রবিবার ● ৩০ আগস্ট ২০১৫
প্রথম পাতা » জেলার খবর » বোরহানউদ্দিনে আনন্দ স্কুলের শিক্ষার্থীদের পোষাক নামে অর্থ বাণিজ্যে
বোরহানউদ্দিনে আনন্দ স্কুলের শিক্ষার্থীদের পোষাক নামে অর্থ বাণিজ্যে
আবদুল মালেক,বোরহানউদ্দিন প্রতিনিধি• ভোলা বোরহানউদ্দিনে আনন্দ স্কুলের শিক্ষার্থীদের পোষাক নামে কয়েক লক্ষাধিক টাকার অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে উপজেলা আনন্দ স্কুলের কো-অডিনেটর মো.রাকিবের বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে পোষাক না পাওয়ায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক মন্ডলির মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করলেও কো- অডিনেটরের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। এ আনন্দ স্কুল নিয়োগ থেকে শুরু করে প্রতিটি পদে পদে নানা অনিয়ম আর দূর্নীতি চলছে। কিন্তু দেখার যেনো কেউ নেই।
সূত্রমতে জানা গেছে, উপজেলা ১২১ টি আনন্দ স্কুল রয়েছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে ৩৫ জন করে শিক্ষার্থী রয়েছে। পোষাক বাবত ২০১৫ সালের অর্থ বছরে বরাদ্ধ হয়েছে জনপ্রতি শিক্ষার্থীর ৪শত টাকা করে প্রায় ১৫ লক্ষাধিক টাকা। জুলাই মাসে উদয়ন স্কুলে সকল আনন্দ স্কুলের শিক্ষক মন্ডলিদের ডেকে এনে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে পোষাকের বরাদ্ধকৃত টাকার চেকে স্বাক্ষর করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের উপস্থিতিতে নিয়ে যায় উপজেলা কো-অডিনেটর রাকিব। তিনি শিক্ষার্থীদের পোষাক নিজেই ক্রয় করে দেওয়ার কথা বলে চেকগুলোতে স্বাক্ষর করে নিয়ে বোরহানউদ্দিন সোনালী ব্যাংকের সাথে যোগসাজসে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু অদ্যবধি শিক্ষার্থীদের কপালে পোষাক জোটে নি। আর কবে নাগাদ জুটবে তাও জানে না ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। জোর পূর্বক শিক্ষক মন্ডলির কাছ চেকে স্বাক্ষর করে নেওয়ায় তাদের মাঝেও চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে চাকুরী হারানোর ভয়ে কো-অডিনেটর রাকিবের সামনে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। এছাড়া আরোও জানাগেছে ওই সকল শিক্ষার্থীদের বরাদ্ধের জনপ্রতি ৪০০শত টাকার পরিবর্তে ২০০শত টাকা করে পোষাক বানানোর পায়তারাও অভিযোগ পাওয়া গেছে ওই কো-অডিনেটরের বিরুদ্ধে। নি¤œ মানের কাপড় দিয়ে পোষাক তৈরি করে প্রায় ৭লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ারও পায়তারা চলছে বলে অভিযোগ উঠছে। এদিকে গতকাল সরজমিনে ফুলকাচিয়া ৬নং ওয়ার্ডে কালিরহাট সংলগ্ন এলাকার সম্মেলন মন্দির আনন্দ স্কুলে গিয়ে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের পড়নে নির্ধারিত স্কুল পোষাক নেই।
সম্মেলন মন্দির আনন্দ স্কুলের একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে আলাপকালে তারা তাদের নামে বরাদ্ধকৃত পোষাকের কথাই কেউ জানে না। ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা শিক্ষিকার সামনেই তাদের পোষাক না পাওয়ার আক্ষেপ জানালেন। এতে হতম্বব হয়ে পড়েন শিক্ষাকা নিজেই। এ পোষাকের কথা শিক্ষার্থীর অভিভাবকরাও জানে না। ২০১৫ সালের পোষাকের বরাদ্ধের কথাতো দূরে থাক। পোষাক বাবত শিক্ষার্থীদের ২০১৪ সালের বরাদ্ধকৃত ৯,৬০০শত টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠছে ওই স্কুলের শিক্ষিকা মনিকা রানী ও কো-অডিনেটর রাকিবের বিরুদ্ধে। তবে শিক্ষিকা নিজেকে নির্দোষ বানানোর চেষ্টা করেন।
এব্যাপারে আনন্দ স্কুলের উপজেলা কো-অডিনেটর মোঃ রাকিবের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, শিক্ষকরা নিজের ইচ্ছাই চেক দিয়েছেন। প্রত্যেকটি স্কুলের শিক্ষার্থীর পোষাক নিশ্চিত করার জন্য এ উদ্যেগ নেওয়া হয়েছে। এ টাকা আত্মসাৎ করার কোনো সুযোগ নেই। তবে মনিকা রানীর আনন্দ স্কুলের ব্যাপারে কোন কথা বলতে রাজী হয়নি।
এব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ তোফাজ্জল হোসেনের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, খুব শীঘ্রই এ বছর শিক্ষার্থীদের উন্নত মানের পোষাক দেওয়া হবে। অর্থ আত্মসাৎ করার প্রশ্নই আসে না।