শনিবার ● ১৭ অক্টোবর ২০১৫
প্রথম পাতা » জেলার খবর » অন্ধকে আলো ফিরিয়ে দিতে কাজ করে যাচ্ছেন নিজাম হাসিনা ফাউন্ডেশন হাসপাতাল
অন্ধকে আলো ফিরিয়ে দিতে কাজ করে যাচ্ছেন নিজাম হাসিনা ফাউন্ডেশন হাসপাতাল
আদিল হোসেন তপু: দ্বীপ জেলা ভোলার হতদরিদ্র মানুষের পাশে এসে দাড়িঁয়েছে নিজাম-হাসিনা ফাউন্ডেশন হাসপাতাল। প্রতিষ্ঠার ৫ বছরে প্রায় দেড় লক্ষ চক্ষু রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করেছে এই হাসপাতালটি। এর মধ্যে ১৫ হাজার দৃষ্টিহীন রোগীকে সফল অপরেশনের মাধ্যমে চোখের আলো ফিরিয়ে দিয়েছে। হাসপাতালটি বর্তমানে দারিদ্র অসহায় অন্ধ্যাকে আলো ফিরিয়ে দিতে নিরলশ ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এই ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে শিক্ষা বিস্তারএর জন্য শিক্ষা বৃত্তি প্রদান, ঝড়ে পড়া রোধে স্কুল ফিডিং, বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা প্রদান, বৃদ্ধা নিবাস নির্মাণ, ভোলার প্রেস ক্লাব ভবন র্নিমাণ, মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান, এতিমখানা র্নিমাণ, শীতবস্ত্র বিতরণ, বিদ্যালয়ও মসজিদ ভবন সহ সকল ভালো কাজের পাশে রয়েছেন। আর এই সব ভালো কাজের ছাঁয়ার মতো সবসময় সঙ্গে আছেন এফবিসিসিআই এর পরিচালক, মেঘনাও কর্নফুলী ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন আহমেদ।
বর্তমানে অসহায় দুস্থ মানুষের একমাত্র আস্থার পতিষ্ঠান হিসাবে রূপ নিয়েছে নিজাম হাসিনা ফাউন্ডেশন।
নদী ভাঙ্গন কবলিত অসহায় অধিকাংশ মানুষের চেখের নানান সমস্যার সৃষ্টি হয়। ফলে অনেকেরই ছানি পড়া সহ নানা সমস্যার কারণে চোখ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এইসব দিক বিবেচনা করে বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী নিজাম উদ্দিন আহমেদ তার এবং স্ত্রী হাসিনা নিজাম এর নামে নিজাম-হাসিনা ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। এই ফাউন্ডেশনের নামে ২০১০ ভোলা শহরের উকিল পাড়া ৪ একর জায়গার উপরে দৃষ্টি নন্দন ভাবে তৈরি করা হয় নিজাম হাসিনা ফাউন্ডেশন হাসপাতাল। বর্তমানে এখান থেকে চক্ষু রোগের সেবা দেয়া হয়ে থাকে। হাসপাতালটির উদ্ধোধন করেন হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি ফরিদ আহমেদ । তার পর থেকে এই হাসপাতালে চক্ষু অপরেশন করা হয়। যাকাত ভোগ করতে পারবেন এসকল দারিদ্ররাই হচ্ছে এই হাসপাতালের রোগী। ৫ টাকার টিকেক কেটে রোগী হিসাবে নাম লেখাতে হয়।এরপর স্বপূর্ণ বিনা খরচে রোগ নির্নয়,অস্ত্রোপাচার, থাকা খাওয়া, ওষুধ এবং প্রয়োজনে যাতায়ত খরচও ভবন করা হয়। সাবেক সিভিল সার্জেন ডা. আব্দুল মালেক এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসাবে নিরলশ ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে এখানে ৩ জন নিয়মিত চিকিৎসকও পযার্প্ত নার্স এখানে সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ভোলার ভেলুমিয়া থেকে আসা আমীর হোসেন (৬৫) বলেন, ২ বছর আগে আমি ছানির কারণে চোখে দেখতে পারিনি। অনেক দিন ধরে ভুগছিলাম। তখন কোরআন শরীফ পরতে পারিনাই নানা কষ্টে ছিলাম। পরে একদিন আমার ছেলে এই নিজাম-হাসিনা হাসপাতালে নিয়ে আসে।এখানে আমার চোখের পরীক্ষা করে ছানি অপারেশন করা হয়। এখন আল্লাহর রহমতে আমি আগের মতো সব কিছু দেখতে পাই।
একই এলাকার জাহানারা বেগম বলেন, আমার স্বামী কাশেমের চোখে ছানি পরে চোখ নষ্ট হয়ে যায়। এতে আমাদের সংসারের আয় রোজগার বন্ধ হয়ে যায়। পরে পাশের বাড়ীর একজন আমাকে এই হাসপাতালের কথা বললে আমি আমার স্বামীকে নিয়ে এসে অপরেশন করাইছি । এখন আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি। এরমকম কাশেম, আমীর হোসেন দের মতো হাজারো লোককে এবং তাদের পরিবারের মুখে হাসিঁ ফুটিয়েছে নিজাম হাসিনা ফাউন্ডেশন হাসপাতাল।
এব্যাপারে নিজাম হাসিনা ফাউন্ডেশন হাসপাতালের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, জীবনে অনেক কষ্টের মধ্যে দিয়ে আমি আমার জীবনকে পার করেছি। ফলে মানুষের অনেক কিছুই আমি খুব সহজে কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে। তাই মানুষের জন্য কিছু করার লক্ষ্যে নিয়ে ২০০০ সালে নিজাম হাসিনা ফাউন্ডেশন ঘরে তোলা হয়। নিজের সঞ্চিত অর্থের একটি অংশ ফাউন্ডেশন তহবিলে দেন। এই ফাউন্ডেশনের গড়া হাসপাতালটি এখন চলছে তার নিজেস্ব আয়ে।
এসময় তিনি আরো বলেন, দ্বীপ জেলা ভোলার অধিকাংশ মানুষ দারিদ্র যারা আর্থিক সঙ্কটে দীর্ঘ দিন ধরে দৃষ্টিহীনতায় ভুগছিল। তাদের জন্যই ২০১০ সালে এই হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে এই হাসপাতালের মাধ্যমে দেড় লক্ষ্য মানুষের চক্ষু রোগের চিকিৎসা সেবা করা হয়েছে। এছাড়াও ১৫ হাজার দৃষ্টিহীন রোগীকে সফল অস্ত্র পাচারের মাধ্যমে দৃষ্টি ফিরিয়ে দিয়েছেন। ভবিষ্যতে হাসপাতালটি আরো মানুষের সেবা দেওয়ার জন্য কাজ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।