মঙ্গলবার ● ১৩ অক্টোবর ২০১৫
প্রথম পাতা » জেলার খবর » ভোলার ৯৪ টি মন্ডপে শারদীয় দূর্গা উৎসবের প্রস্তুতি চলছে
ভোলার ৯৪ টি মন্ডপে শারদীয় দূর্গা উৎসবের প্রস্তুতি চলছে
স্টাফ রিপোর্টার : এবছর জেলার ৭টি উপজেলায় ৯৪ টি মন্ডপে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে জেলার অধিকাংশ পূজামন্ডপের প্রতীমা তৈয়ারি করার মূল কাজ শেষ হয়েছে। এখন শুধু প্রতিমা রং করার কাজে পূজা মন্ডপগুলোতে চলছে ব্যস্ততা। বিগত বছরের তুলনায় এ বছর দূর্গাৎসবে দ্বিগুণ ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে আয়োজকদের। এরপরও থেমে নেই কোন আয়োজন। রকমারী আলোক সজ্জার বর্ণালী বাহারে সাজানো হবে মন্ডপ ও তার আশপাশ। হাতে আর মাত্র এক সপ্তাহ বাকি। তাই রাত-দিন চলছে সাজ-সজ্জার ধুম। সবমিলিয়ে উৎসবের রঙে সাজছে দেশের সর্ব দক্ষিণের দ্বীপজেলা ভোলা।
জানা যায়, ভোলার বিভিন্ন পূজা মন্ডপ ইতোমধ্যে বিভিন্ন মন্ডপে চলছে উৎসবের ব্যাপক প্রস্তুতি। প্রস্তুতির শেষ পর্যায়ে কোন কোন মন্ডপে চলছে রংতুলির কাজ, আবার কোথাও কোথাও চলছে সাজ-সজ্জা, প্যান্ডেল ও ডেকোরেশনের কাজ। অপরদিকে কেনা কাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন সনাতন ধর্মালম্বীরা। ঘরে বাইরে পূজাকে নিয়ে চলছে চরম ব্যস্ততা। জামা কাপড় তৈরি, কেনা-কাটায় সরগরম বিপণীবিতানগুলো। চারপাশে চলছে উৎসবের আমেজ।
ভোলা সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শান্ত ঘোষ জানান, এ বছর জেলার ৭টি উপজেলার ৯৪ টি মন্ডপে শারদীয় দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে ভোলা সদর উপজেলায় ২৩ টি, দৌলতখান উপজেলায় ৬ টি, বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ২০ টি, তজুমদ্দিন উপজেলায় ১২ টি, লালমোহন উপজেলায় ১৬ টি, চরফ্যাশন উপজেলায় ৮ টি ও মনপুরা উপজেলায় ৯ টি।
বিগত বছরের তুলনায় এ বছর প্রতিমা তৈরীতে দ্বিগুণ ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানালেন ফরিদপুর রাজবাড়ির প্রতিমা তৈরীর ভাস্কর শিল্পী বিষ্ণু পাল। তিনি আরো জানান, এবছর তিনি ভোলা জেলায় ৫টি প্রতিমা তৈরীর কাজ করেছে। এর মধ্যে সর্বচ্চো ৯০ হাজার ও সর্বনিম্ম প্রতিমা তৈরীর মজুরি ৫০ হাজার টাকা। গত বছরের তুলনায় এ বছর রং, মাটিসহ সব জিনিষের দাম ও শ্রমীকদের মজুরি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে রাত-দিন পরিশ্রম করেও লাভের মুখ দেখছেনা তারা।
অপরদিকে একই কথা জানালেন, ভোলার পাঁচ তহবিল সার্বজনিন পূজা মন্ডপের সাধারণ সম্পাদক শাওন দেবনাথ ও অনুজ কাহালীর মাঠ দূর্গা পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সজল দেবনাথ। দূর্গাৎসবের ব্যয় দ্বিগুণ হওয়ায় তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এসময় তারা উৎসবমুখর ভাবে পূজা পালনের জন্য সরকারি অনুদান বৃদ্ধি করতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান।
এ ব্যাপারে ভোলা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গোরাঙ্গ চন্দ্র দে বলেন, দূর্গা পূজা পরিচালনার লক্ষ্যে সরকার থেকে কিছু অনুদার আমরা পেয়ে থাকি। তবে তা অতি সামান্য। এবছর আমরা সরকারের কাছে অনুদান বৃদ্ধির জন্য আবেদন করেছি।
ভোলা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ দুলাল চন্দ্র ঘোষ বলেন, আগামী ১৯ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মাধ্যমে দেবী দুর্গার অকালবোধন শুরু হবে। পূজাকে সামনে রেখে পূজা উদযাপন পরিষদের সকল কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। প্রতিটি মন্ডপে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় পূজা কমিটির নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবককর্মী নিয়োগ করা হবে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উৎসব পালনের লক্ষ্যে প্রশাসনিক ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
ভোলা জেলা পুলিশ সুপার মোহাঃ মনিরুজ্জামান জানান, শারদীয় দূর্গা পূজা উপলক্ষ্যে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে নেয়া হবে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা। পূজা চলাকালীন দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা দিতে পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি সাদা পোশাকে নারী ও পুরুষ পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন পূজা মন্ডবসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে বিশেষ নজরদারী রাখবে বলেও তিনি জানান। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে শারদীয় দূর্গাউৎসব পালনে পুলিশের সকল প্রকার সহযোগীতার আশ্বাস দেন পুলিশ সুপার।