শুক্রবার ● ১১ আগস্ট ২০১৭
প্রথম পাতা » জেলার খবর » লালমোহনে ভূমিদস্যুদের পাতানো জ্বালে বন্দি গাজী
লালমোহনে ভূমিদস্যুদের পাতানো জ্বালে বন্দি গাজী
স্টাফ রিপোর্টার: অর্থ, পুলিশ, আর রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে উদ্দেশ্য হাসিল করেন ভূমিদস্যু, মামলাবাজ রাশিদা ও তার স্বামী মফিজ। কবরস্থানও তার দখল থেকে মুক্ত নয়। জবরদখল করেই কবরস্থানের ওপর রাস্তা বানিয়ে হাটছেন তারা। কথায় কথায় টাকার গরম আর পুলিশ দিয়ে নির্যাতন করার ভয় ভীতি প্রদর্শন তার নিত্বনৈমোত্তিক ঘটনা। যে কেউ তার কাজের বিপক্ষে থাকলে বা দ্বিমত পোষণ করলে তাকে প্রতিপক্ষ মনে করে মামলায় জড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেন তারা। কলেজ পড়–য়া ছাত্র আর আশি বছরের বৃদ্ধ ব্যাক্তিও তার রোষাণল থেকে রেহাই পায়নি।
লালমোহন পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের ওয়েস্ট্রোন পাড়ার ডাক বাংলোর পার্শ্ববর্তি ব্যাপারী বাড়ীতে মাত্র ২৩ শতাংশ জমি ক্রয় করে এক একর ২২ শতাংশ জমির মালিক হতে চায় চরভূতা হরিগঞ্জের মফিজের স্ত্রী লালমোহনের এক সময়ের রাজিব বিড়ি তৈরীর কারিগড় রাশিদা বেগম।
৫৬ খতিয়ানের এস এ ৩১৬/৩৪৮, ৩১৫/৩৪৯ দাগের ঐ বাড়ীর মোজাম্মেল হক গাজী বসবাস করত। ১৯৯১ সনে পোষ্যপুত্র জৈনিক এলাহী বক্সের পুত্র নূর মোহাম্মদ ব্যাপারীর তার নিঃশকন্ঠক জমি থেকে ২৩ শতাংশ জমি মোজাম্মেল গাজীকে দান করে দখল স্বত্ব বুঝিয়ে দেন। মোজাম্মেল গাজী ঘর উত্তলন করে দীর্ঘ ২৭ বছর বসবাস করেন। যাহার হোল্ডিং নং ৭২৩/৭৩৩। কিন্তু ২০১৪ ইং সনে দখলবাজ রাশিদা ও মোফিজ নিঃশত্ব জৈনিক মাজেদ ব্যাপরীর কাছ থেকে ৪৮ শতাংশ জমির দরিল নিয়ে ২৩ শতাংশ জমি বুজিয়া পেয়ে ভোগদখলে আছে। বাকী জমি বুঝিয়া না পেয়ে একই জমায় মোজাম্মেল গাজীর উল্লেখিত খতিয়ান ও দাগের জমি নিজের জমি বলে দাবী করে। এ নিয়ে রাশিদা ও মফিজ প্রায় সময়ই পুলিশ ও ভাড়াটে লোকজন দিয়ে বাড়ী থেকে উচ্ছেদ করার হুমকী দিয়ে আসছে। এ নিয়ে স্থানীয় ভাবে কয়েক দফায় শালিশ বিচার হলেও রাশিদার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে শালিশগণ কোন প্রকাশ সুরাহা করতে পারেনি। এমনকি লালমোহন থানা কর্তৃপক্ষ বিষয়টির মিমাংশার দায়িত্ব নিলেও অদৃশ্য শক্তির কারনে রাশিদার পক্ষেই অবস্থান নেয় তারা। উপরোন্তু গত ২৭ জুলাই’র রাশিদার একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৩ আগস্ট দিবাগত রাতে মোজাম্মেল গাজীকে তার নিজ বাড়ী থেকে পুলিশ তাকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ। ওই মামলায় উল্লেখ্য করা হয়েছে ২৭ জুলাই সকাল ১১ টায় মোজাম্মেল গাজী ও তার পরিবার রাশিদার ভোগ দখলই জমিতে থাকা গাছের নারিকেল সুপারী কাঁঠাল ও পুকুরের মাছ লুট করে নিয়ে যায়। কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঐ বাড়ীতে কোন গাছের অস্থিত্ব খুঁেজ পাওয়া যায়নি।
তাছাড়া রাশিদা যে পুকুরের মাছ নেয়া হয়েছে বলে দাবী করছেন সেই পুকুরটি দীর্ঘদিন পর্যন্ত পরিত্যাক্ত অবস্থায় পরে আছে। মামলায় যে চারজনকে আসামী করা হয়েছে তার ১ নং আসামী মোজাম্মেল গাজী ২৫ জুলাই অসুস্থ হয়ে ডাক্তার শরিফ আহাম্মেদের তত্বাবধায়নে ছিলেন। ২ নং আসামী রাহাদ ৩৮ তম বিসি’র প্রস্তুতির জন্য ঢাকায় অবস্থান করেছেন। ৪ নং আসামী ৮০ বছরের বৃদ্ধ আব্দুল বারেককে এলাকায় কেউ চেনেন না। জানা যায় তিনি দীর্ঘ বছর ধরে চট্টগ্রামে থাকেন।
বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর সাথে আলাপ করলে স্থানীয় দোকানদার তুহিন ও মামুন জানায় ২৭ তারিখে এই ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। মোজাম্মেল গাজীকে বাড়ী থেকে উচ্ছেদ করে তার জমি ও বাসাবাড়ী জবর দখল করার জন্যই পরিকল্পিত ভাবে মামলাটি সাজানো হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে রাশিদার সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা ও সাজানো। আমি এই ধরনের কোন মিথ্যা কাজে মোজাম্মেল গাজীকে ফাঁসাইনি।
-এইচএমএন/এফএইচ