মঙ্গলবার ● ২৭ মার্চ ২০১৮
প্রথম পাতা » ভোলা সদর » ভোলায় বিধবাকে মারধর ও বাড়ি থেকে উচ্ছেদের পায়তারা
ভোলায় বিধবাকে মারধর ও বাড়ি থেকে উচ্ছেদের পায়তারা
স্টাফ রিপোর্টার: ভোলা সদর উপজেলার পরানগঞ্জ এলাকায় হতদরিদ্র বিধবা মহিলা আচিয়া বেগমকে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদের পায়তারা করছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা । একাধিকবার মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে অসহায় পরিবারটিকে। বাড়ি থেকে উচ্ছেদে করার জন্য বিভিন্ন সময় বারেক গংরা বাড়িতে হামলা করে আচিয়া ও তার মেয়েদের মারধর ও শীলতাহানীর চেষ্টা করে। প্রভাবশালী বারেক গংদের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে অসহায় আচিয়ার পারিবারটি। বিচার চেয়ে বিভিন্ন মহলের ধারে ধারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন অসহায় এই পরিবারটি। অভিযোগে জানা যায়, ভোলা সদর উপজেলার ২নং ইলিশা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের পরানগঞ্জ বাজার এলাকার গুপ্তমুন্সি গ্রামের ওহাব মৌলভীর বাড়ি এলাকার মৃত জামাল মাতাব্বরের বিধবা স্ত্রী আচিয়া বেগম। স্বামী জামালের জীবিত থাকাকালীন সময় থেকেই কয়েক যুগধরে বসবাস করছেন বর্তমান ভোগ দখলীয় বাড়িতে। আচিয়া বেগমকে ওই বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার জন্য প্রভাবশালী বারেক গংরা একাধিক মিথ্যা মামলা দেয় আচিয়ার পরিবারের বিরুদ্ধে। মামলাগুলো ভুয়া ও ভিত্তিহীন হওয়ার কারনে মহামান্য আদালত ইতিপূর্বে মামলা খারিজ করলেও বারবার মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে। মামলার বোঝা বইতে বইতে নিঃস্ব হয়ে পরছে হতদরিদ্র পরিবারটি। মামলা দিয়েও ক্ষ্যান্ত হয়নি বারেক গংরা বিভিন্ন সময় লাঠিয়ালবাহিনী নিয়ে আচিয়ার বাড়িতে হামলা চালাতো। তারা আচিয়া বেগমকে একাধিকবার মারধর করেছে এবং আচিয়া বেগম এর মেয়েদের শ্লীলতাহানীর চেস্টা করে। গত কয়েকদিন আগে দুপুরের দিকে বারেক মাতাব্বর এর ছেলে আবদুস সাত্তার ও তার জামাই আজাদের নেতৃত্বে পুলিশ সহ কয়েকজন এসে আচিয়ার জমিতে প্রবেশ করে। আচিয়া তার জমিতে ঘর নির্মাণ করলে সাত্তার ও আজাদ বাধা দেয়। আচিয়া বাধা দেওয়ার কারন জিজ্ঞাস করলে পুলিশের সামনেই সাত্তার উত্তেজিত হয়ে আচিয়াকে মারধর ও শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে। পরে স্থানীয়রা বাধা দিলে সাত্তার ও তার সহোযোগীরা চলে যায়। পুলিশের সামনে বিধবা অসহায় আচিয়া বেগমকে মারধরের ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। এর কয়েকদিন পরে আবদুস সাত্তার গংরা আবারও আচিয়ার বাড়িতে হামলা চালিয়ে তার মেয়েদের উপর ধর্ষনের চেষ্টা চালায়। পরে স্থানীয় লোকজন এসে জড়ো হলে তারা চলে যায়।
স্থানীয়রা জানায়, আচিয়ার স্বামী মৃত জামাল তার পিতা সেকান্তর আলি মাতাব্বর থেকে ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত জমিতে কয়েক যুগ ধরে বসবাস করে আসছিল। জামালের পিতা সেকান্তর মাতাব্বর একই এলাকার মুজাহার মাতাব্বরের কাছ থেকে এই জমি ক্রয় করে। পৌতৃক সুত্রে প্রাপ্ত জমিতে জামাল দীর্ঘদিন বসবাস করে আসলেও ২০০১ সালের দিকে মুজহার মাতাব্বরের ওয়ারিশ বারেক মাতাব্বর জামালের বসতবাড়ি ও ভোগ দখলীয় জমির মালিকানা জামালের বিরুদ্ধে ভোলা জজ আদালতে ১টি দেওয়ানি মামলা করে। দীর্ঘদিন মামলা চলার পর ২০১১ সালে আদালত মামলাটি খারিজ করে ও জমির বৈধ মালিক হিসেবে জামালকে উল্লেখ করে। মামলা রায়ের আগেই জামাল মারা যায়। জামালের মৃত্যুর কারনে জামালের স্ত্রী আচিয়া ও তার ৫ মেয়ে জমির বৈধ মালিক হয়।
মামলার ভুক্তোভুগী আচিয়া জানান, তার স্বামীর জমিতে তিনি বসবাস করছেন। স্বামীর জীবিত থাকাকালীন সময় থেকেই বাবেক গংদের সাথে তাদের জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। তারা কয়েকবার আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করছিল। কিন্তু কয়েকটি মামলায় তারা হেরে যায়। এরপরেও আবার মামলা করেন। মামলা চালাতে চালাতে একেরারে নিঃস্ব হয়ে গেছি।
আচিয়া আরও জানান, বারেক গংরা বিভিন্ন সময় আমার বাড়িতে হামলা ঘরে বাড়িঘর ভাংচুর করে ও আমাকে মারধর করে এবং আমার মেয়েদের একাধিকবার ধর্ষণের চেষ্টা করেছে। আমি এখন বারেক গংদের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। বিধিবা আচিয়া বারেক গংদের হাত থেকে বাঁচার জন্য প্রশাসনসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগীতা কামনা করেছেন।
এব্যাপারে অভিযুক্ত বারেক ও সাত্তার গংদের সাথে একাধিকার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি।
-এমএসজি/এফএইচ