মঙ্গলবার ● ২১ জুলাই ২০১৫
প্রথম পাতা » জেলার খবর » ভোলা-লক্ষীপুর ফেরিঘাট চার দিনে ৪’শ মিটার এলাকা মেঘনার গর্ভে বিলীন
ভোলা-লক্ষীপুর ফেরিঘাট চার দিনে ৪’শ মিটার এলাকা মেঘনার গর্ভে বিলীন
বিশেষ প্রতিনিধি :: ভোলার সদর উপজেলার উত্তরে ইলিশা ও রাজাপুর ইউনিয়নের ফেরিঘাট সংলগ্ন সড়কের ব্লক বাঁধ এলাকায় ঈদের দিন হঠাৎ করেই মেঘনা নদীর তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ঈদের দিনেই ২৪ ঘন্টায় প্রায় ২’শ মিটার এলাকা মেঘনা গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গত চার দিনে প্রায় ৪’শ মিটার নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে ভোলা-লক্ষীপুর ফেরীঘাট, ২টি মৎস্য আড়ৎ, ২টি মসজিদ, ২টি বাজারসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এছাড়াও সড়ক বিভাগ কর্তৃক প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে সদস্য নির্মিত ভোলা-লক্ষীপুর মহা সড়কের ব্লক বাঁধ ধ্বসে আচ্ছে। ভাঙ্গনের তীব্রতা দেখে ওই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ আতংকিত হয়ে পড়েছেন। কিন্তু ভাঙ্গন প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট দপ্তর জরুরী কোন পদক্ষেপ গ্রহন করছে গ্রহন করছে না বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। এদিকে ফেরি বাস্তবায়ন ও স্বার্থ রক্ষা উন্নয়ন কমিটির আয়োজনে মঙ্গলবার দুপুরে ইলিশা ফেরিঘাট রক্ষার দাবীতে মানববন্ধন করেছে। এলাকাবাসী বলছে, জরুরী ভিত্তিতে ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা না নিলে ভোলা-লক্ষীপুর মহাসড়ক সহ গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা রক্ষা করা যাবে না। অপর দিকে ভাঙ্গন পরিস্থিতি খবর পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ইলিশা রাজাপুর এলাকা পরির্দশন করেন। এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রী তোফালে আহমেদ বলেছেন, অতি দ্রুত স্থায়ী ভাবে ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে আশ্বাস দিয়ে বলেন,পানি সম্পদ মন্ত্রী ও যোগাযোগ মন্ত্রীর সাথে ঢাকায় গিয়ে কথা বলবো। তিনি আরো বলেন,এ সরকারের আমলে সব কিছু শান্ত। বিএনপির আমলে যে অত্যাচার হতো। এমনকি প্রাণী গরু পর্যন্ত পুড়িয়ে দিয়েছিলো। অথচ আমরা সহঅবস্থানে আছি। শেখ হাসিনার দল প্রতিহিংসা প্রতিশোধে বিশ্বাস করি না। সেই কারনেই বাংলাদেশের অবস্থা ভাল। ভোলা সদরের উত্তরের গুরুত্বপূর্ন ইউনিয়ন ইলিশা ও রাজাপুর। এ দুটি ইউনিয়নের উপর দিয়ে ভোলা লক্ষীপুর মহা সড়ক ও ফেরিঘাট হওয়ায় চট্রোগ্রাম বন্দরের সাথে দক্ষিন পশ্চিম অঞ্চলের একুশ জেলার ট্রানজিট পয়েন্ট হিসাবে এখন বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ন হয়ে উঠেছে। কিন্তু অবহেলিত এই ইউনিয়ন দুটির বিস্তৃর্ন এলাকা এখন রাক্ষুসে মেঘনা নদী গিলে খাচ্ছে। প্রতিবছরই রাক্ষুসে মেঘনার ভাঙ্গনের মুখে পড়ে হাজার হাজার পরিবার গৃহহারা হচ্ছে। চলতি বর্ষা মৌসুমেও মেঘনা নদীর ভয়ঙ্কর রুপ ধারন করে। সেই ভাঙ্গনের ধারা এখন আরো চরম আকার ধারা করেছে। ঈদের দিন ২৪ ঘন্টায় হঠাৎ করেই ইলিশা ফেরী ঘাট এলাকা থেকে বিশ্বরোড মৎস্যঘাট পর্যন্ত দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভাঙ্গন বৃদ্ধি পেয়েছে। এরই মধ্যে ভাঙ্গনে খেয়া পারাপার ঘাট, সদ্য নির্মিত ফেরিঘাট সড়কের সিসি ব্লক ও লঞ্চঘাটের ২’শ মিটার এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। কলেজ শিক্ষক জুন্ন রাহান জানান,ইলিশা ফেরিঘাট সংলগ্ন ব্লক বাঁধ এখন পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি হার্ট পয়েন্ট। ব্লক বাধে ইতো মধ্যেই ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। যদি এখনই রক্ষা করা না হয় তা হলে আরো ৫টি ইউনিয়ন হুমকির মুখে পড়বে। এমনকি ভোলা-লক্ষীপুর সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে এ রুটের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। স্থানীয় এনজিও কর্মী আমির হোসেন জানান, বিগত বছরগুলোতে কখনই এমন ভাঙ্গন তারা দেখেনি । ভাঙ্গন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন না করলে দুই তিন দিনের মধ্যেই ভোলা-লক্ষীপুর ফেরীঘাট, ২টি মৎস্য আড়ৎ, ২টি মসজিদ, ২টি বাজার,একটি স্কুল,সাইক্লন সেল্টার সহ বিভিণœ স্থাপনা কয়েক শত ঘর বাড়ি মেঘনা বক্ষে বিলীন হয়ে যাবে। ঈদের দিন এরকম ভাঙ্গন দেখে অনেকেই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ভাঙ্গনের কারনে ইলিশা চডার মাথার মৎস্য আড়ৎ অন্য সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এ ব্যাপারে ভোলা জেলা প্রশাসক মোঃ সেলিম রেজা সাংবাদিকদের বলেন, ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সড়ক জনপদ বিভাগকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল হেকিম বলেন, জরুরী ভিত্তিতে আজ মঙ্গলবার থেকে জিও ব্যগ দিয়ে ভাঙ্গন প্রতিরোধের চেষ্টা করা হবে। ইতোমধ্যেই ঠিকাদারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা মালামাল সংগ্রহ করেছেন। এদিকে নদী ভাঙ্গন পরির্দশনকালে বাণিজ্য মন্ত্রীর সাথে উপস্থিত ছিলেন,ভোলা জেলা পরিষদ প্রশাসক আবদুল মবিন টুলু, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোশারেফ হোসেন,ভোলা পৌর মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান প্রমুখ।