বুধবার ● ৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
প্রথম পাতা » জেলার খবর » ভোলায় প্রতিপক্ষকে মারধর
ভোলায় প্রতিপক্ষকে মারধর
স্টাফ রিপোর্টার: ভোলায় জমি-জমা বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষকে মারধরসহ প্রাণ নাশের হুমকি, জমি জবর দখলের চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ৪ ফেব্রুয়ারী সকাল ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে বাদী পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তারা স্থানীয় গণ্যমান্য এবং প্রশাসনের সহযোগীতার মাধ্যমে ঘটনার সুষ্ঠ সমাধান দাবী করেছেন।
লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, ভোলা সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের চর রমেশ এলাকার মাঝির হাট বাজার সংলগ্ন মোহাম্মদ আলী সরদার বাড়ীর মৃত মোহাম্মদ আলী সরদারের ছেলে মোঃ দুলাল গংদের সাথে মৃত শাহে আলম এর ছেলে মোঃ শাহাবুদ্দিন ও মৃত আবুল কালাম এর ছেলে মোঃ কবির গংদের সাথে দীর্ঘদিন যাবত জমি-জমা বিরোধ চলে আসছে। ভেদুরিয়া ইউনিয়নের চর রমেশ মৌজার ২৭৮ নং খতিয়ানের ১০১, ১০২, ১০৩, ১০৪, ১০৫, ১০৬, ১০৭ ও ১০৮ নং দাগে বিরোধ চলে আসছে উভয়গ্রুপের মধ্যে। দাবীকৃত ওই জমি শাহাবুদ্দিন ও কবির জোর পূর্বক জবর দখলের পায়তারা চালাচ্ছে। বিরোধীয় ওই জমি নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার শালিস মিমাংসার চেষ্টা করা হলে শাহাবুদ্দিন ও কবির শালিসের তোয়াক্ক করছেনা এবং শালিসে উপস্থিত হচ্ছে না। তারা জোরপূর্বক ওই জমি ভোগ দখলের পায়তারা চালাচ্ছে। এরই ধারবাহিতকায় গত ৪ ফেব্রুয়ারী সকাল ৮টার দিকে মোঃ দুলাল গং-রা দাবীকৃত ওই জমিতে মাটি কাটতে গেলে শাহাবুদ্দিন ও কবির গং-রা তাতে বাঁধা প্রদান করা সহ খারাপ ভাষায় গালমন্দ করে। দুলাল গং-রা বাঁধা প্রদান ও গালমন্দ করার কারণ জিজ্ঞাসা করলে শাহাবুদ্দিন ও কবির ওই জমি তাদের বলে দাবী করে। এতে উভয় গ্রুপের মধ্যে তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে শাহাবুদ্দিন দুলালকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। তখন দুলালের ডাক-চিৎকারে মোঃ জাহাঙ্গীর, রুপজান, নাজমা, কুলসুমসহ স্থানীয়রা এগিয়ে আসে এবং উভয়ের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা চালায়। কিন্তু এতেও ক্ষান্ত হয়নি শাহাবুদ্দিন ও কবির। তারা দুলালকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। তখন তারা বলে এই জমি আমাদের, দুলাল কিংবা তার পরিবারের কেউ উক্ত জমিতে গেলে তাদেরকে প্রাণে মেরে ফেলবো এবং রক্ত দিয়ে গোসল করব। এ সময় তারা তাদের ফুফু কুলসুমকেও শাসিয়ে যায়। তখন বলে আপনাকে কিছুই বলব না, আপনার দুই ছেলেকে দেখে নেব। যদি তারাও এই জমি ভোগ দখলের চেষ্ট চালায় তাহলে তাদেরকেও খুন করে ফেলবো। টাকার গরম হয়েছে, আপনার টাকার গরম কিভাবে কমাতে হয় তা আমরা জানি। দুলাল এবং শাহাবুদ্দিন, কবির উভয়-ই চাচা ভাতিজা।
এদিকে ওই দিন সকাল বেলার ঘটনার পর রাতের বেলা দুলাল এর বোন কুলসুম (শাহাবুদ্দিন ও কবিরের ফুফু)’র ঘরে রাতে আধারে একদল দুর্র্বৃত্তরা চুরি করে নগদ সাড়ে ৬ লাখ টাকা এবং ২ ভড়ি ৮ আনা ওজনের হাতের রুলী ও কানের ঝুমকা নিয়ে যায়। যার বাজার মূল্য ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। দুলাল ও কুলসুম দাবী করছেন যে দিনের বেলায় ঝগড়ার রেশ ধরে শাহাবুদ্দিন ও কবির এ চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে। কুলসুম ঘরের কাজ ধরবেন বলে বাড়ীতে ওই টাকা রেখেছিলেন বলে জানান।
অপরদিকে জমি-জমা বিরোধের জের ধরে মারামারি ঘটনায় দুলাল বাদী হয়ে ভোলা সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে এসআই আজিজুল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং বাদী দুলাল ও বিবাদী শাহাবুদ্দিন, কবিরকে দাবীর পক্ষে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র সহকারে থানায় এসে বিরোধ মিমাংসার আহ্বান জানিয়েছেন।
এছাড়াও উভয় গ্রুপের মধ্যে বিরোধীয় জমি নিয়ে মারধর ও চুরির ঘটনা সম্পর্কে আবু তৈয়ব দাবী হয়ে ইউনিয়ন পরিষদে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাজল ইসলাম মাস্টার ঘটনার সুষ্ঠ সমাধান করে দেয়ার আশ^াস দিয়েছেন। দ্রুত উভয় পক্ষকে ডেকে শালিসের মাধ্যমে ঘটনার মিমাংসা করে দিবেন বলে জানান তিনি।
বিরোধিয় জমি নিয়ে মারধরের ঘটনা সম্পর্কে শাহাবুদ্দিন ও কবিরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, ওই জমি আমরা পাবো। তাই আমরা জমিতে মাটি কাটতে বাধা দিয়েছি। কথা কাটা-কাটি হয়েছে তবে মার ধরের কথা অস্বীকার করেন তারা। প্রাণ নাসের হুমকি দেয়ার কথা জিজ্ঞাসা করলে তারা বলেন, আমরা এমন কোন কথাই তাদেরকে বলি নাই। মিমাংসা চান কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, আমরা মিমাংসা চাই। যেখানে ডাকা হবে আমরা সেখানেই বসবো।
ঘটনার তদন্তের দায়িত্বে থাকা এসআই আজিজুল এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। উভয় গ্রুপকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে থানায় আসতে বলেছি। ঘটনার তদন্ত এবং কাগজপত্র দেখে মিমাংসা করে দেয়া হবে।
-এসএসএইচ/এফএইচ