শুক্রবার ● ৯ জুন ২০১৭
প্রথম পাতা » জেলার খবর » দৌলতখান ইউএনওসহ চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ইউপি চেয়ারম্যানের মামলা
দৌলতখান ইউএনওসহ চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ইউপি চেয়ারম্যানের মামলা
শিমুল চৌধুরী: ভোলার দৌলতখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.কামাল উদ্দিনসহ সরকারি চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন ওই উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো.মোশাররফ হোসেন। তার ইউনিয়নের জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল না দেওয়ায় গত রবিবার দৌলতখানের সহকারি জজ আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অপরাপর বিবাদীরা হলেন ভোলা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অনন্ত কুমার বিশ্বাষ, দৌলতখান উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অবনী মোহন দাস ও দৌলতখান উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা আব্দুর রহমান। আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বিবাদীদেরকে ৩ দিনের মধ্যে কারন দর্শানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদী দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো.মোশাররফ হোসেন বলেন, ইলিশ মাছ বংশ বিস্তার, পুষ্টি পূরণ ও জনগণের আবশ্যকীয় মৎস্য চাহিদা পূরণের লক্ষে জাটকা ইলিশ নিধন কার্যক্রমকে নিরুৎসাহিত করার জন্য সরকার ভিজিএফ কর্মসূচীর মাধ্যমে গরিব, অসহায় ও দুস্থ্য জেলেদের মাঝে সঠিক জেলে নির্ধারণ করে যে কার্ড প্রদান করেছেন, সে কার্ডধারী গরিব-অসহায় জেলেদের বছরে ৫ মাস প্রতি মাসে প্রত্যেক কার্ডের অনুকূলে ৪০ কেজি হারে চাল প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এবং চাল যথাযথভাবে বিতরণ ও সঠিক ব্যক্তির প্রাপ্ত নিশ্চিত করনের লক্ষে ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বন্টনের জন্য সিদ্ধান্ত প্রদান করেন। ওই সিদ্ধান্ত মোতোবেক চরপাতা ইউনিয়নের অসহায় জেলে কার্ডধারী এক হাজার ৬০৯ টি ভিজিএফ কার্ডের বিপরীতে মার্চ/২০১৭ ইং ও এপ্রিল/২০১৭ ইং দুই মাসে ১২৮.৭২০ মেঃ টন খাদ্যশষ্য থেকে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের নির্দেশে দৌলতখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ কামাল উদ্দিন, দৌলতখান উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অবনী মোহন দাস ও দৌলতখান উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা আব্দুর রহমানের নিকট থেকে ও দুস্থ্য মহিলাদের ২৭০টি ভিজিডি কার্ডের বিপরীতে (প্রতি কার্ডে ৩০ কেজি করে প্রদান করা হয়)। ৪ মাসের ৩২.৪০০ মেঃ টন চাউল বরাদ্দ হয়। মোট ১৬১.১২০ মেঃ টন চাউল উত্তোলন করে ৩ নম্বর চরপাতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদের হেফাজতে নিয়ে তালিকা অনুযায়ী টেক অফিসারের উপস্থিতিতে জেলেদের প্রতি কার্ডে হিসেবে চাল/৩০ কেজি খাদ্য উত্তোলন ও বিতরণের বৈধ ব্যক্তি।
ইউনিয়নের জনগণ, এবং জেলে ভিজিএফ ও দুঃস্থ্য মহিলা ভিজিডি কার্ডধারী ব্যক্তিদের সুবিধার জন্য তার পক্ষে ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফজলুল হককে গত ১৭ এপ্রিল উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকে মোট ৮৮.৬৬০ মেঃ টন চাউল উত্তোলনের ক্ষমতাপত্র প্রদান করে খাদ্য গুদামে প্রেরণ করেন। কিন্তু দৌলতখান উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা আব্দুর রহমান ওই খাদ্যশষ্য সরবরাহ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তিনি আরো বলেন, বিবাদীরা ৮৮.৬৬০ মেঃ টন খাদ্যশষ্য সরবরাহ না করায় তিনি ওই দিন নিজে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার নিকট যান। তারপরেও চাল সরবরাহ করতে অস্বীকার করলে তিনি জেলা প্রশাসককে লিখিত ভাবে জানান। সর্বশেষ তিনি গত ১৮ মে মোট ১৬১.১২০ মেঃ টন চাল আনতে গেলে বিবাদীরা ওই চাল দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।
আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বিবাদীদেরকে ৩ দিনের মধ্যে কারন দর্শানোর নোটিশ দেন।
আদালতে মামলা দায়েরের কথা স্বীকার করে নোটশ পাওয়ার কথা স্বীকার করে দৌলতখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ কামাল উদ্দিন শুক্রবার বিকেলে বলেন, আমরা সময়মত আদালতে নোটিশের জবাব দিয়ে দিয়েছি।
মামলার প্রধান বিবাদী দৌলতখান উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা আব্দুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় দৌলতখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ কামাল উদ্দিনসহ সরকারি চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আগামী সোমবার চেয়ারম্যানের বরাবরে বরাদ্দকৃত চাল দিয়ে দেওয়া হবে।
-এফএইচ