শনিবার ● ১৮ জুন ২০১৬
প্রথম পাতা » জেলার খবর » বোরহানউদ্দিনে ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু, বাকরুদ্ধ মা
বোরহানউদ্দিনে ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু, বাকরুদ্ধ মা
স্টাফ রিপোর্টার: ভোলার বোরহানউদ্দিনে স্বঘোষিত ডাক্তার সিবাজুল ইসলামের ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় চলছে। নবজাতক উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের ৯ নাম্বার ওয়ার্ডের চকডোষ গ্রামের মোঃ হোসেনের ছেলে। সন্তানের মৃত্যুতে নবজাতকের মা তানিয়া বেগম বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। এদিকে সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে রোববার কোর্টে মামলা করবেন বলে জানান নবজাতকের বাবা হোসেন।
নবজাতকের বাবা আবুল হোসেন অভিযোগ করেন, বুধবার দিবাগত রাত ২ টার দিকে তাদের প্রথম এবং ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। রাত পেরোলে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে নবজাতকের মা তানিয়ার কাশি হলে তিনি সিরাজুল ইসলামের শরনাপন্ন হন। তিনি বাচ্চার মাকে দেখে খাবার ঔষধ দেন। একই সময় ছেলের অসুবিধা আছে বলে সেট্রিয়াক্সন গ্রুপের একটি কোম্পানির এসিপিন ২ গ্রাম নামের ইঞ্জেকশন পুশ করেন। ওই ইঞ্জেকশন পুশ করার ১৫ মিনিট পর নবজাতকের চোঁখ বন্ধ হয়ে শরীর ঠান্ড হয়ে যায়। আস্তে আস্তে শিশুর শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে ওই স্থান কালো হয়ে যায়। অবস্থার আরো অবনতি হলে ওই দিন বেলা ১২ টার দিকে ওই ডাক্তারকে নিয়ে গেলে তিনি শিশুটিকে মৃত ঘোষষা করেন। শিশুটির লাশ দাফনের পর হেসেনের সন্দেহ হলে পুশ করা ইঞ্জেকশনের খোসা সমেত ভাঙ্গা এম্পুল বোরহানউদ্দিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তারদের দেখালে তারা শিশুর জন্য ওই ইঞ্জেকশন প্রযোজ্য নয় বলে মত দেন। এরপর হোসেন থানায় মামলা করতে যান।
জানা গেছে, স্বঘোষিত ডাক্তার সিরাজুল ইসলামের প্রাতিষ্ঠানিক কোন সনদ নেই। এলাকাবাসী জানায়, তার ফার্মেসীর ও ঔষধ প্রশাসনের লাইসেন্স নেই।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক ডাক্তার (আরএমও) জহিরুল ইসলাম শাহিন জানান, শিশুটিকে দেয়া ইঞ্জেকশনের নমুনা তিনি দেখেছেন। যেখানে ওই বয়সের শিশু সর্বোচ্চ ২ শত ৫০ মিলিগ্রাম মাত্রার ইঞ্জেকশন পাবে, সেখানে তাকে দেয়া হয়েছে ১ হাজার ৭শ’ ৫০ মিলিগ্রামের ইঞ্জেকশন। যা ওই শিশুর জন্য বেশী মাত্রার ডোজ হয়েছে।
বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রতন কৃষ্ণ রায় চৌধুরী জানান, নবজাতকের লাশ দাফন করে ফেলায় হোসেনকে কোর্টের শরনাপন্ন হতে বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে স্বঘোষিত ডাক্তার সিরাজুল ইসলাম তার চিকিৎসার ভুল স্বীকার করেন। সেই সাথে তার নূন্যতম কোন সনদ নেই বলে জানিয়ে সংবাদ প্রচার না করার অনুরোধ করেন। তবে ফার্মেসীর কাগজ তার ছেলে আবেদের বয়স যখন ১০ বছর ছিলো তখন করা হয়েছে বলে দাবি করেন।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা ঔষধ কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিষ্ট সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আল আমিন জানান, এসএসসি পাশের পর ট্রেনিংয়ের পর ওই সনদ দেয়া হয়। কিন্তু ১০ বছর বয়েসি কারো পক্ষে ওই সনদ নেয়া সম্ভব না।