বুধবার ● ১২ আগস্ট ২০১৫
প্রথম পাতা » জেলার খবর » মেঘনার ভাঙ্গন রোধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি
মেঘনার ভাঙ্গন রোধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি
বিশেষ প্রতিনিধি : প্রবল ভাঙ্গন ও অতিরিক্ত জোয়ারের কারণে ভোলার ইলিশা পয়েন্ট দিয়ে নতুন ফেরীঘাট ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে। ভাঙ্গন রোধে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলেও ভাঙ্গন রোধ করা যাচ্ছে না।
তদারকি দায়িত্বে থাকা ট্রাস্কফোর্স সর্বাক্ষনিক ভোলায় না থাকার কারনে ভাঙ্গন বা বড় ধরনের ফাটল সৃষ্টি হলেও তখন তাৎক্ষনিক পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হয় না । যে কারনে ভোলা – লক্ষ্মীপুর মহা সড়কের ইলিশা চডার মাথা এলাকায় আবার রাক্ষুসে মেঘনা নদী আঘাত হেনেছে। ইতোমধ্যে বিশাল আকারে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে ২১ জেলার সাথে সহজ যোগাযোগ মাধ্যম ভোলা-লক্ষীপুর ফেরি চলাচল ফের বন্ধ হয়ে যেতে পারে ।
বুধবার জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে ভোলা-লক্ষীপুর রুটে ফেরি চলাচল ও ইলিশা ফেরিঘাট মেঘনার ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষায় জরুরী এক সভায় উপস্থিত বক্তারা এসব আশংকার কথা বলেন। বক্তারা বলেন, যে কোন মূল্যে ভোলার মেঘনার ভাঙ্হন বন্ধ করতে হবে।
ভোলা জেলা প্রশাসক মোঃ সেলিশ রেজার সভাপতিত্বে জরুরী এই সভায় বক্তব্য রাখেন, ভোলা জেলা পরিষদ প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদক আবদুল মমিন টুলু, ভোলা পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল হেকিম, বিআইডব্লিউটিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী শাহে নেওয়াজ, গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী বদরুল আলম, ভোলা সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহিন সরকার, ভোলা ফেরি বাস্তবায়ন ও স্বার্থ রক্ষা কমিটির আহবায়ক অমিতাভ অপু, ফেরীঘাট ম্যানেজার আবু আলম প্রমুখ।
জেলা পরিষদ প্রশাসক আবদুল মমিন টুলু বলেন, নতুন করে ইলিশা চডার মাথায় মসজিদের সামনের সড়কে বিশাল ফাটল দেখা দিয়েছে। এই রাস্তা ভেঙ্গে গেলে ভোলা রাজাপুর, ইলিশাসহ ৪/৫টি ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পড়বে। এছাড়াও ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে আগামী ৭ দিনের মধ্যে নতুন ফেরিঘাটও ভাঙ্গনের মুখে পড়বে। কিন্তু পাউবোর ট্রাক্স ফোর্সের সদস্যরা সব সময় ভোলায় না থাকার কারনে জিও ব্যাগ ভর্তি বালির ব্যাগ থাকা সত্ত্বেও ভাঙ্গন রোধে নদীতে ফেলা সম্ভব হচ্ছে না। কারন তাদের উপস্থিতিতে কাজের স্বচ্চতার জন্য বস্তা গননা করে নদীর তীরে ফেলা হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হেকিম বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের জরুরী পদক্ষেপে নেয়ায় ভোলা ইলিশা ফেরিঘাট রক্ষায় চডার মাথায় ইতো মধ্যে ৫০ হাজার জিও ব্যাগ নদীতে ফেলা হয়েছে। এছাড়াও ইলিশা বিশ্ব রোডের মাথায় বিআইডব্লিউটিএ’র দ্বিতীয় ঘাটে আরো ১৫ হাজার ব্যাগ বস্তা ফেলা হয়েছে। বর্ষা মৌসুম থাকায় নদী অনেকটা অশান্ত।
ভোলার জেলা প্রশাসক মো: সেলিম রেজা বলেন, ভাঙ্গন রোধে যা যা করনিয় তার সকল শক্তি দিয়ে কাজ করতে হবে। কারন ফেরীঘাট রক্ষা করতে না পারলে শহরের পানি প্রবেশ করবে। বন্ধ হয়ে যাবে ভোলার সাথে ২১ জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা। তাই ভোলাকে রক্ষায় সকল ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে স্থায়ীভাবে ভাঙ্গন বন্ধ করতে হবে।
জরুরী সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সুব্রত কুমার সিকদার, জেলা ম্যাজষ্ট্রেট মনোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুদ্দিন শাহিন, ভোলা প্রেসক্লাব সভাপতি এম হাবিবুর রহমান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার দোস্ত মাহমুদ, ডেপুটি কমান্ডার শফিকুল ইসলামসহ গণমাধ্যমকর্মী, উপজেলা প্রশাসন, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট, জন প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ।
উল্লেখ্য, ঈদের দিন ভোলা ইলিশা ফেরিঘাট এলাকায় ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়। এতে ভোলা-লক্ষীপুর সড়কের চডার মাথা এলাকার রাস্তা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে গত ২৬ জুলাই থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর পর দ্বিতীয় ফেরি ঘাট নির্মান করা হলেও সেটিও এখন ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে।