শনিবার ● ৪ জুলাই ২০১৫
প্রথম পাতা » জেলার খবর » ঈদকে সামনে রেখে ইলিশ না পেয়ে হতাশ মেঘনা ও তেতুঁলিয়া পাড়ের জেলেরা
ঈদকে সামনে রেখে ইলিশ না পেয়ে হতাশ মেঘনা ও তেতুঁলিয়া পাড়ের জেলেরা
জুয়েল সাহা :: শুরু হয়েছে ঈদেরে কেনাকাটা, পরিবারের সবাইকে কিনে দিতে হবে নতুন পোশাক-আসাক। হাতে আর সময় নেই আর মাত্র কয়েকদিন পর ঈদ। হাতে নেই টাকা। মহাজনের দেনা, এনজিওর কিস্তি ও পাওনাদারদের দেনায় জরজরিত। সব অভাব দুর করার জন্য দিন-রাত কষ্ট করেও কোন লাভ হচ্ছেনা। ফলে ঈদের দিন সেমাই কেনার টাকা জোগার হবে কিনা তা নিয়ে চিন্তিত ওরা। ভোলার মেঘনা ও তেতুঁলিয়া নদীতে ইলিশের দেখা না পেয়ে হতাশ হয়ে পরেছে এই অঞ্চলের জেলেরা।
ভোলা জেলা মৎস্য অফিস তথ্য মতে, ভোলায় মোট ৮৮ হাজার ১২৮ জন জেলে রয়েছে। এদের মধ্যে নিষেজ্ঞাধার সময় সরকারি সাহায্য ভাগ্যে জোটে ৫২ হাজার ১৫০ জন জেলের। বাকী ৩৫ হাজার জেলের ভাগ্যে নেই কোন সরকারি সাহায্য সহযোগিতা। এদের নিয়ে ভাবার মত সময় নেই মৎস কর্মকর্তাদের।
সরজমিন ঘুরে, ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা, তুলাতলি, জনশংন, দৌলতখান জেলে পল্লী, বোরহানউদ্দিনের হাকিমউদ্দিন, মির্জাকালু, তজুমদ্দিনের চৌমহনী, লালমোহনের কামারখাল, গজারিয়ার পাঙ্গাসিয়া, চরফ্যাশনের বেতুয়াঘাট ও গাছিরখাল সহ কয়েকটি জেলে পল্লী গুরে দেখা যায়, অনেক জেলের পরিবারের সদস্যরা অধ্য বেলা খেয়ে জীবন যাপন করছে। অভাব,দুঃখ ও দরিদ্র তাদের ঘিরে রেখেছে। তার মধ্যে আবার পাওনাদার ও এনজিওর কিস্তির টাকার চাপ। অনেক জেলেরা দেনার ভয়ে সংসার জীবন থেকে পালিয়ে বেরাচ্ছে। সাংবাদিক দেখে তারা মনে করেন সরকারি সাহায্যের জন্য লোক এসেছে। সাংবাদিকদের পরিচয় শুনে তাদের দুঃখের জীবন তুলে ধরে।
ভোলা সদরের মেঘনার ইলিশা এলাকার জেলে ফয়সাল মাঝি, মন্নান মাঝি, নাগর মাঝি জানান, নিষেধাজ্ঞার পর কয়েক দিন নদীতে ভাল ইলিশ শিকার করছি। কয়দিন পর আর ইলিশ ভাল পাই না। অনেক টাকা দেনা হইছি। ঈদে বউ পোলাপানরে নতুন জামা-কাপুর দিতে পারুম কিনু সন্দেহ আছে।
দৌলখান উপজেলার জেলে ফিরোজ মাঝি, আক্তার মাঝি, সবুজ মাঝি জানান, মেঘনা নদীতে ইলিশ না পাইয়া অনেক টাকা দেনা হইয়া আছি। ঈদে দু’ বেলা পেট ভইরা ভাত খাইতে পারুম কিনা জানিনা।
তজুমদ্দিন উপজেলার মেঘনা নদীর জেলে হায়াত আলী, ফয়েজ মাঝি, আমজাত মাঝি জানান, হারা দিন নদীতে জাল বাইয়া দুই তিনডা মাছ পায়। এই ইনকাম দিয়া সংসার চালাইতে পারি না। ধার-দেনায় জর-জড়িত হইছি।
ভোলা ইলিশা মৎস্য ঘাটের আড়ৎদার ইউসুফ হাওলাদার জানান, জেলেরা সারা দিন নদীতে নেমে এক থেকে দুই টার বেশি মাছ পায়না। জেলেদের অনেক টাকা দাদন দিয়া রাখছি। নদীতে মাছ না পাওয়ায় লোকসান গুণতে হইতেছে আমাগো।
ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রীতিষ কুমার জানান, এখন নদীতে তেমন একটা মাছ ধরা পাওয়া যাচ্ছে না। তবে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নদীতে প্রচুর মাছ পাওয়া যাবে । এতে করে জেলেরা তাদের সকল অভাব দুর করতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন ।