বুধবার ● ২৭ জানুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » এই দিনই শেষ নয়, আরো দিন আছে : মেজর হাফিজ
এই দিনই শেষ নয়, আরো দিন আছে : মেজর হাফিজ
ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাষ্ট্র বিরোধী কোনো বক্তব্য দেননি বলে দাবি করেছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আজ যারা বেশি হুংকার দিচ্ছে তারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি। এই সরকার গণতন্ত্রের কোনো তোয়াক্কা করছে না। দেশ আজ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে-গণতন্ত্রের লেস মাত্র নেই, স্বৈরশাসক চেপে বসেছে।বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত রায়, সংবিধান, নির্বাচন ও বাংলাদেশের গণতন্ত্র শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সরকার যে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করেছে, এতে বিশ্ববাসী চমকিত।অল কমিউনিটি ফোরাম এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।হাফিজ আরও বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদেরকে নিয়ে খালেদা জিয়া কোনো সংখ্যার কথা বলেননি। তাদের অসম্মান করে কিছু বলেননি। সেখানে রাষ্ট্রদ্রোহী কোনো বিষয় ছিলো না। এর আগে নিজ বাসভূমি থেকে খালেদা জিয়াকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এখন কারাগারে নেওয়ার জন্য তার নামে একের পর এক মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে, অভিযোগ করেন হাফিজ। এমন মিথ্যা ও হাস্যকর মামলা দিয়ে বিএনপির মতো জনপ্রিয় দলকে হাওয়ায় মিশিয়ে দেওয়া যাবে না বলেও এসময় মন্তব্য করেন এই বিএনপি নেতা। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবনের গেইটে আদালতের সমন না টাঙিয়ে সম্মানজনক ব্যবস্থা করা যেত না বলে মনে করেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবন ফিরোজার গেটে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় আদালতের সমনের কপি ঝুলিয়ে দেন আদালতের কর্মকর্তারা। বাসার কেউ সমন গ্রহণ না করায় গেটে এই সমনের কপি ঝুলিয়ে দেন তারা।এ প্রসঙ্গে মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, খালেদা জিয়া কি ফেরারি? তার কি কোনো পরিচয় নেই? তিনি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী এবং মুক্তিযোদ্ধা। তার বাড়ির গেইটে সমন না টাঙিয়ে কি সম্মানজনক ব্যবস্থা করা যেত না? তিনি বলেন, জনসম্মুখে হেয় করার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সরকার একের পর এক মামলা দিয়ে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দেয়া হয়েছে। অথচ মুক্তিযোদ্ধা দলের সমাবেশে বিএনপি চেয়াপারসনের দেয়া বক্তব্যে রাষ্ট্রদ্রোহিতার লেশমাত্র নেই। ষড়যন্ত্র করে সরকার হটানোর চেষ্টা করলে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা যেতো। তিনি নিজেই একজন মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণার্থে তিনি মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় গঠন করেছেন। মেজর হাফিজ বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বেগম খালেদা জিয়া কোনো সংখ্যার কথা বলেননি। তাদের সম্মানহানি হয়, এমন কিছু তিনি বলেননি। অথচ বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা হলো, যা হাস্যকর। এ মামলায় সারা বিশ্ব চমকিত হয়েছে। যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি তাদের হুংকার বেশি শোনা যাচ্ছে। এটা খারাপ আলামত। তাই এ সরকারকে বলতে চাই, এই দিনই শেষ নয়, আরো দিন আছে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন,অবসর গ্রহণের পর বিচারকের লেখা রায় বেআইনি ও অসাংবিধানিক-মর্মে প্রধান বিচারপতির দেয়া বক্তব্য দেশবাসী গ্রহণ করেছেন। অথচ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ স্থান থেকেও তার সম্মানের খেলাপ করে বক্তব্য দেয়া হচ্ছে। ক্ষমতাসীনরা সংসদ ও সংসদের বাইরে তাকে আক্রমণ করে বক্তব্য দিচ্ছেন। তারা দাবি করছেন, প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা সামরিক বাহিনীর সাথে আঁতাত করে এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। এটা খুবই দুঃখজনক।তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষের অধিকার হরণের পর এবার শাসক দল বিচার বিভাগের অধিকার হরণ করছে। দিনের বেলায় রায় দেন আর রাতের বেলায় রায় লেখেন- এমন বিচারপতি আমরা চাই না।সরকারকে হুঁশিয়ার করে বিএনপির এই নেতা বলেন, সংবিধান নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করবেন না। সংবিধান নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে আপনারা পদত্যাগ করুন। সকল রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করে অবিলম্বে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। আপনারাও বাঁচুন, জনগণকেও বাঁচান। অল কমিউনিটি ফোরামর উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মো. আশরাফ উদ্দিন বকুলের সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য দেন-বিএনপির সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাবিরুল হায়দার চৌধুরী প্রমুখ।