শনিবার ● ২২ অক্টোবর ২০১৬
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » উৎসবের আমেজে যোগ্য নেতৃত্বের অপেক্ষায় অাওয়ামীলীগ
উৎসবের আমেজে যোগ্য নেতৃত্বের অপেক্ষায় অাওয়ামীলীগ
ডেস্ক: আওয়ামী লীগের ২০ তম জাতীয় ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ঘিরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বইছে। উৎসবমুখর পরিবেশের মাধ্যমেই যোগ্য নেতৃত্বের সন্ধানে রোববার কাউন্সিল অধিবেশনে অংশ নেবেন কাউন্সিলররা।
শনিবার সকাল ১০ টা ৫ মিনিটে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে ২০তম সম্মেলনের উদ্বোধন করেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। এর আগে সকাল সাতটা থেকেই নেতাকর্মীদের ঢল নামে সম্মেলন স্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে এ ভিড় আরও তীব্র হতে থাকে। তবে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে সম্মেলন স্থলে ঢুকলেও নেতাকর্মীদের মধ্যে আনন্দের কমতি ছিল না।
সম্মেলন স্থলে শেখ হাসিনা আসার পূর্বেই লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। তাদের অপেক্ষা তখন শেখ হাসিনা কখন আসবেন। আর সম্মেলন স্থলে এসে শেখ হাসিনা সম্মেলনের উদ্বোধন করতেই সুশৃংখল হয়ে ওঠে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। জাতীয় সঙ্গীতের বাজানোর সাথে সাথে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। পরে পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলন উদ্বোধনের পর আগুন সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানাভাবে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নীরবতা পালন করা হয়। এর আগে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
এদিকে কড়া নিরাপত্তার কারণে সম্মেলনস্থলে ঢুকতে না পারলেও উৎসব আমেজে ভাটা পড়েনি সাধারণ কর্মীদের। হাজার হাজার কর্মী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশেপাশে শাহবাগ মোড়, টিএসসি, দোয়েল চত্বর ও হাইকোর্ট মাজার মোড় সংলগ্ন এলাকায় ভিড় করেন।
অন্যদিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মূল প্যান্ডেলে স্থান সংকুলান না হওয়ায় উদ্যানের অন্যান্য স্থানে জেলাভিত্তিক নেতাকর্মীরা খণ্ডখণ্ডভাবে জটলা করে অবস্থান নেন। দলের নেতৃত্ব নিয়েই এসময় তাদের বেশি আলোচনা করতে দেখা যায়। তাদের প্রত্যাশা, অতীতের মতো এবারও যোগ্য নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে সম্মেলনের মাধ্যমে।
আওয়ামী লীগের ২০তম ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা দিয়ে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, দেশে একটা মানুষও গৃহহারা থাকবে না।
বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে রোববারের সম্মেলনের সংক্ষিপ্ত কর্মসূচিও জানিয়ে দেন।
তিনি সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্য পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুর্বণজয়ন্তি পালন করব। আমাদের করণীয় রূপকল্প ইতোমধ্যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ২০০৮ ও ১৪ সালের নির্বাচনী ইস্তেহারেও সেই রূপকল্প আছে। আমাদের সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে কেমন দেখতে চাই সেটা আমি আমার বক্তব্যে বলেছি। এটা আমি লিখে আপনাদের কাছে পৌঁছে দেব।
তিনি বলেন, দেশের একটি মানুষও গৃহহারা থাকবে না। প্রত্যেকটি মানুষের মৌলক অধিকার নিশ্চিত করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা আপনাদের এলাকায় গৃহহীন, দুস্থ, অসহায় মানুষের তালিকা তৈরি করবেন। আমরা তাদের সহায়তা করব, বিনে পয়সায় আবাসনের ব্যবস্থা করে দেব।
আওয়ামী লীগ সরকার জনকল্যাণের জন্য কাজ করে। তাই এটা আপনাদের দায়িত্ব। আমরা সেনসাস করি। কিন্তু আওয়ামী লীগ একটি বড় দল। এই দায়িত্বটা আপনাদের দিলাম। আপনাদের জনগণের কল্যাণের জন্য কাজ করতে হবে।
শেখ হাসিনা উপস্থিত নেতাকর্মীদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আপনারা তিন মিনিট করে বক্তব্য দেওয়ার চেষ্টা করবেন। কারণ, আমাদের হাতে অনেক কাজ। গঠনতন্ত্র সাংশোধন করতে হবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য বোর্ড নির্বাচিত করব। এরপর আমাদের এই অনুষ্ঠান শেষে দলের মূল কাউন্সিল হবে। কালকের অধিবেশনের বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হবে। নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। নিয়মানুযায়ী কাউন্সিলরদের মধ্য থেকে একজনকে সভাপতি মনোনয়নের পর বাকিরা সমর্থন দেবেন। এভাবে সব পর্যায়ে নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে।
রোববার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সম্মেলন শুরু হবে সকাল ১০টায়। সেখানে শুধুমাত্র কাউন্সিলররা উপস্থিত থাকবেন বলে জানান শেখ হাসিনা।