মঙ্গলবার ● ২৪ মে ২০১৬
প্রথম পাতা » জেলার খবর » ভোলায় পর্যপ্ত ত্রাণ না পাওয়ায় হতাশ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো
ভোলায় পর্যপ্ত ত্রাণ না পাওয়ায় হতাশ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো
বিশেষ প্রতিনিধি • ঘুর্ণিঝড় রোয়ানুর আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত ভোলার লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ এখনও কমেনি। ঘর বাড়ি ফসল ও সহায় সম্বল হারিয়ে এখন দিশেহারা তারা। বিশেষ করে বাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে মানুষ। সরকারী সাহায্য না পাওয়ায় ক্ষুব্দ তারা। তবে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রান বিতরন শুরু হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রোয়ানোর প্রভাবে ভোলার জন জীবন স্বাভাবিক হলেও এখনোও স্বাভাবিক হতে পারে নি জেলার দৌলতখান, তজুমদ্দিন ও মনপুরা উপজেলার উপকূলীয় এলাকা। অতি জোয়ারে মেঘনার বেড়ি বাঁধ ভেঙ্গে ২৫ গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ঝড়ো হাওয়াসহ অতি বৃষ্টিতে বেড়ি বাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে যায় নিন্মাঞ্চল। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তজুমদ্দিন উপজেলায়। প্রতিদিন দু’বার অন্তত ১২ ঘন্টা পানিবন্দি হয়ে থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। বসত ঘর পানিতে ডুবে যাওয়ায় রান্না হচ্ছেনা তাদের। এছাড়া বিধ্বস্ত ঘর বাড়ি, দোকান পাট ফসল আর ঘেরের মাছ হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে আরোও অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ। সরকারী ভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান এখনও নিরুপন করা সম্ভব না হলেও, এলাকা বাসীর দাবী কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে তাদের। ভোলায় সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তজুমদ্দিন উপজেলার মেঘনা তীর বর্তী ৩টি ইউনিয়নে। ঐসব পরিবার গুলো সরকারী সাহায্যের দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু কোন প্রকার সাহায্য পাননি বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। অতি জোয়ারে জেলার তজুমদ্দিন, দৌলতখান, লালমোহন ও মনপুরায় বাধ ভেঙ্গে নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়। ভোলা সদরের রাজুপুর, দৌলতখানের মদনপুর, নেয়ামদপুর, মেদুয়া, বোরহানউদ্দিনের পক্ষিয়া, তজুমদ্দিনের চাদপুর ইউনিয়নের ৫টি গ্রাম, লালমোহন উপজেলার লর্ডহাডিঞ্জ ও চরফ্যাশন উপজেলার কুকরী-মুকরী, চর পাতিলা, ঢালচর, মাদ্রাজ ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর চর নিউটন হামিদপুর, মেজামপুর, চর নাজিম উদ্দিন গ্রাম প্লাবিত হয়। ঘুর্ণিঝড়ের ফলে ভোলার তজুমদ্দিনে ২ ও দৌলতখানে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। শোকের মাতম চলছে পরিবারগুলো। এছাড়া তজুমদ্দিনসহ ৩ টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের খুটি উপড়ে পড়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। কবে নাগাদ বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া যাবে সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে। তালিকা শেষে ক্ষতিগ্রস্ত সকলকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। ইতোমধ্যে নিহত পরিবারকে বিশ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে প্রবল বাতাসে ভোলার মেঘনা নদীতে বালুভর্তি দু’টি কার্গো ডুবে যাওয়ার এখনোও ২টি কার্গো উদ্ধার করা সম্ভব হয় নি। নিখোঁজ চার ব্যক্তির খোঁজ মেলেনি। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলেও এখন স্বাভাবিক হয়নি উপকূলের জন জীবন। দ্রুত পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা প্রদানের দাবী জানিয়েছেন দুর্গত এলাকার বাসিন্দারা।