রবিবার ● ১১ অক্টোবর ২০১৫
প্রথম পাতা » জেলার খবর » নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ ধরায় ব্যস্ত সময় পার করছে ভোলার জেলেরা
নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ ধরায় ব্যস্ত সময় পার করছে ভোলার জেলেরা
বিশেষ রিপোর্ট • মৌসুমের শেষ দিকে এসে ভোলার জেলেরা ইলিশের দেখা পেলেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় হতাশা যেন কাটছিলনা তাদের। ১৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ ধরায় ব্যস্ত সময় পার করছে ভোলার মেঘনা পাড়ের জেলেরা। অভাব অনটনের দিন শেষ হবে, মহাজন আর এনজিওর দেনা আর সুধে ধার নেয়া টাকা পরিশোধ হবে এ আশায় রাতদিন ইলিশ ধরায় ব্যস্ত সময় পার করছে জেলেরা। অন্যদিকে কাঙ্খিত ইলিশের দেখা নেই জেলেদের জালে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ভরা মৌসুমে ইলিশের এ সংঙ্কট মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গেল রোজার ঈদ এর পর কোরবানির ঈদে পরিবারের কাউকেই নতুন পোষাক কিনে দিতে পারেনি জেলেরা। কাঙ্খিত সময়ে ইলিশের দেখা না পাওয়া আর ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় এ বছরের দুটি ঈদ ভালো কাটেনি জেলে পরিবারগুলোর। নিষেধাজ্ঞা শেষ তাই আবার ঘুড়ে দাড়াতে চায় জেলে পরিবারগুলো। মহাজনের দেনা আর দাদনের টাকা শোধ হবে এবার। এই ভেবে জেলেরা ব্যস্ত সময় পার করছে জাল আর নৌকা মেরামতে। সবরকম প্রস্তুতি শেষে উত্তাল মেঘনা চষে বেড়াবে আর দেখা মিলবে কাঙ্খিত ইলিশের এই আশা জেলেদের। মেঘনায় জালে ধরা দিচ্ছে ইলিশ। তাই এখন আর ঘরে বসে সময় কাটানো নয়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মেঘনায় জাল ফেলে ইলিশ শিকারে ব্যস্ত সময় পার করছে মেঘনা পাড়ের জেলেরা। গত দু’দিনে নদীতে ইলিশ ধরা পড়ায় কিছুটা হাসি ফুটেছে জেলে পরিবারগুলোর মুখে।
ইলিশের আশায় প্রতিদিন হাজার হাজার জেলে ভোলা সংলগ্ন মেঘনা এবং তেতুলিয়ায় জাল আর নৌকা নিয়ে চষে বেড়াচ্ছে। তবে এখনও আশানুরুপ ইলিশের দেখা পাচ্ছে না জেলেরা। ঝড়-ঝঞ্জা উপেক্ষা করে উত্তাল মেঘনায় জাল ফেলে পাওয়া ইলিশ বিক্রি করে ঘুড়ে দাড়াতে চায় জেলেরা। জেলেদের জালে ধরা পড়া মা ইলিশের পেটে এখনও দেখা যাচ্ছে ডিম। জেলেরা জানায়, ডিমওয়ালা ইলিশ সংরক্ষণে সরকারী নিষেধাজ্ঞা আরো মাস খানেক পরে হলে মা ইলিশের ডিম ছাড়ার সময় হতো।
মহাজনের দেনা আর দাদন ব্যবসায়ীদের দাদনের টাকা আর এর সাথে যোগ হয়েছে এনজিওর চড়া সুদের ঋণের বোঝা। দাদন ব্যবসায়ীরা জানালেন, একেক টি জেলে নৌকায় তারা ত্রিশ হাজার টাকা থেকে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত দাদন দিয়ে থাকেন।
নদীতে ইলিশ ধরা পড়ায় ব্যস্ততা বাড়ছে ভোলার মৎস্য ঘাটগুলোর। পাইকার, আড়ৎদার, জেলে ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাকডাকে এখন সরগরম হচ্ছে এসব ঘাট।
ভোলার বিভিন্ন মৎস্য ঘাট ঘুরে দেখা যায়, প্রতি হালি ঝাটকা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২০০-৩০০ টাকায়, মাঝাড়ি আকারের প্রতি হালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১২০০-১৫০০ টাকায় এবং বড় আকারের প্রতি হালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২০০০-২৫০০ টাকায়। এর পরেও কাঙ্খিত ইলিশ না পাওয়ায় কিছুটা চিন্তায় আছে জেলেরা।
ইলিশের এই সংকট জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেই হচ্ছে বলে মনে করেন জেলা মৎস কর্মকর্তা প্রীতিষ কুমার মল্লিক। বছরের শেষের দিকে এসে কাঙ্খিত ইলিশের দেখা পাওয়া যাবে বলে আশা করেন তিনি।
শিগগিরই ঝাকেঝাকে রুপালী ইলিশ ধরা দেবে জেলেদের জালে, কেটে যাবে অভাব অনটন এমন প্রত্যাশা মেঘনা পাড়ের জেলেদের।