকে হাতে একটি ডিএসএলআর ক্যামেরা নিয়ে হাজির হন তিনি। স্কুলে ঢুকেই বিভিন্ন ক্লাস রুমের ছবি তুলেন এবং শিক্ষকদের হেনস্তা ও ভয় ভীতি দেখাতে থাকেন। খবর পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তার পরিচয় জানতে চাইলে সে লালমোহন উপজেলা চেয়ারম্যানের নাতি পরিচয় দিয়ে পকেট থেকে বিডি টোয়েন্টিফোর ডট কম নামের একটি অনলাইন পত্রিকার কার্ড দেখান। এক পর্যায়ে স্থানীয় সাংবাদিক ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে কথার কাটাকাটি হলে তামিম লেজ গুটিয়ে পালিয়ে যায়।
গত ২ নভেম্বর কাল ৯ টায় লালমোহন উপজেলার ৭২ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান তামিম। তখন শিক্ষকরা ছাত্রছাত্রীদের পিটি করাচ্ছিলেন।এই ফাঁকে তামিম ফাঁকা ক্লাস রুমের ছবি তুলেন। শিক্ষকরা নানা অনিয়ম করছেন বলে ভয় ভীতি দেখিয়ে প্রধান শিক্ষক শামিম ও সহকারী শিক্ষিকা রুবিনার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন বলে অভিযোগ করেন শিক্ষকরা। একই দিন হানা দেন চর মোল্লাজী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখানে সুবিধা করতে না পেরে চলে আসেন তামিম।
প্রতিদিন সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তামিম জেলার বিভিন্ন স্পটে/শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে নিজের পরিচয় না দিয়ে অন্য সাংবাদিকের নাম ভাঙ্গিয়ে অপকর্ম করে বেড়ায় বলে অভিযোগ রয়েছে। তামিম লালমোহন উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিনে নাতি পরিচয় দিয়ে দাপটের সাথে এসকল অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষকরা। এ ব্যাপারে লালমোহন প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিন আলম মাকসুদ বলেন ছেলেটি ভুয়া সাংবাদিক। তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে এমনটাই জানালেন তিনি। লালমোহন প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুস সাত্তার বলেন, এই নামে লালমোহনে কোন সাংবাদিক নেই। তবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে সে চাঁদাবাজী করছে এমন অভিযোগ এসেছে। কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অথবা কোথাও চাঁদাবাজী করতে গেলে তামিমকে পুলিশে সোর্পদ করার জন্য অনরোধ করেন তিনি।
এব্যাপারে অভিযুক্ত তামিম নিজেকে একজন বড় সাংবাদিক হিসেবে জাহির করেন। তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। লালমোহন উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন বলেন, সে আমার নাতি তাকে আমি ভালো করে চিনিও না। সে যদি কোন অন্যায় করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ। এই প্রতারক ভুয়া সাংবাদিক তামিম থেকে সাবধান। ওকে এখনই প্রতিহত করতে না পারলে অদুর ভবিষ্যতে আরও বেশী অপকর্ম করবে এমনটাই শিক্ষক ও সাংবাদিকসহ সর্বমহলে গুঞ্জন ছড়াচ্ছে।
এফএইচ