রবিবার ● ১০ মার্চ ২০১৯
প্রথম পাতা » জেলার খবর » জমির দলিল পাওয়ার ১৫ বছর পরও দখল পায়নি মনপুরার চর-নিজামের ৫শত ভূমিহীন
জমির দলিল পাওয়ার ১৫ বছর পরও দখল পায়নি মনপুরার চর-নিজামের ৫শত ভূমিহীন
মনপুরা প্রতিনিধি: ভোলার মনপুরা উপজেলার চরনিজামে ভূমিহীনদের মাঝে ১৫ বছর আগে বন্দোবস্ত দেয়া খাস জমির দখল ফিরে পাওয়ার দাবীতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভূমিহীনরা। উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের মাস্টারহাটে রবিবার এই মানববন্ধন করেন তারা। মানববন্ধনে ৫শতাধিক ভূমিহীন অংশ নেন। পরে উত্তর সাকুচিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মানব বন্ধনে অংশগ্রহনকারী ভূমিহীনরা সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। এসময় ভূমিহীন নেতা লিয়াকত কেরানী, মোঃ আবু তাহের, মোঃ ইসমাঈল, মোঃ মহিউদ্দিন ও সরোয়ার উদ্দিনসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ভুমিহীনদের পক্ষে মোঃ আবু মুছা লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। ভূমিহীন নারী জান্নাত বেগম আবেগ আপ্লুত কন্ঠে জমির দখল বুঝে পাওয়ার দাবীতে বক্তব্য রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে ভূমিহীন নেতারা জানান, ২০০৪-২০০৫ অর্থ বছরে জেলা প্রশাসন মনপুরা উপজেলার সাড়ে ৫শত ব্যক্তিকে দেড় একর করে খাস জমি বন্দোবস্ত দেয়। তারা ১বছর ভোগ দখল করে। পরবর্তিতে বন বিভাগ জমি দাবী করে ভূমিহীনদের উচ্ছেদ করে। ভূমিহীনরা আদালতে মামলা করলে রায় তাদের পক্ষে যায়। মামলা চলাকালীন স্থানীয় অবৈধ দখলদারেরা জমি দখল করে নেয়। একদিকে বন বিভাগের দাবী জমি তাদের,অন্যদিকে অবৈধ দখলদারের দৌরাত্ম , যেকারণে জমির দলিল পেয়ে খাজনা, ভূমি উন্নয়ন কর নিয়মিত পরিশোধ করেও ভূমিহীনরা জমির দখল পাচ্ছেননা। গত ১৫ বছর মন্ত্রী এমপিসহ স্থানীয় প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ফিরছেন তারা। সর্বশেষ জমির দখল পাওয়ার জন্য তারা মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন এসব ভূমিহীনরা ।
এব্যাপারে ভোলার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ ফরিদ মিঞা জানিয়েছেন, সঠিক প্রািক্রয়া অনুসারে ভূমিহীনদের মাঝে জমি বন্দোবস্ত দেয়া হয়নি। সংরক্ষিত বণাঞ্চলের জমি বন্দোবস্ত দেয়া অবৈধ।
মনপুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির আহমেদ বলেছেন, বন বিভাগের সাথে সীমানা সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে,সার্ভেয়ারেরা চরে গিয়ে সীমানা পিলার তৈরির কাজ করছে। বনবিভাগের সাথে সমন্বয় করে দ্রুত ভুমিহীনদের জমি বুঝিয়ে দেয়া হবে।
এদিকে উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেন বলেছেন, বনবিভাগ আর জেলা প্রশাসনের বিরোধর শিকার নিরিহ ভুমিহীনরা হতে পারেনা। যেহেতু স্থানীয় প্রশাসন ভূমিহীনদেরকে পাকা দলিল দিয়েছে এখন তাদেরকে জমি বুঝিয়ে দেয়া দরকার।
এছাড়া মনপুরা উপজেলার কলাতলী চরের ভুমিহীন নেতা মোঃ মাঈনুদ্দিন জানান, ঐ চরে ১৯৯৬-১৯৯৭ সালে ১শত ৯২ পরিবারকে দেড় একর করে সরকারী খাস জমি বন্দোবস্ত দেয় উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু গত ২৩ বছরও আইনি জটিলতার কারনে তারা জমি বুঝে পাননি।এভাবে স্থানীয় প্রশাসন ভূমিমহীনদের মাঝে জমির দলিল দেয় কিন্তু বুঝিয়ে দেয়না। এতে ভুমিহীনরা একদিকে মানবেতর জীবন যাপন করছে অন্যদিকে জমি না পাওয়ায় তাদের মাঝে ক্ষোভেরও সৃষ্টি হচ্ছে।
-এসইউ/এফএইচ