বুধবার ● ১৩ জানুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » জেলার খবর » ভোলার খাল দূষণ চলছেই…
ভোলার খাল দূষণ চলছেই…
মোকাম্মেল হক মিলন: ভোলা খাল দূষণে বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে । পণ্যবোঝাই জাহাজ- ছোট ট্রলার আসা-যাওয়া করতে পারছে না। খালের পানি পচে শহরে পরিবেশে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি “বেলা” গত বছরের মে মাসে খালটির সীমানা নির্ধারণ করে দখল-দূষণমুক্ত ও খনন করার দাবিতে রিট করেছে উচ্চ আদালতে ।
সরেজমিনে দেখা যায়, মূল খালের দুই পাশ দখল হওয়ায় প্রস্থ্য কমেছে। বাজারের কসাইখানার গোবর, কাঁচাবাজারের সবজি’র আবর্জনা, হাসপাতাল ও ক্লিনিকের বর্জ্য, ইট ও মাটির জিনিসপত্র এবং হোটেলে সহ বিভিন্ন আবর্জনা ফেলছে খালে। এক শ্রেণীর বালুর ব্যবসায়ীরা একদিকে পাইপের মাধ্যমে খালের মধ্য দিয়ে টেনে বালু নিচ্ছে। অনেক সময় ওই পাইপের ছিদ্র দিয়ে খালে বালু পড়ছে। পৌরসভার শতাধিক নালা এবং অ শৌচাগারের সংযোগ খালে দেওয়ায় চারপাশে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। তারপরও এর পানি হোটেল ও বাসাবাড়িতে ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে।
উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, খালটির দৈর্ঘ্য ১২ কিলোমিটার প্রায়। এটি মেঘনা থেকে শিবপুর, রতনপুর, ভোলা পৌরসভার চরজংলা, বাপ্তা, চরনাপ্তা, চরনোয়াবাদ, সদুরচর ও পূর্বচরকালী মৌজা হয়ে ভোলার খেয়াঘাট নদীতে মিশেছে। এদিকে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) অবৈধ দখলদারের একটি তালিকা করেন। এতে ২৫৫ জন দখলদার খালের দুই পাড় দখল করেছে বলে জানা যায়। সেই সংখ্যা এখন আরও বেড়েছে।
অন্যদিকে ভোলা জেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক শাজাহানের অভিযোগ, বেলা’র রিট, বিবাদীদের কারণ দর্শানোর নোটিশ ও দখলদারের তালিকা হলেও দখলমুক্ত এবং খাল খননের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
এদিকে শীতের মৌসুমে খালের পানি কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। জেলা মুদি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বাবুল বলেন, খালকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে ভোলা জেলার ব্যবসা-বাণিজ্য। কার্গো ও নৌকা বোঝাই করে ব্যবসায়ীরা পণ্য এই খাল দিয়ে আনা-নেওয়া করেন। খালে পানি না থাকায় প্রতি বস্তা পণ্যে বাড়তি ৮০ থেকে ৯০ টাকা খরচ হচ্ছে। চাল ব্যবসায়ীরা বলেন, যশোর, নোয়াপাড়া, পাবনা, ঢাকা ও চরফ্যাশন, ল্যাতরা-আইচা থেকে চালভর্তি কার্গো ভোলা খালের মুখে আসতে সর্বোচ্চ দুই দিন সময় লাগে। আর ভোলা খাল দিয়ে আড়তের সামনে আসতে সাত দিন সময় লাগে।
সদর উপজেলা নির্বাহি অফিসার কাজী তোফায়েল হোসেন বলেন, কারণ দর্শানোর নোটিশে তাঁরা জানিয়েছেন, ভোলা খাল ভোলা পৌরসভার রেকর্ডিও সম্পত্তি। দখলমুক্ত করা ও নাব্যতা ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব তাঁদের। অপরদিকে জেলা প্রশাসক (যুগ্নসচিব) মো. সেলিম রেজা বলেন, এ ব্যাপারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী হাকিমকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে।