বুধবার ● ১৩ জুলাই ২০১৬
প্রথম পাতা » জেলার খবর » ভোলায় দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত জেলা পরিষদ চত্বর
ভোলায় দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত জেলা পরিষদ চত্বর
আদিল হোসেন তপু: পবিত্র ঈদ উল ফিতর এর ৫ দিন অতিবাহিত হলেও এখন উপচেপড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে ভোলা জেলা পরিষদ চত্বরে। ঈদের দিন থেকে ভিড় শুরু হলেও এখন পর্যন্ত এই ভিড় অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিন এখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন বয়সের দর্শনার্থীরা আসছে সৌন্দর্য্য উপভোগ করার জন্য। শহরে উল্লেখ্য যোগ্য তেমন কোন বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বিনোদন প্রিয় মানুষের আগমনে মিলন-মেলায় পরিণত হচ্ছে এই চত্বর । পরিবার-পরিজন নিয়ে একটু বিনোদনের অশায় দুর-দুরান্ত থেকে ছুটে আসছেন মানুষ।
তরুন-তরুণী,শিশু-কিশোরী,যুবক-যুবতীসহ নানা বয়সী ও নানা শ্রেণী পেশার মানুষের পদচারণায় প্রতিদিনই মুখরিত হয়ে উঠেছে জেলা পরিষদ চত্বর। এই চত্বরে সৌন্দর্য্য বর্ধন করে এখানে গড়ে তোলা হয়েছে পানির ফোয়রা, বিভিন্ন ফুলের বাগান, বিভিন্ন লাইটের আলোক সজ্জার কারণে অন্যরকম অনুভতি সৃষ্টি হয়েছে এখানে। ফলে শিশু- কিশোর থেকে শুর করে সবাই এখানে আসছে ছবি তুলছে সময় কাটাচ্ছে আর ঘুরে বেড়াচ্ছে।
জেলা পরিষদ চত্বরে ঘুরতে আসা ইশতিয়াক আম্মান নামের এক যুবক বলেন, এবার ঈদে জেলা পরিষদ চত্বরটি বিনোদন পিপাশুদের নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এই জায়গাটি আগে তেমন সুন্দর না লাগলেও বর্তমানে এখানকার সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করাতে আগের থেকে অনেক সুন্দর লাগে। তবে এখানে ভোলার ইতিহাস ও ঐতিয্যহ্য তুলে ধরে কিংবা ভোলার কৃতি সন্তান বীর শ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের ভাস্কর্য থাকলে আরো ভালো হতো। এখান থেকে ভোলার ইতিহাস সর্ম্পকে কিছুটা ধারণা পাওয়া যেত।
ঘুরতে আসা তাহসান রাশেদ, সাকিল, ফাহাদ, মাসুক সহ আরো অনেকেই বলেন, জেলা পরিষদ ভবনটি শহরের প্রাণ কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠিত হলেও এখানকার যে সৌন্দর্যে আগে কাউরই চোখে পরেনি। এখন এখানকার সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করাতে আগের চেয়ে অনেক ভালো লাগে। এখন যে কেউ চলে আসবে এই সৌন্দর্য্য উপভোগ করার জন্য। তবে এখানে দর্শনার্থীদের জন্য বসার স্থান ক্যান্টিন থাকলে আরো ভালো হতো। তাহলে বেশি সময় কাটানো যেত বলে মনে করেন তারা।
ভোলা শহরে যুগীরঘোল এলাকা থেকে পরিবারের সাথে ঘুরতে আসা আফসানা মুনিয়া বলেন, এক পাশে জেলা পরিষদ চত্বর এর সৌন্দর্য্য,অন্য পাশে ভোলা পৌর ভবনের পুকুরে সৌন্দর্য্য। এমন সৌন্দর্য্য খোঁজ পাওয়া দর্শনীর্থের জন্য সত্যই সৌভাগ্যের ব্যাপার। এখানকার ফুলের বাগান, পানির ফোয়ারা কাছ থেকে ছবি তোলা অন্য রকম অনুভতি। এখানে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে এসে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে।
সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব অধ্যক্ষ আফসার উদ্দিন বাবুল বলেন, ভোলার আধুনিক সৌন্দর্যমন্ডিত জেলা পরিষদ ভবন ও ইংরেজ আমলের ১৯৪০ সালে ছিলো ডাক বাংলো। বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর।
অনেকেই জানেনা, রঙ্গিন কাঁচ শোভিত এ বাংলোয় এক সময় ইংরেজ সাহেবেরা বাস করতো। বাহারি দামি খাট ও ঝুলন্ত হাত পাখা ছিল। নৃত্য গীত ও সুরায় মত্ত থাকত ইংরেজ সাহেবরা পাকিস্তান আমলের মাঝামাঝি বাংলোটি খালি পরে থাকে। এখন বাংলোটিকে নতুন সাজে সজ্জিত করেছে জেলা পরিষদ। জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসক আব্দুল মমিন টুলুর একান্ত প্রচেষ্টায় এই চত্বরটি এখন আলোকমালায় শোভিত ও রঙ্গিন ফোয়ারা দর্শকদের মোহিত করে। আর অন্য পাশে রয়েছে জেলা পরিষদ পুকুরে ভোলা পৌর মেয়র মনিরুজ্জামান মনির করেছে আরে দৃষ্টি নন্দন স্থাপনা। এখানে আসলে যেন যে কাউরই মন ভালো হয়ে যাবে।
ভোলা জেলা পরিষদ প্রশাসক আব্দুল মমিন টুলু বলেন, এবারেই ঈদে জেলা পরিষদ চত্বরে দর্শনার্থীদের আগমন আমাকে অভিবুত করেছে। তাই জেলা পরিষদ চত্বরকে নতুন রুপে সাজানোর জন্য ব্যাপক পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। তারই অংশ হিসাবে বর্তমানে এই চত্বরের ৫০ ভাগ কাজ শেষ করেছি। এখানে সৌন্দর্য্য আরো বাড়িয়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা এখানে গ্রাম বাংলার পরিচিত মহিষ এর ভাস্কর্য, শাপলা ফুলের ভাস্কর্য সহ ভোলা ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আগত দর্শনার্থীরে কাছে তুলে ধরার জন্য ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। আশা রাখি খুব শীগ্রই এখানে অডিটরিয়াম সহ বাইরে থেকে আসা দর্শনার্থীরে জন্য থাকার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান।
এছাড়াও শিশুদের জন্য বিভিন্ন রাইটস ও থাকবে এখানে। সব মিলিয়ে আগামী ৬ মাসের মধ্যে ভোলা জেলা পরিষদ ও পৌর ভবন চত্বর হবে ভোলা জেলার বিনোদনের প্রধান কেন্দ্রে বিন্দু।
এফএইচ