সোমবার ● ৪ জানুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » জেলার খবর » তজুমদ্দিনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি ও মার্কশিট দেওয়ার নামে প্রধান শিক্ষকের চাঁদা আদায়
তজুমদ্দিনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি ও মার্কশিট দেওয়ার নামে প্রধান শিক্ষকের চাঁদা আদায়
তজুমদ্দিন প্রতিনিধি: ভোলার তজুমদ্দিনে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি ও মার্কশিট দেয়ার নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা সদরে অবস্থিত চাঁদপুর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন করে ভর্তির নামে প্রতি শিক্ষার্থীকে ১৫০ টাকা করে প্রায় ৪৮০ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রায় ৭২ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়। অথচ সরকারীভাবে কোন ভর্তির নামে কোন ফি নেওয়ার নিয়ম না থাকলেও চাঁদপুর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিতালী দত্ত সহকারী শিক্ষকদের মাধ্যমে এসব টাকা উত্তোলন করাণ বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় পাশ করা শিক্ষার্থীদের মার্কশিটের নামে এ+ প্রাপ্তদের কাছ থেকে পাঁচশত টাকা ও সাধারণ গ্রেড এ পাশ করা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে দুইশত টাকা করে প্রধান শিক্ষক মিতালী দত্ত নিজেই তোলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সরকার শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে ভর্তির ব্যবস্থা ও মার্কশিট প্রদান করার নিময় থাকলেও বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এভাবে টাকা নেওয়ায় শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা সদরের কাছাকাছি এই স্কুলটির প্রধান শিক্ষক সরকারের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গালি দেখিয়ে একের পর এক অনিয়ম করলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেন এলাকাবাসী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা বলেন, ভর্তির জন্য স্কুলের স্যারেরা আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। এধরনের অনিয়মের জন্য অভিভাবকরা প্রধান মিতালী দত্তের বাদলী দাবী করে। তারা আরো জানান, কোন কোন অভিভাবকরা একশত পঞ্চাশ টাকা থেকে কম দিতে চাইলে প্রধান শিক্ষক সাফ জানিয়ে দেন এক টাকা কম হলেও ছাত্র/ছাত্রী ভর্তি করানো অথবা বই দেয়া হবে না। এ বিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষক মিতালী দত্তের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারের বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ই্দ্রজিৎ দেবনার্থ ও ভোলা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সাইদুজ্জামান বলেন, ভর্তি ও মার্কশিটের জন্য টাকা নেওয়ার সরকারী কোন বিধান নেই। এরপরও কেউ টাকা নিলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরদিকে প্রধান শিক্ষক মিতালী দত্তের সহযোগীতায় চাঁদপুর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ও সরকারী বিদ্যুৎ ব্যবহার করে বাণিজ্যিক কোচিং সেন্টার পরিচালনায় করেছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ আরো জানা যায়, ওই বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষকা অন্তঃসত্তা থাকার কারণে একদিন স্কুলে আসতে না পারায় পরের দিন খোলা তারিখে সহকারী শিক্ষকা স্কুলে গেলে প্রধান শিক্ষক মিতালী দত্ত তাকে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কথা বলে তার কাছ থেকে দুই হাজার টাকা ঘুষ নেয়। পরে টাকা নেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষা অফিসারের হস্তক্ষেপে প্রধান শিক্ষক মিতালী দত্ত সেটাকা ফেরত দেন। ওই প্রধান শিক্ষক প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে সরকারের আইন ভঙ্গের প্রতিযোগিতায় নামলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে।