বৃহস্পতিবার ● ১২ নভেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » জেলার খবর » বোরহানউদ্দিনের কোটিপতি জ্বীনের বাদশা রুবেল থেকে প্রবাসীরা সাবধান! পর্ব-২
বোরহানউদ্দিনের কোটিপতি জ্বীনের বাদশা রুবেল থেকে প্রবাসীরা সাবধান! পর্ব-২
আব্দুল মালেক, বোরহানউদ্দিন প্রতিনিধি: ভোলা বোরহানউদ্দিন উপজেলায় অসংখ্য যুবক রয়েছে যারা জ্বীনের বাদশা সেজে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সাথে প্রতারণা করে বেড়াচ্ছেন। আর এসকল যুবকরা নিজেদেরকে অল্প সময়ের মধ্যে কোটিপতি বনে নেওয়ার জন্য এ জ্বীন ব্যবসাটাকে প্রদান পেশা হিসেবে বেচে নিয়েছে। এসকল যুবকরা কখনো বড় সাধক, বড় পীর, কখনো কাবা শরীপের ঈমাম, খাদেম অথবা বড় কোন মসজিদের ইমাম, আবার কখনো পতালপুরীর খয়াজখিঞ্জির ও জ্বীনের বড় সাধক সহ অনেক পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে থাকে। এ সকল প্রতারকদের মধ্যে আজ আরেক কোটিপতি যুবকের আত্মকাহিনী শুনলে যে কাউর মাথা ঘুরে যেতে পারে। উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নে এরকম অনেক যুবক কোটিপতি বনে যাওয়া ভ- জ্বীন প্রতারক আছে তার নির্দিষ্ট হিসাব জানা নেই কারোও কাছে। তবুও অনেক তথ্য বের হয়ে এসেছে। এসকল প্রতারকদের সর্ম্পকে ধারাবাহিক ভাবে জানতে হলে প্রতিদিন লক্ষ্যে রাখুন ভোলার সংবাদ ডট কম এ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের ফুলকাচিয়া ৪নং ওয়ার্ডের সেরু বিশ্বাসের ছেলে মো. রুবেল হোসেন (২২)। বাবা একজন দিন মজুর। এলাকায় অনেকে জ্বীন পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে কোটিপতি হতে দেখে সেও লোভে কোটিপতি হওয়ার জন্য গত দের বছর ধরে জ্বীন পরিচয় দিয়ে প্রতারণার কাজ শুরু করেন। এ ব্যবসা করতে শুধু সু-কৌশল আর কিছু মোবাইল অপারেটরের সিম আর মেধার প্রয়োজন হয়। এ গুলো খুব দ্রুত সংগ্রহ করে রুবেল বিনা চালানে এ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। দিনের পর দিন মানুষকে নানা পন্দিতে ধোঁকা দিয়ে প্রায় কোটিপতির মালিক বনে গেছেন। রুবেল গত ৫ থেকে ৬ মাস আগে মিঝির দোকান এলাকায় প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে করে আলিশান ঘর নির্মাণ করেন। ওই ঘরের ভিতর ও বাহিরের কারুকাজ দেখে সবাই’র চোখে রিমজিম করে উঠার কথা। একা একটি ঘরের জন্য স্যাটেলাইট (ডিস লাইন) ও রয়েছে। এত টাকার উৎস কোথায়? উত্তর মিলছে না।
দের বছর পূর্বে যারা দিন আন্তে পান্তা পুরাতো তারা এখন কোটিপতি। সে কোটিপতি হউক এটা কারোও মাথা ব্যথা নেই কিন্তু এক শ্রেণীর সহজ সরল দেশী ও প্রবাসী ভাই ও তাদের সহজ সরল স্ত্রীদেরকে গভীর রাতে ফোন দিয়ে এ প্রতারণা করে এ অর্থবিত্তের মালিক হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। হঠাৎ এই আলিশান ঘরটি করার পর থেকে এলাকায় মানুষের মাঝে রুবেলের জ্বীন ব্যবসাটি ছড়িয়ে পড়েন। এর পর বেশ কয়েকবার ঝামেলায় পড়তে হয় রুবেলকে। এখন নিজেকে অনেকটা আত্মগোপনে রেখে এ প্রতারণা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে অনায়াসে। ওই ভ- জ্বীন কৌশল পরিবর্তন করে এখন মাঝে মধ্যে তাবলীগ জামায়াতে যান । সেখানে গিয়ে তার ওই ভ- ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান এলাকাবাসী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক লোক বলেন, রুবেলের বাবা কৃষি কাজ করে। রুবেল জ্বীনের ব্যবসা করেন। জ্বীনের প্রতারণার টাকা দিয়েই এ আলিশান বাড়ি নির্মাণ করেন।
প্রবাসী ক্ষতিগ্রস্তরা বলেন, রাতের আধারে যে কৌশলে ওরা ফোন করে এটা যে কেউ ওদের ফাঁদে পা ভারাবে। ওরা একটা মানুষের সকল তথ্য যেনেই ফোন করেন। এর পর নিজেকে বড় পীর কখনো বড় জ্বীন সহ বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে কথা বলেন। সকল বিপদের মুক্তির আছান বলে নিজেকে দাবী করেন। কোন সময় কোটিপতি হওয়ার স্বপ্নও দেখান এ ভ- চক্ররা। সব চেয়ে দুর্বল যায়গায় ওরা আঘাত করে এতে ভয় পেয়েই তাদের দাবী কৃত টাকা ব্যাংক একাউন্ট ও বিকাশ, ডাচ বাংলার মাধ্যমে দেশ বিদেশ থেকে বাধ্য হয়েই পাঠাইতাম। আমাদের মতো আর কেউ যেনো এদের ফাঁন্দে পাও না দেয় এই দোয়াই করছি। এরা একবার যাকে ফাঁন্দে ফেলে একেবারে নিঃস্ব করে দেন।
এদিকে ডিজিটাল যুগে মানুষ এত সহজ সরল কেনো এর উত্তর মিলছে না। জ্বীন ও বড় পীর কামেল মোবাইলে গভীর রাতে মানুষকে ফোন দেবে এটা বিশ্বাস করছে কেনো মাথায় ধরছে না। সচেতন মহলের দাবী এ ভূয়া জ্বীন প্রতারণা কারীদের হাত থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রথমে মানুষ কেও একটু সচেতন হতে হবে। ওরা যতই ভয় দেখায় না কেন এরা ক্ষতি করার কোন প্রশ্ন আসে না। কোন দিনই পীর কামেল ও জ্বীন মানুষকে মোবাইলে ফোন দেয় এটা বিশ্বাস না করা পাশাপাশি সকলেই মিলে এ জ্বীনের ভ-ামি দেশ ও বিদেশে থাকা প্রবাসি ভাই’রা যে টেলিভিশন ও পত্রিকার মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেখে লোভে পড়ে ওদের ফোন দেন এটা বন্ধ করতে হবে। সবাই’র মাঝে সচেতনতা ফিরে আসলে এ ভ-রা নিজেরাই থেমে যাবে কেউ এদের থামাতে হবে না। সে অপেক্ষায় আছি আমরাও। এছাড়াও এদের হাত থেকে মুক্তি পেতে সবাইকে আরোও সচেতন হওয়ার দাবী সচেতন মহল।
এব্যাপারে জ্বীন প্রতারক রুবেল হোসেনের বক্তব্য জন্য তার আলিশান বাড়িতে গেলে ঘরটির তদারকির দায়িত্বে থাকা মরিয়ম নামের একজন মহিলাকে পাওয়া যায়। তার সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, রুবেল কিছু করে না। তার বাবা সেরু বিশ্বাস কট জমি রেখে কৃষি কাজ করছে। ওই মহিলাকে কৃষি কাজ করে এ আলিশান বাড়ীটির কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেনি। ঘরের আর লোকজন কোথায় এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন সবাই চরফ্যাশন বিয়ের দাওয়াত খেতে গিয়েছেন।
অপরদিকে এ ভ- প্রতারক চক্রদের হাত থেকে স্থায়ী মুক্তি পেতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তপেক্ষ কামনা করছে ক্ষতিগ্রস্তরা। চলবে…