সোমবার ● ৮ আগস্ট ২০১৬
প্রথম পাতা » জেলার খবর » বোরহানউদ্দিনের গ্রিন ক্রিসেন্ট মাদ্রাসায় অনুসন্ধান-২ : জঙ্গি নয়, ঘাঁটিটি চালাতেন এমআই-৬ এজেন্ট
বোরহানউদ্দিনের গ্রিন ক্রিসেন্ট মাদ্রাসায় অনুসন্ধান-২ : জঙ্গি নয়, ঘাঁটিটি চালাতেন এমআই-৬ এজেন্ট
আবু সুফিয়ান: দেশে হঠাৎ করেই জঙ্গিবাদের উত্থানে সরকার অনেকটাই বিব্রত। আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। সরকার বলছে, নাশকতায় দেশীয় জেএমবি জড়িত। তাদের দমনে চলছে সাঁড়াশি অভিযান। জঙ্গিবাদের নেপথ্যের ক্রীড়নক নিয়ে চলছে চুলচেরা হিসেব-নিকেষ। জেএমবির বর্তমান নেতৃত্বের পেছনে কারা আছে তা হয়তো জানা যাবে। নিষিদ্ধ এই সংগঠনটির পুরনো নেতৃত্বের সঙ্গে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই-৬ এর সখ্যের তথ্য মিলেছে অনুসন্ধানে। নিষিদ্ধ এই সংগঠটির সঙ্গে এমআই-৬ এর একজন স্পেশাল এজেন্টের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে ৬ পর্বের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন পাঠকদের জন্য তা আবার প্রকাশ করা হলো –
ম্যানচেস্টার মেট্রোপলিটান ইউনিভার্সিটি থেকে ম্যাটেরিয়াল সায়েন্সে পড়াশোনা করা ড. ফয়সাল মোস্তফা এমআই-৬ এর তত্ত্বাবধানে বিশেষ ফোর্স স্পেশাল এয়ার সার্ভিস (এসএএস) ক্যাম্পে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। র্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেন ফয়সালকে। ভিডিওতে দেখা যায়, গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে শান্তভাবে জবাব দিচ্ছেন এই ব্রিটিশ নাগরিক। অত্যন্ত ধীরস্থির ও চিন্তামুক্ত।
এমআই-৬ প্রসঙ্গে অকপটে কথা বলেন তিনি। গোয়েন্দাদের সাথে তার কথোপকথন নিচে তুলে ধরা হলো—
মিস্টার ফয়সাল, আমরা এমআই-৫ এবং এমআই-৬ এ আপনার প্রশিক্ষণের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করছি।
হ্যাঁ, আমি কিছু সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছি। যুক্তরাজ্যের দক্ষিণে বিশেষ ফোর্স এসএএস-এর প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আমাকে চোখ বেঁধে ট্রাকে করে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। জায়গাটিতে শুধুমাত্র বিশেষ ফোর্সের প্রবেশের অনুমতি আছে। সেখানে আফগানিস্তানের মতো করে একটি হুবহু শহর বানানো আছে। আমার কাজ ছিল, সেই শহরের একটি বিল্ডিং ৩৬০ ডিগ্রি এ্যাঙ্গেলে রেকি করা। এরপর সুনির্দিষ্ট একটি বিল্ডিং, যেটিতে দু’জনের একটি প্রহরা থাকত— তা থেকে একটি বিস্কুটের প্যাকেট চুরি করে আনা। এ জন্য আমাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়াও ক্রলিং ও টার্গেট হিটিংয়ের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল আমাকে। এ সব ক্ষেত্রে আসল অস্ত্র নয়, এয়ার রাইফেল ব্যবহৃত হতো। যাহোক, তাতে আমি নিয়মগুলো রপ্ত করেছিলাম। আরও ছিল স্নাইপিং, বুশ ক্রাফট (সামরিক প্রশিক্ষণের অংশবিশেষ)। সেখানে তারা আমাকে ডাঙ্গায় তোলা একটি জাহাজে নিয়ে গিয়েছিল। সেটি দিয়ে তারা যুদ্ধকালীন মহড়ার প্রশিক্ষণ দিত। মানে যখন আক্রমণ করা হবে, তখন বিস্ফোরক দিয়ে কীভাবে দেয়াল বা বিল্ডিং ফুটো করে এগোতে হয়। আমি বিস্ফোরক ব্যবহার করিনি, তবে সে সংক্রান্ত কলাকৌশল সেখানে আমাকে শিখিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তিন দিনের বুনিয়াদী প্রশিক্ষণে আমরা নিজেরা আমাদের তাঁবু খাটাতাম, রান্না করতাম এবং নিজেরাই আগুন জ্বালাতে শিখেছিলাম।
আপনি কি একাই প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন, না কি সাথে আরও কেউ ছিল?
আমার সাথে আরও দু’জন ছিল। একজন ছিল এসএএস অফিসার, এখন তিনি আফগানিস্তানে। অন্যজন সাবেক সামরিক ব্যক্তি। তারা দু’জনেই সামরিক বাহিনীর বিশেষ ফোর্স থেকে এসেছিলেন।
তার মানে আপনারা তিনজন ছিলেন প্রশিক্ষণার্থী?
হ্যাঁ, আমিসহ তিনজন। আর কেউ ছিল না। আমাকে আলাদা করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল।
আচ্ছা, আলাদা?
আমাদের আলাদা থাকতে হতো।
আলাদা রুমে?
হ্যাঁ, আলাদা রুমে।
নিরাপত্তারক্ষীদের দ্বারা বেষ্টিত, চোখ বাঁধা?
হ্যাঁ, সেখানে এক জায়গা থেকে অন্যখানে আমাকে চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হতো। সেটা যেহেতু স্পেশাল ফোর্সের একটি গোপন ক্যাম্প ছিল।
আপনার সাথের দু’জনও কি চোখ বাঁধা অবস্থায় ছিলেন?
না, তাদের বিশেষ অনুমতি ছিল। ক্যামোফ্লেজের জন্য আমাকে পোশাক দেওয়া হয়েছিল।
কারণ আপনি ছিলেন বেসামরিক, সে জন্য?
হ্যাঁ, হ্যাঁ।
অনুসন্ধানি ধারাবাহিক রিপোর্ট গুলো জানতে চোখ রাখুন ভোলার সংবাদ ডট কমে।
বোরহানউদ্দিনে মাদ্রাসায় অস্ত্র অনুসন্ধান-৩ : ‘ভয়ঙ্কর’ এজেন্ট, পাচার করতেন মাদ্রাসার তথ্য
সূত্র: দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডট কম