রবিবার ● ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » অতিরিক্ত ফি আদায়য়ে ১২০৯ স্কুলকে শোকজ নোটিশ
অতিরিক্ত ফি আদায়য়ে ১২০৯ স্কুলকে শোকজ নোটিশ
ঢাকা : এসএসসির ফরম পূরণের সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা এক হাজার ২০৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে সরকার। আগামী ২৫ মার্চের মধ্যে এসব প্রতিষ্ঠানকে নোটিসের জবাব দিতে হবে জানিয়ে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলছেন, জবাব পাওয়ার পর এদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।২০১৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেশি টাকা নেওয়ার বিষয়ে কোনো জবাব না দেওয়ায় ১ হাজার ২০৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ৩০ দিনের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব না দিলে ওই সব প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি বাতিল করা হবে।রোববার এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এ কথা বলেন। মন্ত্রী জানান, সারা দেশে মোট ৩ হাজার ৩৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে বেশি টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। গত ৩ ফেব্রয়ারি সেসব প্রতিষ্ঠানকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে সব বাড়তি টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল, না হলে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরপর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৮৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দিয়েছে বলে জানিয়েছে। আর ৯৯৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, তারা বোর্ড নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত আদায় করেনি। এসব তথ্য এখন পরীক্ষা করা হচ্ছে।মন্ত্রী বলেন, যারাই আইন-কানুন অমান্য করবে, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।আরেক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ২০১৬ সালে ফরম পূরণেরও তথ্য নেওয়া হচ্ছে। এ বছরও কেউ বেশি নিয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাসিক বেতন বেশি নেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিবেদন দিয়েছে। এ ছাড়া সরকারের আরেকটি মাধ্যমে এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলো এখন যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। সেই অনুযায়ী পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মন্ত্রী বলেন, সব প্রতিষ্ঠানই তাদের চোখে সমান। কোনোটা বেশি শক্তিশালী, কোনোটা কম সেটা তাঁরা মনে করেন না। আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রয়োগ হবে। মন্ত্রী জানান, চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় ৩ হাজার ৩৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত অর্থ নিয়েছিল বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।এর মধ্যে ৮০৩টি শিক্ষা অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দিয়েছে। ৯৯৯টি প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, তারা বাড়তি টাকা নেয়নি। ১২০৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কোনো জবাব না দেওয়ায় হাই কোর্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডি কেন বাতিল করা হবে না তার কারণ জানতে চেয়ে গত ২৫ ফেব্র�য়ারি নোটিস দেওয়া হয়েছে। যে ৯৯৯টি প্রতিষ্ঠান ফরম পূরণে অতিরিক্ত ফি আদায় করেনি বলে জানিয়েছে, তাদের দাবির যথার্থতা পরীক্ষা করা হচ্ছে বলেও শিক্ষামন্ত্রী জানান।যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ফরম পূরণে শিক্ষা বোর্ড নির্ধারিত ফির চেয়ে বেশি অর্থ নিচ্ছে গত ১ ডিসেম্বর এক আদেশে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।এরপর গত ২ ফেব্রয়ারি শিক্ষামন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন ও ফি হিসেবে এবং এসএসসির ফরম পূরণের সময় আদায় করা বাড়তি টাকা ফেরত দিতে সাত দিন সময় বেঁধে দেন। গত ১৪ ফেব্রয়ারি ওই সময় শেষ হয়। যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেতন-ফি বাবদ অতিরিক্ত টাকা নিয়েছে সেগুলোর তালিকা রোববারই পাওয়া গেছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সরকারের আরেকটি এজেন্সির মাধ্যমেও এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।প্রতিবেদনগুলো পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, অনিয়ম করে কেউ রেহাই পাবে না,বলেন মন্ত্রী।চলতি বছর কতগুলো প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত বেতন-ফি আদায় করেছে জানতে চাইলে নাহিদ বলেন, সেই সংখ্যা এখনও ফাইনাল করিনি, তাই বলছি না। তবে অনেকেই অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দিয়েছে।গত ১৭ জানুয়ারি সরকারের অনুমোদন না নিয়ে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বর্ধিত বেতন ও ফি আদায় না করার নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ গত ৮ ফেব্রয়ারি সাংবাদিকদের বলেন, যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারলে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বেতন বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হবে।