শনিবার ● ২ মে ২০১৫
প্রথম পাতা » জেলার খবর » সৌরবিদ্যুতের আধুনিক ছোঁয়া লেগেছে বেদে পরিবারে
সৌরবিদ্যুতের আধুনিক ছোঁয়া লেগেছে বেদে পরিবারে
ফরহাদ হোসেন/এম আর পারভেজ:
লোকসঙ্গীতের ভাষায় মোরা এক ঘাটেতে রান্দি বাড়ি, মোরা আর এক ঘাটেতে খাই, মোদের দুঃখের সীমা নাই। এ যুগের অনেকের কাছে হয়তো এখন বেমানান। তাইতো আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে জলে ভেসে বেড়নো। এক ঘাট থেকে অন্য ঘাটে নোঙ্গর করা বেদে পরিবার গুলোতে জিডিটাল প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে সোলার প্যানেলের বিদ্যুতের আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ও রমাগঞ্জ ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া বেতুয়া নদীর পাড়ে র্দীঘ কয়েক সপ্তাহ ধরে সারি সারি টং (বাসা) বানিয়ে অবস্থান নিয়েছে বেদে পরিবার। এসকল বেদে সম্প্রদায়ের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলায়। বছরের অধিকাংশ সময় বিভিন্ন জেলার গ্রাম গঞ্জে ঘুরে ঘুরে নানা রকম ফেরি করে বেড়ান তারা। আলাপকালে বেদে বহরের সর্দার মো. হাবিব তার ভাষায় জানান, বাপ, দাদার পেশায় এখনও স্ত্রী, ছেলে সন্তাদের নিয়ে পেটের ধান্দায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভেসে বেড়ায়। আইজ থেকে ২৫ দিন আগে এ এলাকাতে আইছি, এর আগে চরফ্যাশনের ঘোষের হাট লঞ্চঘাট এলাকায় র্দীঘ কয়েক মাস ধরে ছিলাম। আয় রোজগার মোটামুটি, তবে আগের মত নেই। সৌরবিদ্যুতের ব্যাপারে বেদে সর্দার আরো জানান, কেরোসিনের বাতি জ্বালাতে কষ্ট হয়। বাতাসে নিভে যাওয়া সহ টংগে আগুন লাগার ভয় থাকে। তাছাড়া বাচ্চাদের লেখাপড়ার জন্য ও সৌরবিদ্যুতের অনেক সুবিধা তাই কিনেছি। আগে মোবাইল র্চাজ দিতে ভীষণ কষ্ট হতো। এখন আমারা নিজেদের সোলারে মোবাইল র্চাজ দিই। বেদে পরিবারের আরেক সদস্য আনিছুর রহমান জানান, আমরা টিভি, টেপ ও কিনেছি। রাতের বেলায় সৌর বিদ্যুতের আলোতে তার দুই ছেলে আপন ও ইয়াদুল পড়ালেখা করে বলে জানান তিনি। একই সাথে ৬ টি পরিবারের ২৬ জন সদস্য বসবাস করছেন। তারা পরস্পর আত্মীয় বলে জানা গেছে। এই সম্প্রদায়ের নারীরা পুরুষের তুলনায় অনেক পরিশ্রমি। তাদের আয়ের প্রধান উৎস হলো, সাপের খেলা দেখানো, বিষ নামানো, সিংগা লাগানো, করি-মালা বিক্রি, কাচের মালা মাল বিক্রি, হারানো জিনিস খোঁজে বেরকরা, ঝাড় ফুঁক সহ বিভিন্ন দাতব্য দিয়ে চিকিৎসা নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ান। আর এভাবেই যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এসকল বেদে পরিবারের প্রত্যাহিক জীবন যাপন। তবে বর্তমানে বেদে পরিবারের মাঝে আগের তুলনায় অনেকটা সৌখিনতা ফিরে আসায় স্থানীয়দের মনে অনেকটা কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে।